কারফিউ উপেক্ষা করেই রাতভর বিক্ষোভ

0
135
হোয়াইট হাইজের নিকটবর্তী এক রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ।

বাংলা খবর,নিউইয়র্ক:
কারফিউ উপেক্ষা করেই হাজার হাজার বিক্ষোভকারি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে রাতভর বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে রাজধানী ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউজের সামনে এবং নিউইয়র্কয়ে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশকে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। নিউইয়র্কয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো কারফিউ শুরু হয় মঙ্গলবার রাত ৮টায়। বহাল থাকবে বুধবার ভোর ৫টাপর্যন্ত। একইভাবে আগামী ৭ জুন পর্যন্ত এ কারফিউ বহাল থাকবে। এরআগে বিক্ষোভ দমনে নিউইয়র্ক সিটির পক্ষ থেকে সোমবার প্রথম রাত ১১ টা থেকে পরদিন ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়।
কারফিউ জারি করা হলেও বিক্ষোভকারিরা তা মানছেননা। গতরাতে এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারিদের ম্যানহাটন ব্রিজের ওপর অবস্থান করতে দেখা গেছে। এনওয়াইপিডি পুলিশ সদস্যদের বেশ অসহায় অবস্থায় দেখা গেছে। ওদিকে হোয়াইট হাউসের বাইরে মোটা তারের বাউন্ডারির বাইরে আবস্থান করছেন বিক্ষোভকারিরা। অন্যপাশে হোয়াইট হাউস ঘিরে ন্যাশনাল গার্ড ও পুলিশ সদস্যদের অবস্থান। বিক্ষোভকারিরা ভেতরে প্রবেশ করতে কয়েক দফায় বাউন্ডারি ধরে টানাটানি করেন।

এদিকে বিক্ষোভ দমনে সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব গ্রহণ না করায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের গভর্নরদের সমালোচনা করেছেন । বিক্ষোভ চলাকালে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ট্রাম্প এই সমালোচনা করেন। এরপর থেকে পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভে আরও উত্তেজনা বেড়েছে। সোমবার শেষ রাতে নিউইয়র্কে বিক্ষোভকারীরা বেশ কিছু দোকানের জানালা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। লস অ্যাঞ্জেলসে একটি স্ট্রিপ মলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেন্ট লুইসে চার পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন এবং লাস ভেগাসে গুলিবিদ্ধ এক কর্মকর্তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

টানা দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ানো বিক্ষোভ দমনে ডোনাল্ড ট্রাম্প সেনা মোতায়েনের হুমকি দিয়েছেন এবং গভর্নরসহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছেন বিক্ষোভ দমনে তাদের ভূমিকার জন্য।

নিউ ইয়র্কের ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর এন্ড্রো কুমোর সমালোচনা করে ট্রাম্প টুইটে লিখেছেন, লুটপাট-কারী, ডাকাত, চরমপন্থী বাম এবং অন্যান্য নিম্নশ্রেণির কাছে হেরে গেছে নিউ ইয়র্ক। গভর্নর সেনাবাহিনী মোতায়েনে আমার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। নিউ ইয়র্ককে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়া এই বিক্ষোভে বামপন্থীদের নেপথ্যে থাকার দাবির পক্ষে ট্রাম্প কোনও প্রমাণ হাজির করেননি।

কুমো তার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, সহিংসতা ও লুটপাটের ঘটনায় তিনিও ক্ষুব্ধ এবং শহরের মেয়র ও পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করেনি। মেয়র বিল ডি ব্ল্যাজিও সংকটের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেননি বলে তিনি মনে করেন। সেনা মোতায়েনে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে কুমো বলেন, নিউইয়র্কের বিক্ষোভ মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ না থাকা বাহিনী যদি হস্তক্ষেপ করে তাহলে ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে।
ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান জেনারেল জোসেফ লেঙ্গিয়েল বলেছেন, সোমবার রাতে বিভিন্ন শহরে সহিংসতা কমেছে। যদিও বিক্ষোভ আগের মতোই বা বেড়েছে। রাতে কোনও সেনা সদস্য আহত হয়নি। সেনা কর্মকর্তা জানান, ২৯টি অঙ্গরাজ্যে ১৮ হাজার সেনা সদস্য স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা-বাহিনীকে সহায়তা করছে এবং এই সংখ্যা বাড়ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here