শপিং মল-দোকানপাট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতি

0
92
ফাইল ফটো

বাংলা খবর ডেস্ক:
লকডাউন শিথিল করে ঢালাওভাবে শপিংমল দোকানপাট খুলে জনসমাগমের সুযোগ দেয়াকে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। মঙ্গলবার পৃথক বিবৃতিতে তারা সরকারের এ সিদ্ধান্তকে অবিবেচনাপ্রসূত উল্লেখ করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহবান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি: মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দলটির পলিটব্যুরোর নেতারা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যু যখন ক্রমবর্ধমান তখন সারাদেশে ‘লকডাউন’ শিথিল করার সরকারি ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এটা হবে তীরে এসে তরী ডোবার শামিল। অবিবেচনাপ্রসূত ও আত্মঘাতি। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সরকার কোন বিশেষজ্ঞ পরামর্শের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং নিচ্ছে তা জানা যায় নেই, তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে যে সভার বরাত দিয়ে সরকারকে এই পরামর্শ দেয়া হয় তাতে কোনো বিশেষজ্ঞের উপস্থিতি দেখা যায়নি। করোনা ভাইরাসের কারণে অর্থনীতিকে সচল করার যে যুক্তি আনা হচ্ছে তাও গ্রহণযোগ্য নয়। করোনা ভাইরাসের ঝুকি মোকাবেলায় বাংলাদেশ যে সক্ষম ও দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে লন্ডনের ‘দি ইকনমিষ্ট’ পত্রিকা সে রকমই দাবি করেছে। সরকার ও অর্থমন্ত্রী নিজেও এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী এবং আগামী বছরের জন্য বর্তমান বছরের চাইতেও বড় বাজেট করতে চলেছেন। বিশ্বে এমন পরিস্থিতি নয় যে পোশাকশিল্প তার বাজার হারাবে। অন্যদিকে ঈদের এক বছরের ব্যবসার জন্য শপিংমলগুলো দেউলিয়া হয়ে যাবে না। বরং যেটা প্রয়োজন তা’হল ছোট ব্যবসা, শিল্প, কৃষি, খামার ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রণোদনা প্রদান। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে যে প্রণোদনা প্যাকেজগুলো ঘোষণা করেছেন তাকে এই দিকে বিস্তৃত করা যুক্তিযুক্ত হবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে করোনা সংক্রমণ নিম্নগামী না হওয়া পর্যন্ত ‘লকডাউন’ সহ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাকে কঠোরভাবে প্রয়োগের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান হয়।

জাসদ: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকার সক্রামক রোগ প্রতিরোধ নির্মূল আইন ২০১৮ জারি করে সমগ্র দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। সরকারী ছুটি ঘোষণা করেছে ও দফায় দফায় ছুটি বৃদ্ধি করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঘরে থাকা, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হবার জন্য কঠোর নির্দেশ জারি করেছে। গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে। ঔষধ-খাদ্যপণ্য-নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া সকল দোকানপাট, শপিংমল, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত বন্ধ রেখেছে। মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়, জুম্মার জামাত-তারাবির জামাত-ঈদের জামাতসহ অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়ে জনসমাগম বন্ধ রেখেছে। মৃত ব্যক্তির জানাজা-দাফন-দাহ-শেষকৃত্যে আপনজনসহ জনসমাগম বন্ধ রেখেছে। অঞ্চলভিত্তিতে লকডাউন করেছে। একই নগর-শহর-জেলা-উপজেলার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলাচল-যাতায়ত বন্ধ রেখেছে। ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় প্রবেশ ও ঢাকা থেকে ঢাকার বাইরে যাওয়া বন্ধ রেখেছে। এসব সরকারী নির্দেশ কার্যকর করতে প্রশাসন মাঠে কাজ করছে। পুলিশ সাথে সেনাবাহিনী রাস্তায় টহল দিচ্ছে। সরকারের এতো বাস্তব, যৌক্তিক ও কঠোর পদক্ষেপের পরও আইইডিসিআর আশংকা করছে মে মাসে সংক্রামিত ব্যক্তির সংখ্যা ৫০ হাজার অতিক্রম করবে।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, এরকম পরিস্থিতিতে ঢালাওভাবে শপিং মল, দোকানপাট খুলে দিয়ে জনসমাগমের সুযোগ দেয়া হবে আত্মঘাতি। তারা ঈদ শপিংয়ের জন্য ১০ মে থেকে ঢালাওভাবে শপিং মল, দোকানপাট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য সরকারের প্রতি সনির্বন্ধ আহবান জানান।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, এবারের ঈদ আনন্দের ঈদ না, শপিংয়ের ঈদ না। জাসদ নেতৃদ্বয় এই সংকটেও যাদের শপিংয়ের সামর্থ্য আছে তাদেরকে শপিংয়ের অর্থ দিয়ে শপিং না করে কর্মহীন আয়হীন নিরূপায় অসহায় মানুষের পাশে খাদ্য সাহায্য নিয়ে দাঁড়ানোর আহবান জানান। তারা বলেন, কর্মহীন আয়হীন নিরূপায় অসহায় মানুষরা ঈদের দিন দুই বেলা পেটভরে খেতে পারলে সেটাই হবে এবারের ঈদের সব চেয়ে আনন্দ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here