এই নৈরাজ্য বন্ধ হোক

0
663

রাজধানী ঢাকা শহরসহ সারাদেশে বাড়ি ভাড়া দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তদারকির কেউ নেই। ফলে আয়ের অধিকাংশই যাচ্ছে বাড়ি ভাড়ায়। বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন থাকলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। ডিসিসির তালিকাও মানছে না কেউ। ভাড়াটিয়ার সঙ্গে চুক্তির নিয়ম ও দু’বছরের মধ্যে ভাড়া বাড়ানোর নিয়ম না থাকলেও হরহামেশাই তা হচ্ছে। ৮০ শতাংশ বাড়িওয়ালারা বাড়ি ভাড়ার আয় দিয়ে চলেন। কোনো কিছুর দাম বাড়লেই ভাড়া বাড়ান বাড়ির মালিকেরা। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে গত ২৫ বছরে রাজধানীতে বাড়িভাড়া বেড়েছে প্রায় ৩৮৮ শতাংশ। যেটাকে মগের মুল্লুক বললেও কম বলা হবে।

মাসের শেষ এবং শুরুতে বাসাবদলের চিত্র নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বছরের শুরুতে তো কথাই নেই। ইচ্ছে না থাকলেও বাড়িওয়ালার বাড়তি ভাড়ার চাপে ছেড়ে দিতে হয় বাড়ি। খুঁজতে হয় নতুন গন্তব্য। কিন্তু ভাড়াটিয়াদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। নতুন যে বাড়িতে ওঠা হয় সেখানেও শুরু হয় একই বিড়ম্বনা। বাড়িভাড়ার এই নৈরাজ্য বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। সবকিছু একটি নিয়মের মধ্যে চললে সবাই উপকৃত হবেন। প্রশ্ন হচ্ছে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে?

বাড়ি ভাড়া আইন-১৯৯১ এর ৭ ধারা অনুযায়ী, কোনো বাড়ির ভাড়া মানসম্মত ভাড়ার অধিক বৃদ্ধি করা হলে ওই অধিক ভাড়া, কোনো চুক্তিতে ভিন্নরূপ কিছু থাকা সত্ত্বেও আদায়যোগ্য হবে না। আইনের ১৩ (১) ধারা মোতাবেক বাড়ি ভাড়ার রসিদ ভাড়াটিয়াকে দিতে হবে। কিন্তু বেশিরভাগ বাড়িওয়ালা ভাড়া নিয়ে রসিদ দেন না। আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া নির্ধারণের দায়িত্ব বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রকের। তবে সরকারের কোনো সংস্থা এ নিয়ন্ত্রক নিয়োগ দেবে সে বিষয়ে আইনে কিছু বলা নেই। ফলে ঢাকা জেলা প্রশাসন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), দুই ডিসিসি বা সরকারের সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থা এ আইন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেনি। আর এভাবেই যুগ যুগ ধরে অকার্যকর রয়েছে আইনটি।

অবিলম্বে বাড়িভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য বন্ধ করা উচিত। আয়ের সিংহভাগই যদি বাড়ি ভাড়ায় চলে যায় তাহলে মানুষজন চলবে কি করে। বিশেষ করে নিন্ম আয়ের মানুষজনের এ নিয়ে ভোগান্তির কোনো শেষ নেই।বাড়ি ভাড়ার বিষয়টিকে আইনি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। পাশাপাশি আবাসন সমস্যারও সমাধান করতে হবে। স্বল্পসুদে গৃহঋণসহ নানাবিধ উপায়ে আবাসন সমস্যার সমাধান করতে হবে। বাড়িওয়ালাদের একচেটিয়া দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই। এত ব্যাপক সংখ্যক মানুষের সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here