লবন আতঙ্কে লঙ্কাকাণ্ড, বাড়তি লবণ নিয়ে বিপাকে কোম্পানি ও চাষিরা

0
543

বাংলা খবর ডেস্ক: দেশে লবণ বিপণনকারী শীর্ষ চার কোম্পানি বলেছে, দেশে লবণের কোনো ঘাটতি নেই; বরং বাড়তি লবণ নিয়ে কোম্পানিগুলো ও চাষিরা বিপাকে আছেন। দাম বাড়ার আশঙ্কা পুরোটাই গুজব।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হঠাৎ করেই লবণ কেনার হিড়িকের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিগুলো গণ মাধ্যমকে এ তথ্য জানায়। আজ বেলা তিনটায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের দোকানগুলোয় লবণ কিনতে প্রচুর মানুষের ভিড় দেখা যায়।

সকালে রাজধানীর কাজীপাড়া, আগারগাঁও, তেজগাঁও ও বেগুনবাড়ি এলাকার বাজার ও মুদি দোকানেও লবণ কিনতে ক্রেতাদের বাড়তি ভিড় দেখা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় লবণের মূল্যবৃদ্ধির খবর আসছে। বাড়তি দামে বিক্রি করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানাও করছেন।

দেশে লবণ সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এসিআই সল্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আলমগীর বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ গুজব। সরবরাহের কোনো সমস্যা নেই। আমরা একটি পয়সাও দাম বাড়াইনি।’ তিনি বলেন, ক্রেতাদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

মোল্লা সল্টের মহাব্যবস্থাপক আবদুল মান্নান বলেন, তিনি এখন কক্সবাজারে রয়েছেন। সেখানে চাষিদের কাছেই চার লাখ টনের মতো লবণ মজুত আছে। তিনি আরও বলেন, বাজারে লবণের দাম নেই। লবণের চাহিদা কম। এ কারণে অনেক চাষি এখনো নতুন মৌসুমের লবণ চাষ শুরু করেননি।

আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমরা দাম বাড়াইনি। সরবরাহ ঠিক আছে। মিল আগামী দুই মাস চালানোর মতো লবণ আমাদের হাতে আছে।’

কনফিডেন্স সল্টের মহাব্যবস্থাপক মো. সামসুদ্দিন বলেন, ঘাটতি তো নেই-ই, উল্টো বিক্রি কম। এর কারণ শুল্কমুক্ত বন্ডের লবণ বাজারে চলে আসছে। দেশি কৃষক ও মিলমালিকেরা বিপাকে আছেন। তিনি আরও বলেন, মিলগুলোও খুব খারাপ অবস্থায় আছে।

এদিকে আজ শিল্প মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিক টনের বেশি ভোজ্যলবণ মজুত রয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের লবণচাষিদের কাছে ৪ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন এবং বিভিন্ন লবণ মিলের গুদামে ২ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুত রয়েছে।

মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, দেশে প্রতি মাসে ভোজ্যলবণের চাহিদা কমবেশি এক লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে, লবণের মজুত আছে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টন।

পূবালী সল্টের মালিক পরিতোষ কান্তি সাহা বলেন, ‘আমার কাছে যারাই লবণের কথা জানতে চাইছে, তাদের বলছি, কত লাগবে নেন। কোনো অভাব নেই।’ তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে অপরিশোধিত লবণের বস্তা (৭৫ কেজি) ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। এ দামে কৃষকের খরচই ওঠে না।

বাজারে এখন বিক্রি কোম্পানির সবচেয়ে ভালো মানের লবণের প্যাকেটের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) লেখা ৩৫ টাকা। আর সাধারণ লবণের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৫ টাকা। পরিতোষ কান্তি সাহা এর বেশি দামে লবণ না কিনতে পরামর্শ দেন ক্রেতাদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here