টিফিন ক্যারিয়ারে খাবার দেখে অভুক্ত সন্তানদের মুখের হাসি

0
101


সজল কুমার কানু

গত বুধবার রাত সোয়া ১০ টার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এক ব্যাক্তি জানায় যে, কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন কেচুটিলা গ্রাম ( সীমান্তবর্তী সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানা এলাকা ) উক্ত গ্রামের আছমা বেগমের পরিবার না খেয়ে অভুক্ত অবস্থায় বাচ্চারা কান্নাকাটি করে না খেয়ে ঘুমিয়ে আছে । দিনের বেলা হাওলাত করে প্রতিবেশীর বাড়ী হইতে দুই কৌটা চাল এনে আলু সিদ্ধ করে খেয়েছিল, রাতে উপবাস।
আছমা বেগমের পরিবারে ৪ সদস্যের মধ্যে ২ টি ছেলে ও ১ টি মেয়ে। ছেলে আশরাফ (১২), আলী আহমদ (১০) মেয়ে খোদেজা (৮) সবাই নাবালক । তার মেয়ে খোদেজা যখন মায়ের পেটে ছিল তখন তাদের বাবা চুনু মিয়া ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান । ছেলে আশরাফ (১২) মাটির কাজ করে, প্রতিদিন ২০০/৩০০ টাকা পেত তাই দিয়ে তাদের অভাবের সংসার চলতো, এখন করোনা ভাইরাসের কারণে কাজ নেই তাই অভূক্ত।

সংবাদ প্রাপ্তির পর, আর দেরী নয়, যা ছিল আমার বাসায় ও থানার মেসে রান্না করা, ভাত, ডাল, সবজি, টেংরা মাছ, ২ টি টিফিন ক্যারিয়ারে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে দূর্গম কেচু টিলার এলাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা । রাত পৌণে ১২ টার দিকে আছমা বেগমের বাড়িতে হাজির, দরজা খোলা মাত্র পরিচয় দেবার পর এবং বাচ্চাদের ঘুম থেকে উঠার পর, আমার হাতে টিফিন ক্যারিয়ারে খাবার দেখে অভুক্ত সন্তানদের মুখের হাসি, চাকুরী জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি।
ধন্যবাদ মহান সৃষ্টিকর্তাকে যিনি আমাকে এই পেশায় এনেছিলেন । ধন্যবাদ সিলেট জেলার মাননীয় পুলিশ সুপার, ধন্যবাদ আমার সঙ্গীয়, এস আই রাজীব, এএসআই সিরাজ ও মাহফুজ কে যারা অদ্য রাতে আমার পথচলার সাথী হয়েছেন ।
উল্লেখ্য যে, যেহেতু রাতে দোকান বন্ধ ছিল তাই তাৎক্ষণিক ত্রানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি । আমার নিজ বেতনের ৫০০/-(পাঁচ শত) টাকা দিয়েছি আগামীকালের জন্যে ।
প্রিয়, কোম্পানীগঞ্জ বাসী আমাদের দূর্গম এলাকা কেচুটিলায় ১১৫ টি পরিবারের বসবাস এবং অধিকাংশ লোক এখানে গরীব , যারা ত্রান বিতরণ করছেন একটু দৃষ্টি দিন। আমাদের দূরবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলের হতদরিদ্র পরিবারের প্রতি।
মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট সবার জন্য দোয়া এবং সুস্থতা কামনা করছি ।

লেখক: সজল কুমার কানু , অফিসার ইনচার্জ ( ওসি)
কোম্পানীগঞ্জ থানা, সিলেট

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here