বাংলা খবর ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গেঁটে বাতজনিত সমস্যা জটিল পর্যায়ে রয়েছে এবং ক্রমেই এর অবনতি হচ্ছে বলে প্রতিবেদন দিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ রোগের নিরাময়যোগ্য চিকিৎসা এখনো আবিষ্কার হয়নি। কিন্তু এ রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যে চিকিৎসা চালু আছে, গত কয়েক দশকে তার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে খালেদা জিয়ার গেঁটে বাতের জন্য প্রচলিত চিকিৎসা আর কাজ করছে না। যে কারণে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক মানের এক ধরনের বায়োলজিক্যাল থেরাপি দেওয়ার সুপারিশ করা হচ্ছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে তার কাছ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। ফলে তার চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদনটি পাঠান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া। বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি আপিল বিভাগে উপস্থাপন করা হয়। এ প্রতিবেদনটি গত ১০ ডিসেম্বর গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড প্রস্তুত করেছে। এ প্রতিবেদনের পাশাপাশি গত ৭ অক্টোবর গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবেদনও দিয়েছেন।
গত ১০ ডিসেম্বর গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডে রয়েছেন- চিকিৎসক শামীম আহমেদ, বদরুন্নেছা আহমেদ, তানজিমা পারভীন, চৌধুরী ইকবাল মাহমুদ, সৈয়দ আতিকুল হক, মো. ঝিলান মিয়া সরকার ও মো. ফরিদ উদ্দিন। এ বোর্ডের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে- খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কফজনিত শ্বাসকষ্ট (কফ ভেরিয়েন্ট অ্যাজমা), প্রতিস্থাপনজনিত হাঁটুতে ব্যথায় (অস্টিও-আর্থরাইটিস নামে পরিচিত) ভুগছেন। তার রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘ডান পায়ের ত্বকের নিচে এক ধরনের ছোট নডিউল আছে। এর জন্যও মেডিক্যাল বোর্ড একটি উন্নতমানের চিকিৎসার সুপারিশ করেছে; কিন্তু এ ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার সম্মতি না থাকায় তাকে চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া গত ৩ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। খালেদা জিয়াও চান মাঝে মাঝে এমন পরীক্ষা করানোর হোক। তবে তার ক্ষুধামন্দার সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় মেডিক্যাল বোর্ড তার জিআই অ্যান্ডোস্কপি করার পরামর্শ দিচ্ছে। এসব সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে যেসব ওষুধ প্রয়োগ করা প্রয়োজন তার জন্য খালেদা জিয়ার সম্মতির জন্য অধীর অপেক্ষায় আছেন। এ ছাড়া ৭ অক্টোবর গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড গত ১২ অক্টোবর যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতেও খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত ব্যাপারে প্রায় একই রকম তথ্য রয়েছে।