পশ্চিমবংগে, আসামে, বিহারে, আর কোন কোন রাজ্যে জানিনা, করোনাভাইরাসকে দেবী মনে করে পুজো চলছে। ন’টা লাড্ডু, ন’টা লবংগ, ন’টা ফুল দেবীকে দেওয়া হয়। পুজোর মূল উদ্দেশ্য, করোনা দেবী যেন চলে যান, মানুষ যেন মহামারী থেকে বাঁচে। একজন বলেছেন, স্বপ্নে এই পুজো করার আদেশ এসেছে। বেশ, ভালো কথা, আদেশ মানা হয়েছে। এই পুজোটা কিন্তু সংক্রামক। বিহারের কোথাও হচ্ছে বলে শিলিগুড়িতে হলো, শিলিগুড়িতে হলো বলে কলকাতায় হলো, কলকাতায় হলো বলে গৌহাটিতে হলো। কেউ পিছিয়ে থাকতে চাইছে না। আমি এই পুজোর খবর পেয়ে মোটেও অবাক হইনি। এর চেয়ে আরো ভয়ংকর কুসংস্কার আমি দেখেছি।
এ পুজো তো অশিক্ষিত অল্প- শিক্ষিত নিরীহ মহিলারা করছে। আমরা কি লেখাপড়া জানা ভদ্রলোকদের করোনা থেকে বাঁচতে গোমূত্র পান করতে দেখিনি, সারা গায়ে গোবর লেপে বসে থাকতে দেখিনি? আমরা বড় বড় তারকা, বড় বড় রাজনীতিক, বড় বড় ধনকুবেরদের কি মানুষ ঠকানোর ব্যবসায়ী গুরুদের পায়ে মাথা ঠেকাতে দেখিনি! আমরা কি রকেট ছাড়ার আগে নারকেল ভাংতে বা মন্দিরে মিনিয়েচার রকেট নিয়ে বিজ্ঞানীদের পুজোয় বসতে দেখিনি? পুজো-আচ্চা নিয়ে থাকা কিছু মহিলা, যারা বিজ্ঞান মনস্ক হওয়ার কোনরকম সুযোগ পায়নি জীবনে, তারা করোনা পুজো করেছে, বিজ্ঞানের বিরাট বিরাট বই পড়ে পণ্ডিত হওয়া ভদ্রলোকদের কুসংস্কারের তুলনায় এ কিছুই নয়।