ক্রাইস্টচার্চের মসজিদ আল-নূরের দিকে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াররা রওয়ানা দিচ্ছিলেন। বাস থেকে নেমে মসজিদে প্রবেশ করার আগ মুহূর্তেই তারা জানতে পারলেন ভেতরে গোলাগুলি চলছে। এতে ভাগ্যক্রমে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন পুরো টাইগার টিম।

জুম্মার নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে যখন তামিমরা মসজিদে প্রবেশ করবেন, ঠিক ঐ মুহূর্তেই রক্তাক্ত শরীরের একজন মহিলা ভেতর থেকে টলোমলো পায়ে বেরিয়ে এস হুমড়ি খেয়ে পড়ে যান। ক্রিকেটাররা তখনো বুঝতে পারেননি ঘটনা কী। তারা হয়তো মসজিদে ঢুকেই যেতেন, যদি না বাসের পাশের একটা গাড়ি থেকে এক ভদ্রমহিলা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বলতেন, ‘ভেতরে গোলাগুলি হয়েছে। আমার গাড়িতেও গুলি লেগেছে। তোমার ভেতরে ঢোকো না।’

বিস্মিত হয়ে ক্রিকেটাররা দ্রুতই বাসে উঠে পড়েন। কিন্তু ততক্ষনে পুলিশ রাস্তার সমস্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ করে রেখেছে। অবরুদ্ধ হয়ে বাসে থাকা অবস্থায় ক্রিকেটাররা আতঙ্কে ভূগছিলেন। কেননা, বাসে তখন কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিলো না।

অনেকটা সময় বাসে থাকার পর নিজেদের সিদ্ধান্তেই বাস থেকে নেমে হোটেলের দিকে রওয়ানা দেন। মাঠ দিয়ে হাটা অবস্থায় তাদের চোখেমুখে আতঙ্ক বিরাজ করছিলো। চোখের সামনে অনেককে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে নিজেদের ঠিক রাখতে পারেননি ক্রিকেটাররা। হাঁটা অবস্থায় ক্রিকেটাররা বলতেছিলেন, তৃতীয় টেস্টের আগের দিনে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সংবাদ সম্মেলন একটু দেরিতে শেষ না হলেই সর্বনাশ হয়ে যেত।

ড্রেসিংরুমে পৌঁছে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন ক্রিকেটাররা। হাঁটা অবস্থায় মুশফিকুর রহিম অঝোরে কাঁদতে শুরু করলেন। আর তামিম ইকবাল বলতে তাকেন, ‘যা দেখেছি, এরপর আমি আর এক মুহূর্ত এখানে থাকতে চাই না। এই টেস্টে খেলার প্রশ্নই আসে না। আমি দেশে ফিরে যাব।’

বাসে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ছিলেন ম্যানেজার খালেদ মাসুদ ও বাংলাদেশ দলের অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাসন আইয়ারও। ড্রেসিংরুমে ফেরার পর খোঁজ পড়ে বাংলাদেশ দলের দুই ক্রিকেটার লিটন কুমার ও নাঈম হাসানের। অবশ্য তারা দু’জন ছিলেন হোটেলে। ফোনে তাদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হন ম্যানেজার খালেদ মাসুদ।

পরবর্তীতে হ্যাগলি পার্ক থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় নভোটেল হোটেলে। এবং নিউজিল্যান্ড শেষ টেস্ট বাতিল করা হয়েছে। আতঙ্কিত ক্রিকেটাররা খুব শীঘ্রই দেশে ফিরছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here