রোহিঙ্গাদের কারণে খাদ্য নিরাপত্তাহীন দেশের তালিকায় নাম উঠলো বাংলাদেশের। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার প্রভাবে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পতিত হয়েছেন এদেশীয়রা। গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অ্যাগেইনস্ট ফুড ক্রাইসিসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে ফুটে উঠে এই চিত্র। এতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা খাদ্য ঝুকিতে পরেছেন।

মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের স্রোতের কারণে বাংলাদেশে দরিদ্র ও ঝুকিপূর্ন জেলার সংখ্যা বেড়েছে। তবে রোহিঙ্গারা নিজেরা নয় এর ভুক্তভোগী হচ্ছেন স্থানীয় বাংলাদেশীরা। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে এমন রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মিয়ানমারের নাম। বাংলাদেশসহ এই ৪ দেশে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪৭ লাখ মানুষ।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অ্যাগেইনস্ট ফুড ক্রাইসিস-এর সদস্য।
কক্সবাজারের ১৫ লাখ মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে এফএও বলেছে, জেলাটিতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা মানুষের সংখ্যা ১৩ লাখ। এদের মধ্যে স্থানীয় ও রোহিঙ্গা উভয় সম্প্রদায়ের সদস্যরাই রয়েছেন। ফলে উভয় সম্প্রদায়ের জন্যই খাদ্য সহযোগিতা প্রয়োজন। মূলত রোহিঙ্গা সংটককে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের এমন পরিস্থিতিই বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তাহীন দেশের তালিকায় যুক্ত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে অনেকেই আবাদী জমি ও মৎস্য ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। তাদের অনেকেই দিনমজুর হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু তাতেও সমস্যা সৃষ্টি করছে রোহিঙ্গারা। সস্তায় শরণার্থী শ্রমিক পাওয়া যায় বলে স্থানীয়রা সব হারিয়ে দিন মজুরের কাজও করতে পারছে না। সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের জনবিন্যাসে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অ্যাগেইনস্ট ফুড ক্রাইসিস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শরণার্থীদের ফলে বাড়তি জনসংখ্যার জন্য বাড়তি খাবারের চাহিদা তৈরি হয়েছে। ফলে বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম। স্থানীয়দের মৌলিক অধিকার পূরণের ক্ষেত্রগুলো সংকুচিত হয়ে পড়ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here