রাশেদা রওনক খান : ৯ জুলাই ‘ধর্ষক তৈরির কারখানা তো আমাদের পরিবারেই, লেখাটা প্রকাশের পর অনেকেই ইনবক্সে আমায় লিখলেন যার সারমর্ম দাঁড়ায়, সবাইকে আপনি এক কাতারে ফেলে দিলেন? সবাই ধর্ষক? বাসের ড্রাইভার আর একজন ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-লেখক সবাই এক হলো? সবাই কি ধর্ষক? যারা না বুঝে প্রশ্নটা করেছেন, তাদের কিছু বলার নেই। যারা বুঝে করেছেন, তাদের জন্য বলছি…
হ্যাঁ সবাই ধর্ষক! যে সমাজ মেয়েশিশুকে শেখায় কোমলমতি, সুন্দরী, আকর্ষণীয় হতে আর ছেলে শিশুকে শক্তিশালী বীরপুরুষ হয়ে উঠতে, যে সমাজ শেখায় নারীকে ভোগ্যপণ্য হতে, আর পুরুষ হয়ে উঠে ভোগবাদী, সেই সমাজ পুরাটাই ধর্ষণকে প্রশ্রয় দিয়ে চলছে! ধর্ষকের পরিচয় কেবলই ধর্ষক। এর কোনো শ্রেণি, ধর্ম, বর্ণ, পেশা কোনো পরিচয়ই থাকতে পারে না। সমাজের অনেক বড় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, স্কুল-কলেজ -মাদ্রাসা -বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পুলিশ, উকিল, মোক্তার, বিচারক, লেখক, মিডিয়াকর্মী, ইমাম, পুরোহিতদের মাঝেও যখন ধর্ষকের পরিচয় আমরা পাই, তখন তার পরিচয় শুধুমাত্র ধর্ষক! আর এই প্রবণতা কেবল বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবী ব্যাপী। অস্ট্রেলিয়াতে কিছুদিন আগে চার্চের পোপ শিশু যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন, সম্প্রতি দেখলাম, জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (কানাডিয়ান) দুটি শিশুকে যৌন হয়রানির অভিযোগে চাকুরিচ্যুত হয়েছে। উন্নত দেশের সঙ্গে আমাদের উপমহাদেশের পার্থক্য অন্য দেশে ধর্ষকের বিচার খুব দ্রুত প্রক্রিয়ায় হয় এবং নিশ্চিতভাবেই হয়, আর আমাদের মতো দেশে বিচার প্রক্রিয়া এতোটাই ধীর যে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে ক্ষমতা ও অর্থের বিনিময়ে ধর্ষক সমাজে মিশে যায়, আবারও ধর্ষণের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে আর নিপীড়িত পরিবারটির জন্য হয়ে উঠে ভয়ংকর হুমকিদাতা! এই তো আমরা, আমাদের বর্তমান ভোগবাদী সমাজ! এই থেকে মুক্তির উপায় কি? ফেসবুক থেকে