বুলবুল মোকাবিলায় প্রস্তুত নৌবাহিনীর ১০ যুদ্ধজাহাজ

0
75

বাংলা খবর ডেস্ক: প্রবল শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় চট্টগ্রাম, সেন্টমার্টিন ও খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১০টি যুদ্ধজাহাজ ও নৌ কন্টিনজেন্ট প্রস্তুত রয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তায় বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, সাতক্ষীরায় ৫টি, চট্টগ্রামে ৩টি ও সেন্টমার্টিনে ২টি যুদ্ধজাহাজসহ নৌ কন্টিনজেন্ট ও মেডিকেল টিম মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

খুলনা অঞ্চলের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণতৎপরতা পরিচালনায় বানৌজা কর্ণফুলী, তিস্তা, পদ্মা, এলসিভিপি ০১২ ও এলসিভিপি ০১৩ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪টি নৌ কন্টিনজেন্ট যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রামে তিনটি জাহাজ বানৌজা শাহজালাল, শাহ পরান ও অতন্দ্র দ্রুততম সময়ে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকায় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গমনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে বানৌজা সমুদ্র জয় ও সমুদ্র অভিযান জরুরি ত্রাণসামগ্রী নিয়ে সেন্টমার্টিনে অবস্থান করছে।

তাছাড়া নৌবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের নিরাপদ আশ্রয় ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।

খুলনা নৌ অঞ্চলে মোতায়েনকৃত জাহাজসমূহ বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, সাতক্ষীরার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাসমূহে ২০০০ প্যাকেট জরুরি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করবে। যার প্রতিটি প্যাকেটে রয়েছে সাড়ে ৭ কেজি চাল, দেড় কেজি ডাল, দেড় লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি চিড়া, ১ কেজি মুড়ি, আধা কেজি গুড়, আধা কেজি বিস্কুট, ২ লিটার বিশুদ্ধ পানি, ২ ডজন মোমবাতি, ২ ডজন দেয়াশলাই বক্স এবং জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় স্যালাইন ও ওষুধ।

এছাড়া দুর্গত এলাকাগুলোতে জরুরি চিকিৎসা সহায়তার জন্য ৫টি বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও খাবার স্যালাইন বিতরণের কাজে নিয়োজিত থাকবেন। পাশাপাশি ৪টি নৌ কন্টিনজেন্ট যে কোন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।

ইতোমধ্যে সেন্টমার্টিন্সে নৌবাহিনীর ২টি যুদ্ধজাহাজ সমুদ্র জয় ও সমুদ্র অভিযান ২ টন চিড়া, ১ টন মুড়ি, ২ টন চাল, দেড় টন গুড়, ৫০০ কেজি ডাল, ৭০০ কেজি চিনি, ৫০০ প্যাকেট মোমবাতি, ২৫০ ডজন দিয়াশলাই নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

পাশাপাশি সেন্টমার্টিন্সের ফরওয়ার্ড বেইসের নৌ সদস্যরা জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ কার্য পরিচালনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তাছাড়া চট্টগ্রাম ও ঢাকায় উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুদ্ধজাহাজ ও নৌ কন্টিনজেন্ট অনুরূপ ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে।

এর আগে শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় দিকে ২৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ‘প্রবল শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। পূর্ববর্তী ৯ ঘণ্টায় এই প্রবল শক্তির ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়েছে ১০০ কিলোমিটার।’

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে ঝড়ো হাওয়ার আকারে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

‘বুলবুল’-এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলো, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় শনিবার (৯ নভেম্বর) ভোর থেকে দমকা/ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এছাড়া এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূল (সুন্দরবনের নিকট দিয়ে) অতিক্রম করতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here