কলকাতায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে বাংলাদেশি পরিবার

0
562

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় ঘুরতে গিয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে একাধিক বাংলাদেশি নাগরিক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি অনেকেই। তাদের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছবি। এখন তারা চাইছেন কোন রকমের বাড়িতে ফিরে যেতে।

স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে শুক্রবার বিকালে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল পরিদর্শন করতে যান নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা কাজী জহিরুদ্দিন মিঠু। যশোর ও খুলনা থেকেও অনেকে গিয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া পরিদর্শন করতে।

ভারতীয় সময় বিকাল ৩টার কিছু আগে কালো ঘন মেঘে ছেয়ে যায় কলকাতার আকাশ। এরপরই তুমুল বৃষ্টি নামে, সেই সাথে প্রবল বজ্রপাত। বৃষ্টি চলে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে। প্রবল বজ্রপাত সহ বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে ভিক্টোরিয়ার দক্ষিণ গেটে আশ্রয় নেয় ওই বাংলাদেশি পরিবারসহ আরও অনেকে। বিকাল সাড়ে তিনটা নাগাদ হঠাৎ করেই সেখানে বাজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। সেই বজ্রপাতে কমবেশি আহত হন ১৭ জন। এ সময় ভিক্টোরিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ এবং রাজ্য পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে এবং সেখানে থেকে আহতদের কলকাতার এসএসকেএম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয় কলকাতার এক নাগরিকের। দমদমের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির নাম সুবীর পাল (৩৪)।

আহত বাকি ১৬ জনই ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। এর মধ্যে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাংলাদেশের ছয় নাগরিক রয়েছেন। তারা হলেন নারায়নগঞ্জের বাসিন্দা কাজী জহিরুদ্দিন মিঠুর দুই পুত্র সন্তান কাজী রেয়াজুদ্দিন মহিন (৮) ও কাজী মিরাজুদ্দিন আরবী (৬)। যশোরের বাসিন্দা কাকলি রানি (৪৫), অবন্তী বিশ্বাস (৮) ও বৃত্তি বিশ্বাস (১৬)।  খুলনার বাসিন্দা জয়ন্তী রানি সরকার (৫৩)।

জহিরুদ্দিন মিঠু জানান, “আমাদের ভ্রমণ শেষে আমরা যখন বাহির হবো ঠিক সে সময় ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। তার হাত থেকে বাঁচতে আমরা একটা নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেই। কিন্তু যেখানে আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম আস্তে আস্তে সেখানেও পানি চলে আসে। আমরা তখন সেখানে ৫০ থেকে ৬০ জন অপেক্ষা করছিলাম। এই পানিতে বিদ্যুৎ থাকার কারণে আমরা অনেকেই শুয়ে পড়ি। এর মধ্যে থেকে আমি আমার পরিবার, আমার বাচ্চাকে যতটুকু পেরেছি, সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এরই মধ্যে এক পুলিশ সদস্য এসে আমাদেরকে উদ্ধার করেন। আমার বাচ্চাদের নিয়ে হাসপাতালে আসে। আল্লাহর রহমতে তারা সকলেই ভাল আছেন।”

দুর্ঘটনার খবর শুনেই হাসপাতালে ছুটে আসেন পশ্চিমবঙ্গের ফায়ার সার্ভিস মন্ত্রী সুজিত বসু। দুর্ঘটনায় আহত রোগীর পরিবার এবং নিহত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে একজনের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের পুরো ও নগরায়ন মন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সিরাজ জানান প্রায় এক ঘণ্টা ধরে প্রবল বর্ষণ হয়েছে কলকাতায় এর ফলে বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আমরা পাম্পের মাধ্যমে সেই জমা পানি সরাবার ব্যবস্থা করছি।

শুধু কলকাতা নয় এদিন রাজ্যটির একাধিক জেলায় প্রবণ বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হয়। পুরুলিয়া জেলাতেও বাজ পড়ে ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here