বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে আরো ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত মোট ৮১১ জনের মৃত্যু ঘটল। মৃতদের ২৩ পুরুষ এবং বাকি ৭ জন নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ২৮২৮ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত ৬০ হাজার ৩৯১ জন।
আজ শুক্রবার (৫ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি আরো জানান, ৫০টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৬৪৫টি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ৮৮টি। আক্রান্তের হার ২০.০৭ শতাংশ।
নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬৪৩ জন এবং এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১২ হাজার ৮০৪ জন। সুস্থতার হার ২১.২০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১.৩৪ শতাংশ।
মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ জন, সিলেট বিভাগের তিনজন, রাজশাহী বিভাগের দুইজন, বরিশাল বিভাগের একজন ও রংপুর বিভাগের একজন।
বয়স বিশ্লেষণে জানা যায়, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৪১-৫০ সাতজন, ৫১-৬০ ১১ জন, ৬১-৭০ ছয়জন, ৭১-৮০ দুইজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ১৭ জন এবং বাড়িতে ১৩ জন।
২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৩৬৫ জনকে। আইসোলেশন থেকে ছাড় দেয়া হয়েছে ১৭৩ জনকে।
৪ জুন পর্যন্ত আক্রান্ত ও মৃতের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে নাসিমা সুলতানা আরো জানান, শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের ৭১% পুরুষ ও ২৯% নারী। বয়স বিশ্লেষণে ২১-৩০ বছর বয়সের মধ্যে সর্বাধিক ২৮%, এর পরই রয়েছে ৩১-৪০ বছর বয়সের মধ্যে ২৭%। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের অধিকাংশই ষাটোর্ধ্ব।
উল্লেখ, ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার কথা জানায় সরকার। ১৮ মার্চ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে প্রথম ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
ডা. নাসিমা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানান বুলেটিনে।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হলেও এখন করোনাভাইরাসের কবলে গোটা বিশ্বই। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এখন পর্যন্ত গোটা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬২ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার বেশি। অবশ্য ৩ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও। অবশ্য প্রাণঘাতী এ ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে মানুষকে ঘরে রাখার লক্ষ্যে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে তা ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়। এরপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে গণপরিবহন ও অফিস-আদালত খুলে দেওয়া হয়েছে।