ফেইসবুকের ‘মন পড়ার’ ডিভাইস আবিষ্কার

0
58

বাংলা খবর ডেস্ক: মানুষের মস্তিষ্কের ভাবনা বোঝার ডিভাইস আবিষ্কার করতে বেশ কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানি ফেইসবুক। বিষয়টি নিয়ে তারা বিভিন্ন সময়ে অল্পস্বল্প ধারণাও দিয়েছে। এবার বিবিসি তাদের বিশেষ সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে এমন একটি ডিভাইসের বিস্তারিত জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ছোট স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠান সিটিআরএল ল্যাব রিস্টব্যান্ড জাতীয় একটি ডিভাইস নিয়ে কাজ করছে। তারা এখন ফেইসবুকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তাদের দাবি, এই ডিভাইসের মাধ্যমে মানুষের ব্রেইন কম্পিউটারের সঙ্গে সংযোগ পাবে!

ফেইসবুকের ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি প্রধান অ্যান্ড্রু বসওয়ার্থ বলছেন, ‘আমরা দেখেছি প্রযুক্তি এবং ডিভাইস দিয়ে আরও স্বাভাবিকভাবে ভাব বিনিময় করা সম্ভব। আর সেটা আমরা তৈরি করতে চাই।’

তিনি জানান, এই রিস্টব্যান্ড যে কারও ভাবনা-উদ্দেশ্য ক্যাপচার করতে পারবে। এর মাধ্যমে শুধু ইচ্ছা করলেই কোনো বন্ধুর সঙ্গে আপনি ছবি শেয়ার করতে পারবেন!

বিবিসি বলছে, এমন আবিষ্কার সত্যিই কঠিন কাজ। আর যদি ফেইসবুক করেই ফেলে তবে সেটা হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তথা প্রযুক্তি ইতিহাসের নতুন অধ্যায়।

এই ধরনের ডিভাইস আবিষ্কার করতে প্রযুক্তি দুনিয়ায় রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কও কয়েক বছর ধরে বলছেন, তারা এমন ডিভাইস নিয়ে কাজ করছেন, যেটি প্যারালাইজড মানুষের মনের কথা পড়তে পারবে।

মানুষের মস্তিষ্কের ওপর এই ধরনের ডিভাইস নিয়ে কাজ করা একজন বিজ্ঞানীর সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। মাহনাজ আরবনেহে নামের ওই নারী গবেষক শেফিল্ড ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা করেন। তিনি এই প্রক্রিয়াকে বলেছেন ‘নন-ইভ্যাসিভ টেকনিক’, যেখানে বিদ্যুদ্বাহক মাথার খুলির ওপরে পৌঁছাবে; ব্রেইনের ভেতরে নয়। এই পদ্ধতিতে রেকর্ড করা হবে ইলেকট্রিক্যাল অ্যাক্টিভিটি।

এই ধরনের প্রযুক্তি কত দূর এগিয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও একে কল্পবিজ্ঞান বলে মনে হতো। কিন্তু এখন বাস্তবে ধরা দিচ্ছে। নার্ভতন্ত্রের বিশেষ ব্যাধি পারকিনসন রোগীদের জন্য আমরা এমন কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছি।’

‘খুব দ্রুত বিভিন্ন ল্যাব থেকে এমন ডিভাইস বেরিয়ে যাবে। ৫০ বছরের মধ্যে বিপ্লব ঘটতে পারে। তার আগেও হতে পারে। নিউরাল ইন্টারফেস হতে যাচ্ছে যুগান্তকারী আবিষ্কার। পরিবেশের সঙ্গে আমাদের ভাবের আদান-প্রদানে পরিবর্তন আসবে। পাল্টে যাবে মানুষের জীবন।’

যেকোনো নতুন প্রযুক্তির কথা সামনে আসলেই নেতিবাচক একটা চিন্তার উদ্ভব হয়। ওই প্রযুক্তি মানুষের কতটা ক্ষতি করবে, উঠে আসে সেই প্রশ্ন। এ ক্ষেত্রেও তেমনটি হচ্ছে।

ডেটা বিশেষজ্ঞ ক্যারোলিন কারুথার্স বলছেন আমাদের সতর্ক হতে হবে, ‘ফেইসবুকের মতো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লাভ ছাড়া কোনো প্রযুক্তি আনবে না। তাই আমাদের বুঝতে হবে, তারা আসলে কী করতে চাচ্ছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here