অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে বাবার কবরে দাফন

0
91

বাংলা খবর ডেস্ক:
জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে বাবার কবরে শেষনিদ্রায় শায়িত হন তিনি।

ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। গার্ড অব অনার দেন জেলা প্রশাসনের পক্ষে ধানমন্ডি রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম । সেখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটির সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের উপপরিদর্শক আব্দুর রহমান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের ছেলে আনন্দ জামান জানান, বেলা পৌনে ১১টায় তাঁর বাবার দাফনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় । এর আগে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয় । সেখানে ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। দাফনের সময় পরিবারের পক্ষে তিনি, চাচা আখতারুজ্জামান এবং ভগ্নিপতি আজিমুল হক উপস্থিত ছিলেন । সকাল সাড়ে নয়টার পর সিএমএইচ থেকে তাঁর বাবার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ।

দাফনের আগে আজিমপুর কবরস্থানেই সীমিত পরিসরে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের জানাজা পড়ান মাওলানা ফরিদউদ্দিন আহমেদ।প্রয়াত আনিসুজ্জামানের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতির কারণে কুলখানির বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

আজিমপুরে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় আনন্দ জামান তাঁর বাবার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা ও নানা উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

গতকাল ১৪ মে বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় আক্রান্ত অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুর পর করোনা শনাক্ত হয়েছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। সম্প্রতি তিনি বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তাঁর ছেলে আনন্দ জামান জানান, গত ২৭ এপ্রিল তাঁর বাবাকে চিকিৎসার জন্য ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁর উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস ও কিডনিতে সমস্যা ছিল। অবস্থার অবনতি হলে ৯ মে তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল তাঁর জ্বর আসে, বুকের ব্যথাও বাড়ে। সব মিলিয়ে অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে। একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল তাঁর চিকিৎসা করছিল।

পারিবারিক সূত্র জানায়, মৃত্যুর পর অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে তাঁর দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়। এর আগে ১০ মে হাসপাতালে তাঁর করোনা পরীক্ষায় ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে পৃথক বাণী দিয়েছেন। তাঁরা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। তাঁর পিতা এ টি এম মোয়াজ্জেম ছিলেন সুখ্যাত হোমিও চিকিৎসক। মা সৈয়দা খাতুন গৃহিণী হলেও তাঁর লেখালেখির হাত ছিল। পিতামহ শেখ আবদুর রহিম ছিলেন লেখক ও সাংবাদিক। আনিসুজ্জামান ছিলেন পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। তিনি স্ত্রী সিদ্দিকা জামান, দুই মেয়ে রুচিতা জামান, শুচিতা জামান এবং ছেলে আনন্দ জামানসহ দেশ-বিদেশে অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here