দলের হাল ধরতে তরুণদের মির্জা ফখরুলের আহ্বান

0
88

তরুণদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমি সুস্থ নই। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আমাদের সময় তো শেষ হয়ে আসছে। আমাদের বয়স হয়েছে এবং বৃদ্ধ হয়েছি। এখন আপনাদের সময়। এখন যারা সামনে আসবেন তাদের শুধু রাজনীতি নয়, এই বাংলাদেশকে বাঁচাতে কাজ করতে হবে।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নানাভাবে দলের নেতৃত্ব নিয়ে নেতাকর্মী, সমর্থক এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। বিভ্রান্ত হবেন না। মনে রাখবেন- আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া। তিনি যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেটি আমাদের অবশ্য পালনীয়।’

ফখরুল বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে দল পরিচালনা করছেন। আমরা তার নির্দেশে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সঠিক রাজনীতির দিকে এগিয়ে যাব। এটিই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এতে খালেদা জিয়ার রাজনীতির শুরু থেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যাওয়া পর্যন্ত শতাধিক ছবি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে ‘ত্যাগ’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমদ।

গভীর চক্রান্তের শিকার হয়ে খালেদা জিয়া আজ কারারুদ্ধ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি কেন কারারুদ্ধ আছেন? কারণ দেশনেত্রী হচ্ছেন গণতন্ত্রের প্রতীক। তিনি যদি আজ বেরিয়ে আসেন, তা হলে এরা (সরকার) নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। জনগণের যে স্রোত, যে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে, সেই তরঙ্গে তারা ভেসে যাবে। এ জন্য তাকে আটক করে রাখা হয়েছে। কিন্তু তাকে আটক রাখা যাবে না। এ দেশের জনগণ তাকে মুক্ত করে আনবে।

খালেদা জিয়ার আশু মুক্তি কামনা করে তিনি বলেন, জনগণের যে আবেগ, সেটাকে কাজে লাগিয়ে অবশ্যই তাকে মুক্ত করে আনতে পারব বলে আমাদের বিশ্বাস। বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত’ ছিল মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, সেই চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়ে দলটিকে খালেদা জিয়া রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়ে এসেছিলেন। এটা তার জীবনে ও বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা বড় অধ্যায়। এদেশে খালেদা জিয়াকে বিভিন্নভাবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়। তবে আমরা মনে করি, এশিয়া মহাদেশে তার মতো গণতন্ত্রকামী ত্যাগী নেত্রী খুঁজে পাওয়া যাবে না।

বাংলাদেশ একটি দলের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একটা দলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থার মধ্যেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এটি সহজ কাজ নয়, কঠিন কাজ।

স্বাধীন দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম থাকতে পারবে কি, পারবে না? বাংলাদেশ তার নিজস্ব মর্যাদায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে কি, পারবে না? সেই প্রশ্ন ১৬ কোটি মানুষের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, একজন গৃহবধূ থেকে হাল ধরলেন দেশ ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির, তিনি মহীয়সী নারী খালেদা জিয়া। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক হলেন খালেদা জিয়া। সেই মহীয়সী নারী এক বছর হলো জেলখানায়। কিন্তু আমরা দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারিনি। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় আমরা তার অযোগ্য সন্তান।

তিনি বলেন, এত দুঃসময়েও বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। এটা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের কারণে সম্ভব হয়েছে। বিএনপির গতিশীলতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো দরকার। এছাড়াও ২০ দলের সঙ্গেও মাসে একবার হলেও বসা উচিত।

ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক বাবুল তালুকদারের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here