দেশে গণতন্ত্র নাই, কথা বলার অধিকার নাই: ইশরাক

0
435

বাংলা খবর ডেস্ক: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘১৩ বছর ধরে দেশকে তিলে তিলে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নাই, কারো কথা বলার অধিকার নাই এবং উন্নয়নের নামে ধোঁয়া, কিন্তু আমরা কোনো উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছি না। ঢাকা আজকে সবচেয়ে দূষিত শহর এবং বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় এক নম্বরে আছে। আমি যখন এলাকায় আসি, যে রাস্তা দিয়ে এসেছি, তখন রাস্তাঘাটে যে দুর্দশা দেখেছি, যে বেহাল অবস্থা দেখেছি এবং দুই পাশে যে জলাশয়গুলো রয়েছে, সেগুলোর যে করুণ দশা দেখেছি, দেখে আমার সত্যিই খারাপ লেগেছে’।

তিনি বলেন, ‘এই সরকার বলে তারা উন্নয়ন করেছে, স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে অমুক সেতু-তমুক সেতু, কিন্তু এগুলো সবই আসলে দুর্নীতির প্রজেক্ট। প্রত্যেকটা মেগা প্রজেক্ট করছে সেখান থেকে লক্ষ, হাজার, কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। বিদেশে আরাম-আয়েশে ফুর্তি করছে। আর বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ, আমরা নাগরিকরা রয়েছি দিন দিন আমাদের দুর্দশা বেড়েই চলেছে’।

ইশরাক আরো বলেন, ‘আমরা অভিযোগ দিলে সরকারি দলের নেতারা মন্ত্রীরা আমাদের অভিযোগের দল বলে, নালিশ পার্টি বলা হয়। আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে, পোস্টার লাগাতে গেলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা কোনো অভিযোগ দেব না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব অপশক্তি প্রতিরোধ করে দৃঢ় প্রত্যয় এগিয়ে যাব’।

মঙ্গলবার দুপুরে খিলগাঁও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রিমোহনী বাজারে পঞ্চম দিনের নির্বাচনী প্রচারণা শুরুতে তিনি

সাংবাদিকদের এসব বলেন।

ইশরাক বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করতে চাই। যদি আগামী ৩০ তারিখে আপনারা ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেন, সেখান থেকে আপনাদের যে অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন, সেটিকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার জন্য আমি সব কার্যক্রম করব। আপনাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করছি, আমি সব সময় সুখে-দুঃখে আপনাদের পাশে থাকব এবং এই উন্নয়নে যত যা কিছু আছে আমি আমার রক্ত-ঘাম দিয়ে, পরিশ্রম করে এই এলাকা উন্নত করব। এই এলাকার পরিবেশকে দূষণমুক্ত করার জন্য সবকিছু করব’।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন এটি আমার ইশরাক হোসেনের লড়াই নয়। এটি ধানের শীষের লড়াই। জনগণের লড়াই। গণতন্ত্রের লড়াই। আপনারা সেই লড়াইয়ে শরিক হবেন। আপনারা ৩০ তারিখে উপস্থিত হয়ে ভোট দেবেন’ আমরা সেই পরিবেশ নিশ্চিত করব’।

পূজার কারণে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের যে দাবি জানিয়েছেন, সে প্রসঙ্গে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমি প্রার্থী হিসেবে মনে করছি অবশ্যই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত। কারণ আমরা মুসলমানরা আমাদের যদি ওই দিন ঈদ থাকত। আমরাও নিশ্চয়ই চাইতাম না, ওই দিন ভোট দান হোক। তো ওনাদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে বলে আশা করছি। আর এটা তো কোর্টের ব্যাপার। নিশ্চয়ই কোর্ট আর ইলেকশন কমিশন মিলে এটা নির্ধারণ করবে’।

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়েছে কি না জানতে চাইলে ইশরাক বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নয়, একটি ফিল্ড তৈরি হচ্ছে, সেটি হলো ভোট ডাকাতির একতরফা ফিল্ড তৈরি হচ্ছে’।

বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন এসব বিষয়ে কথা বলি তখন সরকারি দলের নেতারা মন্ত্রীরা বলেন বিএনপি নালিশ পার্টি, অভিযোগের দল। আমরা আর এসব কথা বলতে চাই না। আমরা খালি এতটুকু বলতে চাই, জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। জনগণের শক্তি নিয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ে আমরা এগিয়ে যাব। কারো কোনো বাধা আমরা মানব না। কোনো নালিশ কাউকে দেব না। মহান আল্লাহ ওপরে আছেন, উনি দেখছেন। নিচে আমাদের জনগণ রয়েছে। আমাদের শক্তি জনগণ’।

ইশরাক আরো বলেন, ‘আমাদের সব পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে, বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। মারধর করা হচ্ছে। এমনও বলা হচ্ছে, যদি আবার পোস্টার লাগাতে আসে তাহলে থানা পুলিশে দেবে। পোস্টার লাগানো কি অপরাধ? পোস্টার লাগানো তো অপরাধ নয়। তাহলে কেন থানা পুলিশে দেওয়ার হুমকির দেবে পোস্টার লাগাতে গেলে? আপনারা জানেন, দেশে আজকে কী চলছে। আবার নতুন করে এখানে ব্যাখ্যা দেওয়ার কিছু নেই। আপনারা জানেন, দেশে একটা স্বৈরশাসন চলছে। অপশাসন চলছে। একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। যা-ই হোক এর মধ্যে জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাব’।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনে নতুন করে যুক্ত হওয়া এলাকাগুলোর উন্নয়নে আমাদের ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন যে ওয়ার্ডগুলো যুক্ত হয়েছে, সে বিষয় নিয়ে আমরা আমাদের ইশতেহারে তুলে ধরব। আপনারা জানেন সরকার তো শহরের ভেতরে ওয়ার্ডগুলোতেও নজর দেয় না। বাইরের ওয়ার্ডগুলো তো আরো দূরের কথা। যেহেতু তাদের জবাবদিহি নেই জনগণের প্রতি। তারা পুলিশি শক্তি ব্যবহার করে ক্ষমতায় এসেছিল অতিতে। এখন জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নেই। এই ব্যাপারে তারা কোনো কর্ণপাত করে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব অপশক্তি আমরা প্রতিরোধ করব এবং আমাদের বিজয় আসবেই। জনগণের বিজয় যুগে যুগে হয়েছে’।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here