হামলাও আমাদের ওপর, মামলাও আমাদের নামে: ইশরাক

0
59

বাংলা খবর ডেস্ক: মামলা-হামলা করে সরকার নির্বাচনী মাঠ ফাঁকা করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিএনপির মেয়রপ্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের ওপর হামলার পর আমাদের নেতাকর্মীদের নামেই মামলা দেয়া হয়েছে। ওয়ারী থানা পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতারও করেছে। হামলার বিষয়টি আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়সভায় তিনি আরও বলেন, আমরা আহ্বান জানাব– অতীতের মতো ভোটের মাঠ ফাঁকা না রেখে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখুন। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন; সেই ব্যবস্থা করুন। আমরা শান্তিপূর্ণ ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী।

ইশরাক বলেন, এতদিন আমি শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করে এসেছি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা হলে আমি কুশলবিনিময় করি। কিন্ত রোববার একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায়।

‘আমি বাসায় যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী ও সমর্থকরা ন্যক্কারজনক হামলা চালায়। সাংবাদিকসহ অনেকে আহত হন। আমরা আশঙ্কা করেছিলাম যে হামলা-মামলা দিয়ে মাঠ ফাঁকা করে দেয়া হতে পারে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, সাংবাদিক নেতা শ্যামল দত্ত, শাহেদ চৌধুরী, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, মাইনুল আলম, ইলিয়াস খান, কাদের গনি চৌধুরী, ওমর ফারুক, আবদুস শহীদ, নুরুদ্দিন আহমেদ, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, তৈমুর আলম খন্দকার, ফজলুল হক মিলন, ইমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ।

বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক বলেন, আমি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী। সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি আহ্বান জানাতে চাই– আগামী দিনগুলোতে যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে; সেই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দিন। অতীতের মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে।

এ সময় তার নির্বাচনী কার্যক্রমসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান তিনি। বলেন, আমি বয়সে তরুণ। এই ঢাকায় আমার বেড়ে ওঠা। সুযোগ পেলে একটি বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে চাই। নগরবাসীর জন্য আমার জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি।

সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে ইশরাককে ধন্যবাদ জানান দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রেসক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম। তিনি বলেন, আমরা মনে করি এই মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব যে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক চেতনায় বিশ্বাসী, এটি যে সবার একসঙ্গে চলার একটি আদর্শিক জায়গা; সেটি আবার প্রমাণ হয়েছে।

‘আমরা খুশি এ জন্য যে, আমাদের পূর্বসূরিরা যা করেছিলেন; আমরা সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারছি। এটি আমরা অক্ষুণ্ণ রাখতে চাই। এটি ভবিষ্যতেও চলবে, আমরা সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে সেই অঙ্গীকার করছি।’ তিনি বলেন, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি দুই সিটির নির্বাচন আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ৫৫ লাখ ভোটার ভোট দেবেন। যারা শিক্ষিত ও সচেতন তারাই এ ভোট দেবেন।

‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব— এই যে স্লোগান, সেটি গণতন্ত্রের সঙ্গে যায়। সাংবাদিক সমাজ সবসময় গণতন্ত্রের সঙ্গে, প্রগতি ও অসাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে আছে।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি দেশের ১৬ কোটি মানুষ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাংলাদেশ ও দেশের পতাকা এবং স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। সবাই একসঙ্গে পথচলে আমরা আগামী দিনের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। সেই প্রেক্ষাপটে আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, ভোটাররা একটা বাসযোগ্য, যানজটযুক্ত, সবুজ ও নিরাপদ ঢাকা চায়। যারা প্রার্থী আছেন, তারা সবাই যোগ্য; তাদের রাজনৈতিক ও পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে। তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। আশা করি তারা সেই প্রত্যাশা পূরণ করবেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের পর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতনিবিময় করেন ইশরাক। এর পর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here