পূজা মণ্ডপগুলোতে গোয়োন্দা সংস্থা সজাগ থাকবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0
69

বাংলা খবর ডেস্ক: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা যেন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পালিত হয়, সরকার সে বিষয়ে তৎপর উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এবার সারাদেশে ৩১ হাজার পূজা মণ্ডপ হবে। গত বছরের তুলনায় এবার মণ্ডপ বেড়েছে এক হাজার। তার মধ্যে ঢাকায় ২৩৭টি। সারাদেশের এই পূজা মণ্ডপগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে তিন লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত বৈঠকে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রত্যেকটি পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তায় পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকবে। এছাড়া, পূজা মণ্ডপে সিসিটিভি, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। পূজা মণ্ডপে বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে গোয়োন্দা সংস্থা সজাগ থাকবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মণ্ডপের আশপাশে ইভটিজারদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ থাকবে। এছাড়া, মহিলা স্বেচ্ছাসেবক দল, ফায়ার সার্ভিস ও নৌ-পুলিশ উপস্থিত থাকবে। পূজার সময় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। স্থানীয়দের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত থাকবে। জেলা সদর এবং উপজেলা সদরে পুলিশ কন্ট্রোল রুম থাকবে। পাশাপাশি জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ সার্ভিস আরও কার্যকর থাকবে। যেকোনও সমস্যায় এখানে ফোন দিলে সেবা পাওয়া যাবে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পূজা মণ্ডপের আশেপাশে যানজট এড়াতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিমা বিসর্জনের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। উপকূলীয় এলাকায় প্রতিমা বিসর্জনের সময় কোস্টগার্ড এবং সীমান্তে প্রতিমা বিসর্জনের সময় বিজিবি উপস্থিত থাকবে।

পূজা শুরুর আগেই অনেক জায়গায় প্রতিমা ভাঙচুরের খবর এসেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিমা ভাঙচুরের খবর পেয়েছি। আমি খোঁজ নিয়েছি। মূলত কমিটি বা জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে এবং ভুল বোঝাবুঝিতে এগুলো হয়েছে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশে মাদকবিরোধী ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার প্রক্রিয়া শুরু থেকেই চলছে। দলের নেতা বা এমপি হোক, কাউকেই ছাড়া হচ্ছে না। কয়েকদিন আগে পুলিশের একজন ডিআইজিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইন ভঙ্গ করলে তাকে আইনের মুখোমুখি দাঁড়াতেই হবে। দলের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান চলমান প্রক্রিয়া। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। শৃঙ্খলাভঙ্গের খবর যেখান থেকে আসছে, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

রোহিঙ্গারা পাসপার্ট পাচ্ছে, সেখানে পুলিশ ভেরিফিকেশন হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের এসব পাসপোর্ট প্রাপ্তির বিষয়ে পুলিশ জড়িত কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পাসপোর্ট প্রক্রিয়ার সঙ্গে শুধু পুলিশ নয়, স্থানীয় চেয়ারম্যান, জন্মসনদ নিবন্ধনকারী, স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার—এই তিন জায়গা পার হয়ে চতুর্থ ধাপে আসে পুলিশ ভেরিফিকেশন। কাজেই ওখানে যদি কোনও কিছু হয়ে থাকে, তাহলে পুলিশ একা দায়ী নয়, তবে পুলিশ এ ব্যাপারে তৎপর।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রোহিঙ্গারা যখন বাংলাদেশে প্রবেশ করে, তখন আট লাখ রোহিঙ্গাকে বায়োমেট্রিকে নিবন্ধন করা হয়। কিন্তু এরপর আরও তিন লাখ রোহিঙ্গা দেশে ঢুকেছে, তাদের বায়োমেট্রিক হয়নি। তারপরও পাসপোর্ট অফিসের সার্ভার খুবই অত্যাধুনিক। বায়োমেট্রিক না করলেও পাসপোর্ট করতে গিয়ে ধরা পড়ছে রোহিঙ্গারা। এত কিছুর পরও সুচতুরভাবে কেউ কেউ অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দিচ্ছে, তাদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে। যেকোনও অনিয়মের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

এ সময় ডিএমপির কমিশনার, র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here