দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে আহত বাংলাদেশির মৃত্যু

0
64

বাংলা খবর ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার পর দুই দফায় অস্ত্রোপাচার করেও বাঁচানো যায়নি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দা আনোয়ার খানকে (৩৪)। বাংলাদেশ সময় ১৩ অক্টোবর রোববার দিবাগত রাতে জোহানেসবার্গের হেলেন জোসেফ হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

জোহানেসবার্গে অবস্থানরত আনোয়ারের দুলাভাই মোহাম্মদ শাহজাহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার জোহানেসবার্গের অদূরে কসমো সিটিতে এশার নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের এলোপাতাড়ি গুলিতে গুরুতর আহত হন আনোয়ার। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা তাঁকে উদ্ধার করে হেলেন জোসেফ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনোয়ারের মৃত্যু হয়।

আনোয়ার দীর্ঘ দিন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাস জীবন অতিবাহিত করলেও গত ডিসেম্বরে দেশে আসেন। সর্বশেষ গত ২২ সেপ্টেম্বর তিনি দেশ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান। দেশ থেকে যাওয়ার ১৮ দিনের মাথায় ডাকাতদের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি।

সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আনোয়ার খানের লাশ দেশে আনার কথা রয়েছে বলে জানান আনোয়ারের চাচাতো ভাই নুরুল কবির।

আনোয়ার খান সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের রসুলাবাদ গ্রাসের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম ড্রাইভারের ছেলে। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

নুরুল কবির জানান, আনোয়ার খান গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে জোহানেসবার্গে অবস্থানরত আনোয়ারের দুলাভাই মোহাম্মদ শাহজাহান চিকিৎসার বিষয়টি তদারকি করেছেন। এখনো পর্যন্ত আনোয়ারের লাশের ময়নাতদন্ত হয়নি। ময়নাতদন্ত হওয়ার পর পরই লাশ দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

এদিকে আনোয়ার গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে বেশ তোলপাড় হয়। দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত আনোয়ারের বন্ধুরা শোক ও হত্যার বিচার জানিয়ে পোস্ট দিতে থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মৃত্যুর খবরটি এলাকায় পৌঁছালে পুরো রসুলাবাদ গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, আনোয়ার ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র। অপ্রয়োজনে কারো সঙ্গে কথা বলতেন না। সদা হাস্যোজ্জ্বল আনোয়ারের মৃত্যুতে পুরো গ্রামের মানুষের মধ্যে শোক বিরাজ করছে।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে জোহানেসবার্গে অবস্থারত আনোয়ারের দুলাভাই মোহাম্মদ শাহজাহান এ প্রতিবেদককে জানান, কসমো সিটিতে বাংলাদেশি মসজিদে প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে জিকির মাহফিল হয়। সেখানে অন্যদের সঙ্গে আনোয়ারও নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। ঘটনার দিন তিনি এক পাকিস্তানিকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশি আবু বকরের দোকানে যান। আবু বকরকে মসজিদে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি থেকে নেমে ডাক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে অবস্থানরত ডাকাতরা তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এতে আনোয়ারের শরীরে তিনটি গুলি লাগলেও পাকিস্তানি ব্যক্তি অক্ষত থাকেন।

ধারণা করা হচ্ছে, সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ওই বাংলাদেশির দোকানে ডাকাতির করতে অবস্থান করছিল। এমন সময় আনোয়ার খান সেখানে গেলে ডাকাতদের প্রতিরোধের জন্যই আনোয়ার এসেছে এমন ধারণা থেকেই তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে।

এর আগেও সাতকানিয়ার আরেক যুবক সেখানে ডাকাতদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here