বাংলা খবর ডেস্ক: কঙ্গোর জুগু টেরিটরির ব্লুকোয়া এলাকায় মানুষের প্রাণ রক্ষায় নিয়মিত টহল দিচ্ছে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনী। মিশন শুরুর ২০ বছর হলেও আজও ওই এলাকায় ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া, দিনের আলোয় সবার সামনে মানুষ হত্যা নিত্য দিনের ঘটনা। ছবির মতো এই সুন্দর এই দেশটিতে ফুসফুস ভরে শ্বাস নেওয়া যায়।
প্রকৃতি দেশটিকে অপরূপ সাজে সাজিয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই দেশটির মানুষের মাঝে লোভ ও ঘৃণায় চাপা পড়েছে সব সম্ভাবনা।
জুগু টেরিটরির ব্লুকোয়ার পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তা বোঝা যায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের রোই ক্যাম্পের পাশে আশ্রয় নেয়া হেমা ও লেন্দু নামের দুই সম্প্রদায়ের সহিংসতায় বিশ হাজারের বেশি মানুষের উদ্বাস্তু হওয়ার গল্পে।
সশস্ত্র গোষ্ঠী একটি লোকালয়ে হানা দিতে যাচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে টহলে কিভাবে যাবেন তারই প্রস্তুতি দেওয়া হয় সেনা সদস্যদের। কিভাবে হামলার জবাব দিয়ে শত্রুদের পরাজিত করতে হবে দেয়া হয় সেই নির্দেশনাও।
রোই ক্যাম্প থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ব্লুকোয়ায় সাঁজোয়া টহল নিয়ে যেতে যেতে নর্দার্ন সেক্টর কমান্ডার জানালেন এখানে সংঘাত ও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকার আদ্যোপান্ত।
কঙ্গোয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের নর্দার্ন সেক্টর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাজারী বলেন, ‘যে এলাকাটি দিয়ে যাচ্ছি এটা একটা ব্যাটল জোন। কিছুটা পরিস্থিতি শান্ত হলেও মাসে গড়ে ১৫, ২০, ৩০ জন করে মারা যাচ্ছেন সন্ত্রাসীদের হাতে। তারপরও আমাদের সদস্যরা যখনই প্রয়োজন হচ্ছে বেরিয়ে পড়ছে শুধুমাত্র এখানকার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।’
পথ চলতে চলতে জানা গেল, কখনো কখনো ভারী অস্ত্র সজ্জিত সাঁজোয়া টহলকেও আটকে ফেলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা। এমন পরিস্থিতিতে ইতুরি প্রদেশের রাজধানী বুনিয়া বিমান ঘাটি থেকে উড়ে এসে যোগ দেন বাড়তি শান্তিরক্ষীরা।
কঙ্গো জাতিরক্ষা মিশনে কর্মরত মেজর ওয়াহিদ বলেন, ‘এখানে এমন ঘটনা প্রায় ঘটে থাকে যখন পেট্রোলটি আমাদের থেকে বেশ দূরে থাকে। এবং ক্যাম্প থেকে দ্রুত ফোর্স পাঠানো যায় না। তখন আমাদের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দ্রুত ফোর্স পাঠাতে হয়।’
সংঘাতপূর্ণ জুগু টেরিটরিতে দক্ষতা ও সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করায় জাতিসংঘের কঙ্গো শান্তিরক্ষা মিশনে উজ্জ্বল বাংলাদেশের নাম।