রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড: নিহত ৫

0
129

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালের নিচতলায় অস্থায়ী করোনা ইউনিটে এই ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন নিহত হন। নিহতরা করোনা রোগী ছিলেন।

নিহত পাঁচজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী। নিহত পাঁচজন হলেন, মাহবুব এলাহী চৌধুরী (৭৫), মনির হোসেন (৭৫), ভের্ণন অ্যান্থনি পাউল (৭৪) রিয়াজুল আলম (৪৫) ও খাদিজা বেগম (৭০)।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ৫৫ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। হাসপাতালের নিচতলায় করোনা ইউনিটে আগুন লাগে। হাসপাতালের ভেতরে ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। বাঁচার তাগিদে রোগীরা চিৎকার করতে থাকেন। আইসিইউ থেকে রোগীদের বের করে আনা হয়। অনেক রোগী নিজ উদ্যোগে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট গিয়ে ২০ মিনিট চেষ্টা করে আগুন নিভিয়ে ফেলে। ধারণা করা হচ্ছে, হাসপাতালের করোনা ইউনিটের এসির বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, হাসপাতালের পাশে অস্থায়ী করোনা ইউনিটে আগুন লেগেছিল। তবে অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহত হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। তিনি আরো জানান, নিহতদের মধ্যে তিনজনের করোনা পজিটিভ এবং দু‘জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

নিহত খাদিজার ছেলে আলমগীর বলেন, ‘তার মায়ের করোনা নেগেটিভ এসেছে। এরপরও তাকে পর্যবেক্ষণে রাখে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’ মাহবুব এলাহী চৌধুরীর ছেলে আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘আমার বাবার শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। দু’বারের টেস্টে তার নেগেটিভ এসেছে। এরপরও তারা বলছে তিন নম্বর টেস্ট করাতে হবে। ঈদের দিন টেস্ট করানো হয়েছে। আমরা প্লাজমা সংগ্রহ করে দিয়েছি। তিনি আইসিইউতে ছিলেন না। এই হাসপাতালে করোনা ইউনিট না থাকলেও যাদের লক্ষণ আছে তাদেরকে এই জায়গায় রাখা হচ্ছিল।’

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন বলেছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর সেখান থেকে ফায়ার সার্ভিস পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থলটি হাসপাতালের মেইন ভবন সংলগ্ন। সেটিতে অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না।

৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন:

রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যবিশিষ্ট এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবস বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সাতদিন শেষে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন জানান, ইউনাইটেড হাসপাতালের মূল ভবনের পাশে টেম্পোরারি মেটেরিয়াল দিয়ে করোনা রোগীদের জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে কোনো অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ছিল না। তবে মূল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ছিল। সেই অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহার করার সুযোগ পাইনি হাসপাতাল লোকজন।

এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের সময় ও ফায়ার সার্ভিসের খবর খবর জানানোর সময়; অগ্নিকাণ্ডের উৎস এবং করোনা ইউনিট নিয়ে তৈরি হওয়া ধোঁয়াশার বিষয়ে পুলিশ তথ্য সংগ্রহ করছে। রাত ১২টার দিকে র‌্যাবের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। এদিকে নিহতের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here