বাংলা খবর ডেস্ক:
পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় মারাত্মক সীমান্ত সংঘর্ষে পিপল’স লিবারেশন আর্মির কত জন সেনা নিহত হয়েছেন, তা নিয়ে নীরবতা বজায় রাখল চীন।
দুই দেশের মধ্যেকার চরম উত্তেজনার মধ্যে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শংকরের ফোনে কথা হয়। সেসময় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ানও সেখানে ছিলেন। কিন্তু, সংঘর্ষে তাদের কত সেনা নিহত হয়েছে, সে প্রসঙ্গে অদ্ভুত ভাবে নিশ্চুপ থাকে চীন।
পূর্ব লাদাখের সংঘাত নিয়ে কোনো বিশদ তথ্য দিতে প্রথম থেকেই অস্বীকার করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান। যত বারই তা জানতে চাওয়া হয়েছে, সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন। এমনকী চীনা সেনার হতাহতের বিষয়টিও তিনি এড়িয়ে যান। সাংবাদিকরাও এ নিয়ে প্রশ্ন করলে লিজিয়ান বার বার বলেন, উভয় দেশের সীমান্ত সেনারা এই বিষয়টি নিয়ে স্থলভাগে কাজ করছেন। হতাহতের কোনো তথ্য পরিসংখ্যান আমার কাছে নেই।
ঝাও আরও বলেন, চীন ও ভারত উভয়ই বিষয়টির নিষ্পত্তিতে যোগযোগ রেখে চলেছে। কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা চলছে। এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘চীন আরও সংঘর্ষ দেখতে চায় না।’
বেইজিংয়ের এক দক্ষিণ-এশীয় বিশেষজ্ঞ হু শিশেংয়ের ধারণা, হতে পারে চীন এ নিয়ে নিজের দেশে বেশি হইচই চাইছে না। তাই নীরবতা বজায় রেখে চলেছে। গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকের বক্তব্য, দু’দেশে সেনার মৃত্যু নিয়ে তুলনা হোক, এটা বেইজিং চাইছে না। যে কারণে পিএলএ’র হতাহত নিয়ে চুপ রয়েছে। এটা বেইজিংয়ের তরফে সদিচ্ছা।
তবে, চীন কিছু না বললেও মার্কিন মিডিয়ায় গোয়েন্দা সূত্রের উল্লেখ করে দাবি করা হয়েছে, ১৫ জুনের ভারত-চীন সংঘর্ষে তাদের ৩৫ সেনা নিহত হয়েছেন।
প্রকাশনা সংস্থা ইউএস নিউজ সূত্রে খবর, ভারতের হাতে গালওয়ান উপত্যকায় বড় সংখ্যক সেনার প্রাণহানিকে চীনের কাছে অপমানজনক ঠেকেছে। যে কারণে বেইজিং হতাহতের সংখ্যা ঘোষণা করতে অনিচ্ছুক। কারণ, বেইজিংয়ের ধারণা, চীনের ‘শত্রু’রা এতে আরও উত্সাহিত হয়ে পড়বে। তাই ঘটনার দুই দিন পরেও পূর্ব লাদাখে চীনের তরফে হতাহত নিয়ে কোনো বিবৃতি বেইজিং দেয়নি।
মার্কিন গোয়েন্দাদের রিপোর্টেও গুলি চলার কথা বলা হয়নি। ভারতীয় বাহিনী ও চীনা সেনার তরফেও গুলিচলার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। মার্কিন গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, লাঠি, ছুরির আঘাত ছাড়াও দু’পক্ষের অনেক সেনা মারা গিয়েছেন খাড়া পাহাড় থেকে পড়ে গিয়ে। কাঁটাতার জড়ানো এক ধরনের ব্যাটন যে চীনা সেনারা ব্যবহার করেছিল, ইতোমধ্যে তা সামনে এসেছে।
গত সোমবার রাতে ঘটনার সূত্রপাত। পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের সেনারা। চীনা সৈন্যদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ভারতের একজন কর্নেল পদমর্যাদার সেনাসহ মোট ২০ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। এ সংঘর্ষে চীনের অন্তত ৪৩ সেনা নিহত অথবা গুরুতর আহত হয়েছেন বলে ভারতের দাবি।