জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু:যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বেড়েই চলছে বিক্ষোভ (ভিডিও)

0
136

শওকত ওসমান রচি,নিউইয়র্ক:
পুলিশি নির্যাতনের পর কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বেড়েই চলছে বিক্ষোভ। ঘটনাস্থল মিনেসোটায় প্রথম বিক্ষোভের আগুন জ্বললেও এ ক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠছে যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক রাজ্যে, শহরে। মিনেসোটা, নিউ ইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়াতে দেখা দিয়েছে উত্তাল বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে নিউ ইয়র্ক, লস অ্যানজেলেস, শিকাগো, ডেনভার, হিউজটন, লুইসভিলে, ফিনিক্স, কলম্বাস ও মেম্ফিসে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ জনতা হোয়াইট হাউজের বাইরে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা জর্জ ফ্লয়েডের ছবিসহ প্লাকার্ড নাড়িয়ে স্লোগান দেয়। ফ্লয়েড হত্যায় বিচার দাবি করতে থাকে। তবে হোয়াইট হাউজ এ সময় ছিল লকডাউনে।
আজ শনিবার দিনব্যাপি বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি নিউইয়র্কয়েও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে জ্যাকসন হাইটস এলাকায়। ডায়ভারসিটি প্লাজায় বিকেল ৩ টা নাগাদ বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। সেখান থেকে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদ জানানো হয়। সমবেত হয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ স্লোগান দিতে থাকেন। তারা সমস্বরে বলতে থাকেন- ‘আই ক্যান্ট ব্রিথ’। অর্থাৎ আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না। এই শব্দ কয়টি জর্জ ফ্লয়েডের উচ্চারণ করা শেষ শব্দ। এরপর বিক্ষোভ সমাবেশ বিক্ষোভ মিছিলে রূপ নেয়। কুইন্স এর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মিছিলটি সন্ধ্যা নাগাদ পুনরায় ডায়ভারসিটি প্লাজায় এসে পৌঁছে। এসময় বিপুল সংখ্যক এনওয়াইপিডি সদস্যরা সমাবেশ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে কড়া প্রহরা দেয়।

জ্যাকসন হাইটস এলাকায় বিক্ষোভের কয়েকটি চিত্র। ছবি: বাংলা খবর

ছবি:বাংলা খবর
ছবি:বাংলা খবর
ছবি:বাংলা খবর
ছবি:বাংলা খবর

আফ্রিকার বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। লাখ লাখ মানুষ ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসে বিচার দাবি করছেন। এ ক্ষেত্রে কৃষ্ণাঙ্গ বা শ্বেতাঙ্গ কোনো ভেদাভেদ নেই। আগের দিন বিক্ষুব্ধ জনতা ব্যাপক অগ্নিসংযোগ করে। এ নিয়ে প্রশাসনে, রাজনীতিতে তোলপাড় হয়। এরই মধ্যে মিনিয়োপোলিসের সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাউভিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিরস্ত্র জর্জ ফ্লয়েডকে তাদের হেফাজতে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। জর্জ ফ্লয়েডকে গত সোমবার যখন একটি গাড়ির পাশেই হাঁটু গেঁড়ে দিয়ে তিন পুলিশ সদস্য মাটির সঙ্গে সজোরে চেপে ধরে, তার মধ্যে শ্বেতাঙ্গ এই পুলিশ কর্মকর্তাকে দেখা গেছে ফুটেজে। এরই মধ্যে তিনি ও অন্য তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ডেরেক চাউভিনকে মিনিয়াপোলিসের আদালতে উপস্থিত করার কথা রয়েছে। ওদিকে প্রথমদিকে জর্জ ফ্লয়েডকে নির্যাতনের যে ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছিল, অন্য পাশ থেকে তোলা আরেকটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ পেয়েছে মিডিয়ায়। এসব ঘটনাকে অত্যন্ত ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ফ্লয়েড পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন।

ওদিকে শুক্রবার ও শনিবার রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয় মিনিয়াপোলিস-সেইন্ট পলের টুইন সিটিতে। কিন্তু কারফিউ কর্যকর হওয়ার পরও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। পরে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভবন ও যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বিভিন্ন শহরে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে। আটলান্টায় বিভিন্ন ভবনে ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। ডালাসে বিক্ষোভকারীরা ইটপাথর নিক্ষেপ করার পর তাদের দিকে কাঁদানে গ্যাসের ক্যানিস্টার ছুড়েছে পুলিশ।
জর্জ ফ্লয়েড হত্যায় ডেরেক চাউভিনকে থার্ড ডিগ্রি হত্যা ও সেকেন্ড ডিগ্রি ম্যানস্লাউটারের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হলেও অন্য কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি তুলেছে বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর পুলিশি হত্যাযজ্ঞের অভিযোগকে আরো ধারালো করেছে। ক্ষোভকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এমনিতেই অভিযোগ আছে, কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে দেশজুড়ে বিক্ষোভ, মিনিয়াপোলিসে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে। বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের বিক্ষোভে রাতের বেলা একটি পুলিশ স্টেশন আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বেশ কিছু ভবন আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। লুটপাট ও ভাঙচুরের শিকার হয়েছে অনেক স্থান। এর ফলে সেখানে ন্যাশনাল গার্ডদের ডাকা হয়।

জ্যাকসন হাইটস এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল। ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন :

Protests over George Floyd's death erupt across New York City. This Video from Jackson Heights area today evening…..

Posted by Shawkat Rachi on Saturday, May 30, 2020

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here