ফ্রেন্ডস সোসাইটি’র বৈশাখী মেলা’ অনুষ্ঠিত

0
104

নিউইয়র্ক: ‘হৃদয় নাচে বৈশাখী সাজে’ শ্লোগান নিয়ে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় প্রতি বছরের মতো এবছরও বাংলা বর্ষবরণ করেছে নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকার স্বনামধন্য সামাজিক সংগঠন জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি ইনক। ‘এনওয়াই ইন্স্যুরেন্স লোক উৎসব ও বৈশাখী মেলা-১৪২৬’ শিরোনামে বাংলা বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে ফ্রেন্ডস সোসাইটির উদ্যোগে ২৭ এপ্রিল শনিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিলো বর্ণাঢ্য প্যারেড, পান্তা-ইলিশ আর ডাল-ভর্তা ভাত ভোজন, আকর্ষনীয় মেলা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি। মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মিজ সাদিয়া ফয়জুননেসা। এছাড়াও গ্র্যান্ড মার্শাল ছিলেন ব্রঙ্কসের কমিউনিটি বোর্ড-এর ভাইস চেয়ার এন মজুমদার। এবারের মেলায় কমিউনিটিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য কমিউনিটির পরিচিত মুখ ও ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার-কে ‘বৈশাখী পদক’ প্রদান করা হয়।
বর্ণাঢ্য র‌্যালী: শনিবার বেলা দেড়টার দিকে জ্যামাইকার ক্যাপ্টেন টিলি পার্ক থেকে প্যারেড শুরু হয়। প্যারেডের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। বেশাখী মেলা কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের পরিচালনায় এসময় অন্যান্যের মধ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গণি, উপদেষ্টা ও মেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী শাহ নেওয়াজ, উপদেষ্টা ছদরুন নূর, ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি শেখ হায়দার আলী, সাধারণ সম্পাদক ইফজাল আহমেদ চৌধুরী সহ আরো অনেকে।



উদ্বোধন: রং বে রং এর পোশাক পড়ে প্রবাসীরা র‌্যালীতে অংশ নেন। র‌্যালীটি ক্যাপ্টেন টিলি পার্ক থেকে বের হয়ে হ্যাইল্যান্ড এভিনিউ ধরে ১৬৮ প্লেস হয়ে ৮৪ এভিনিউতে মেলার মূল অনুষ্ঠানস্থল পিএস ১৩১-এ গিয়ে শেষ হয়। এরপর পিএস ১৩১ প্রাঙ্গনে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন ফ্রেন্ডস সোসাইটির উপদেষ্টা ও ‘এনওয়াই ইন্স্যুরেন্স ইনক’র প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মেলার গ্র্যান্ড মাস্টার এন মজুমদার।
উদ্বোধনের পর শুরু হয় ভোজন পর্ব। এই পর্বের উদ্বোধন করেন গ্র্যান্ড মার্শাল এন মজুমদার। এতে অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ সহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন মিডিয়ার সম্পাদক/পরিচালক, সাংবাদিক এবং সংগঠনের উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাবৃন্দ সর্বস্তরের কয়েক শত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে ভোজন পর্বে অংশ নেন।
মূল অনুষ্ঠান: বিকেলে পিএস ১৩১-এর মূল মিলনায়তনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়। এরপর পরিবেশিত হয় বৈশাখী গান। পরবর্তীতে প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীরা সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশেন করে। অনুষ্ঠানে বক্তারা নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী কমিউনিটিকে অগ্রসরমান কমিউনিটি হিসেবে উল্লেখ এবং নিজেদের অধিকার অবস্থান শক্তিশালী আর অধিকার প্রতিষ্ঠায় মূলধারায় নিজেদের অংশগ্রহণ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। বক্তারা ফ্রেন্ডস সোসাইটির কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন এবং এই সংগঠনের সকল কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বর্ণাঢ্য র‌্যালী, পান্তা-ইলিশ, ডাল-ভর্তা ভোজন শেষে বিকেল ৫টার দিকে শুরু হয় ‘এনওয়াই ইন্স্যুরেন্স লোক উৎসব ও বৈশাখী মেলা’র মূল অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে ফ্রেন্ডস সোসাইটির উপদেষ্টাবৃন্দ ও কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় এবং অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি শেখ হায়দার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইফজাল আহমেদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানের রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন ছাড়াও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, এটর্নী পেরী ডি সিলভার, সোসাইটির সভাপতি পদপ্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ্য ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আলী, ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা এবি এম ওসমান গনি, উপদেষ্টা শাহ নেওয়াজ, রেজাউল করীম চৌধুরী, ছদরুন নূর ও মনির হোসেন, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আজাদ ভূঁইয়া, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম প্রমুখ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এই পর্ব পরিচালনা করেন সাইফুল ইসলাম।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন টাইম টেলিভিশন-এর নিউজ প্রেজেন্টার সাদিয়া খন্দকার। এছাড়াও বিভিন্ন পর্ব পরিচালনা করেন এএফ মিসবাহ উজ্জামান, কামরুজ্জামান বাবু ও তামান্না হাসিনা।
বিগত কয়েক বছরের ধারাবাহিতায় এবছরও ফ্রেন্ডস সোসাইটির পক্ষ থেকে ‘বৈশাখী পদক’ এবং কমিউনিটিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সংগঠনের পক্ষ থেকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। চলতি বছর অর্থাৎ ১৪২৬ বাংলা বছরের ‘বৈশাখী পদক’ প্রদান করা হয় ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। এছাড়াও ৪জনকে বিশেষ সম্মানা প্ল্যাক পদান করা হয়। এরা হলেন মেলার টাইটেল স্পন্সর এনওয়াইন ইন্সুরেন্সের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, বিশিষ্ট শিল্পপতি জহিরুল ইসলাম, ওয়েল কেয়ারের সিনিয়র ম্যানেজার সালেহ আহমেদ ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এজে বাবুল।
মেলার মূল আকর্ষণ সাংস্কৃতিক পর্বে প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীরা সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। মেলার অতিথিবৃন্দ সহ কয়েকশত প্রবাসী প্রাণভরে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।
‘এনওয়াই ইন্স্যুরেন্স লোক উৎসব ও বৈশাখী মেলা উপলক্ষে পিএস ১৩১-এর ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের স্টলসহ শাড়ী-কাপড়-গহনার স্টল বসে। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মেলার কর্মকান্ড চলে। বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর উপস্থিতিতে মেলা প্রাঙ্গণ উৎসবমুখর হয়ে এক টুকরো বাংলাদেশে পরিণত হয়।
মেলায় ফ্রেন্ডস সোসাইটির কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গনি, উপদেষ্টা যথাক্রমে নাসির আলী খান পল, ছদরুন নূর, মনজুর আহমেদ চৌধুরী, ডা. টমাস দুলু রায়, অধ্যাপিকা হুসনে আরা, মনির হোসেন, এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ, ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও মেলার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বিলাল চৌধুরী, সভাপতি শেখ হায়দার আলী ও সাধারণ সম্পাদক ইফজাল আহমেদ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মেলা কমিটির সদস্য সচিব এএফ মিসবাহউজ্জামান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আজাদ ভূঁইয়া, যুগ্ম সদস্য সচিব এডভোকেট কামরুজ্জামান বাবু সহ সোসাইটির অন্যান্য কর্মকর্তা এবং কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
‘এনওয়াই ইন্স্যুরেন্স লোক উৎসব ও বৈশাখী মেলা’ সফল করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারীদের মধ্যে আরো সহযোগিতায় ছিলেন গোলাম মহিউদ্দিন মিঠূ, সেবুল মিয়া, মুক্তার হোসেন, আলী কে কাকন, জুয়েল মিয়া, সফিকুল আলম শাহিদ, একেএম সফিকুল ইসলাম, হুমায়ুন কবীর, আব্দুল মন্নাফ তালুকদার, গিয়াস উদ্দিন মঞ্জু, কাজী এন ইসলাম, আব্দুল মজিদ আকন্দ, আফরোজা রোজী, সামিউর রহমান, হামিদুর রহমান, সুলতান খান, ইমাম জাকির, আলহাজ সাজ্জাদ হোসেন, সৈয়দ লিটন আলী, সৈয়দ রাব্বী, গোলাম আজম জাকি, সহদেব তালুকদার, মোহাম্মদ কবীর হোসেন মুন্সি, দেলোয়ার হোসেন মানিক প্রমুখ।

ইউএনএ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here