মোবাইল কলরেট-তামাকপণ্যে বাড়তে পারে কর

0
118
ছবি: সংগৃহীত

বাংলা খবর ডেস্ক, ঢাকা:
আগামী ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল কলরেট এবং তামাকজাত পণ্যে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে। এনবিআরের তৈরি করা বাজেট প্রস্তাবনায় এমন প্রস্তাব যোগ করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে অর্থ মন্ত্রণালয়।

এনবিআর এর একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসের প্রভাবে অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও টেলিকম খাতের অবস্থা ভালো। মানুষ ফোনে ইন্টারনেটের ব্যবহারের পাশাপাশি কথা বলাও বাড়িয়েছে। এই মুহূর্তে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এই খাত থেকে সরকারকে বিপুল পরিমান শুল্ক সংগ্রহ করতে হবে। সেজন্য মোবাইল ফোনের কল রেট বাড়ানো যাবে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, তামাক ও মোবাইল যোগাযোগ সব সময়ই সরকারের আয়ের অন্যতম বড় উৎস। তাই এ দুই খাতে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে।
২০১৯-২০ সালের চলতি বাজেটে মোবাইল ফোন কল রেট, সিম কার্ড ট্যাক্স, এবং এই সংক্রান্ত সেবায় শুল্ক বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছিল। ফলে গত বছরই বেড়েছিল কল রেট। ২০১৮-২০১৯ সালের বাজেটে মোবাইল ফোন কল রেটের উপর ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপিত ছিল। এবার আগামী বাজেটে অথার্ৎ ২০২০-২১ সালের বাজেটে এই খাতে ১০ শতাংশ থেকে শুল্ক বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে।

এদিকে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব বিবেচনা করে তামাকজাত পণ্যগুলোর জন্য অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের দাবি করে আসছে। এনবিআরের কাছে বাজেট প্রস্তাবনায় সংগঠনগুলো বলেছিল যে, বাজেটে সিগারেটের জন্য নির্দিষ্ট কর এবং দ্বি-স্তরের মূল্য নির্ধারণের ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করা সম্ভব।

মঙ্গলবার (০২ জুন) সকাল ১১টায় আসন্ন ২০২০-২১ জাতীয় বাজেটে তামাকপণ্যে কর ও মূল্যবৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা এবং করণীয় তুলে ধরতে প্রজ্ঞা এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স- আত্মা ‘কেমন তামাক কর চাই, বাজেট ২০২০-২১’ শীর্ষক ওয়েবিনার আলোচনায় বক্তারা বলেন, লমান কোভিড-১৯ মহামারি বুঝিয়ে দিয়েছে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ কতটা জরুরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যে জানিয়েছে তামাকযুক্ত ফুসফুস করোনা ভাইরাস সংক্রমণে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এই সতর্কতা আমলে নিলে দেশে বর্তমানে প্রায় ৪ কোটি তামাক ব্যবহারকারী মারাত্মকভাবে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তামাকপণ্যের সহজলভ্যতা এবং ত্রুটিপূর্ণ কর কাঠামোই এর প্রধান কারণ। তামাকপণ্যের দাম কার্যকরভাবে বাড়ানো হলে বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহার শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে। শুধু তাই নয় দামের কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠী তামাক ছাড়তে অনেকটা উৎসাহিত হবে বলেও জানান তারা।

তামাক ব্যবহার বন্ধে প্রচার-প্রচারণার ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেও জানান বক্তারা। এছাড়া আরো বলেন, শুধু দাম নয়, সচেতনতাই পারে এর ব্যবহার রোধ করতে। এছাড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ২৫ শতাংশ মহিলা ধোয়া বিহীন তামাক ব্যবহার করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, যদি এবারের বাজেটে তামাকপণ্যে করারোপের ক্ষেত্রে কোন মৌলিক পরিবর্তন না আসে, এই বাড়তি ১১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের সুযোগ আমরা হারাই। এতো মৃত্যু, অসুস্থতা অব্যাহতই যদি থেকে যায়, তাহলে আমি নৈতিকভাবে এই বাজেটকে সমর্থন করতে পারি না।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সিগারেট, বিড়ি, গুল ও জর্দাসহ তামাকজাত সামগ্রীর ওপর সম্পূরক শুল্ক বিভিন্ন ধাপে হতে পারে। বেশি রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এনবিআর সিগারেটের দামের স্ল্যাবগুলো সংশোধন করতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, করোনা মহামারির কারণে সরকার ২০২০-২১ অর্থবছরে আয় বাড়াতে বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে। সরকার চাচ্ছে, জনজীবনে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন খাতে করের বোঝা না চাপাতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here