টরন্টোতে দুই দিনব্যাপি থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল

0
72

কানাডার  তিনটি থিয়েটার দলের আয়োজনে প্রথম বারের মতো দুদিনব্যাপী নাট্য উৎসব অনুষ্ঠিত হলো টরন্টো শহরে। এই নাট্য উৎসব ফেয়ারভিউ থিয়েটার হলে ৬ ও ৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট ৭টি নাটক মঞ্চস্থ হয়।

আহমেদ হোসেনের নির্দেশনায় অন্যথিয়েটার টরন্টো লুৎফর রহমান রিটন এর “আত্মহননের পূর্বরাত্রিতে” অভিনয় করেন ফারহানা শান্তা। ইমামুল হকের ভাবনা বিন্যাস আর পরিকল্পনায় থিয়েটার ফোকস এর নিরীক্ষাধর্মী  নাটক ‘টেলস  অব বাংলাদেশি ডায়াস্পোরা’য় শিল্পীরা নিজের জীবনগল্পই উপস্থাপন করেন।

আমেরিকা থেকে আগত ডিসি মেট্রো থিয়েটার পরিবেশন করে উইলিয়াম শেক্সপীয়ারের ‘হ্যামলেট’ এর আলী যাকের রূপান্তরিত ‘দর্পণ’ নাটক। এটি নির্দেশনা দেন জাফর রহমান। দ্বিতীয় দিনে মঞ্চস্থ হয় টরন্টো বেঙ্গলি ড্রামা গ্রুপ এর ‘হঠাৎ দেখা’। নাটকের নির্দেশক ছিলেন অপরাজিতা দাস। ইতিহাস, দেশ সমাজ মঞ্চস্থ করে আকতার হোসেন এর রচনা এবং নির্দেশনায় ‘ইচ্ছাপূরণ।

বাংলাদেশ থিয়েটার টরন্টো মঞ্চস্থ করে ‘এক যে ছিল দুই হুজুর’। নাটকটি রচনা করেন রবিউল আলম আর নির্দেশনা দেন হাবিবউল্লাহ দুলাল এবং রবিউল আলম। অন্যথিয়েটার টরন্টো বিমল বন্দ্যোপাধ্যায় এর ‘অতঃপর হরেন মন্ডল’ দিয়ে নাট্য উৎসব শেষ হয়। নাটকটির নির্দেশনা দেন বাহারউদ্দিন খেলন এবং প্রয়োগে ছিলেন আহমেদ হোসেন।

উৎসবে নাট্য বিষয়ক দুটো সেমিনার দিয়ে নাট্য পরিবেশনা শুরু হয়। প্রথম দিনে ‘অভিবাসীর নাট্যচর্চা: বাঙালির রূপ-অরূপের খোঁজ’ বিষয়ে মূল নিবন্ধ পাঠ করেন মিথুন আহমেদ। প্রবন্ধের উপর প্রাণবন্ত আলোচনা করেন কবি আসাদ চৌধুরী এবং হাসান মাহমুদ।

কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, দেয়া আর নেয়ার সংস্কৃতির ভেতর দিয়েই আমাদের সংস্কৃতি আর নাটক ঋদ্ধ হবে। দেশ থেকে অনেক দূরের এমন আয়োজন প্রবাসীদের বাংলা নাট্য চর্চায় আগ্রহী করবে আর সেই সাথে আশা করি প্রবাসে বাংলা নাটকের জন্যে দর্শক তৈরিতেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

দ্বিতীয় দিনে ‘বাংলা নাট্যচর্চা দেশে বিদেশে’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন আকতার হোসেন। এতে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সিডনি থেকে আগত অতিথি বিশিষ্ট নাট্যকর্মী, অভিনেতা জন মার্টিন, টরন্টোর সংস্কৃতি কর্মী ইমামুল হক ও আহমেদ হোসেন।

জন মার্টিন বলেন, প্রবাসে নাট্য চর্চার নানান চ্যালেঞ্জের মধ্যে অন্যতম হলো কষ্টসাধ্য সাধনার মধ্য দিয়ে একটি নাটক তৈরির পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা একাধিক মঞ্চায়নের সুযোগ পায় না। একজন নাট্য কর্মী হিসেবে এটি আমাদের খুবই আহত করে।

ইমামুল হক বলেন, নানা সীমাবদ্ধতার ভেতরে থেকেও প্রবাস  জীবনে বাংলা সংস্কৃতি ও নাট্য চর্চার জন্যে কিছু নিবেদিত মানুষের জন্যেই প্রবাসী বাঙালীরা এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে একসাথে হতে পারলেন। নাট্য চর্চার ক্ষেত্রে  দর্শক তৈরির কোনো বিকল্প নেই, আশা করি সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা আগামীতে আমাদের নাটকের জন্যে ভালো দর্শক ও পৃষ্টপোষক তৈরী করতে পারবো।

চয়ন দাস আর মেরী রাশেদীন নাট্য উৎসবের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন। উৎসবে সুকন্যা নৃত্যাঙ্গন বেশ কয়েকটি নৃত্যও পরিবেশন করে। অন্য থিয়েটার টরন্টো, বাংলাদেশ থিয়েটার টরন্টো এবং থিয়েটার ফোকস টরন্টো আয়োজন করে এই নাট্য উৎসবের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here