রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলুদ, জিরে, গোলমরিচ

0
130

বাংলা খবর ডেস্ক:
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রুখে দিতে পারে করোনাকে। শরীর দুর্বল থাকলে ধরবে ওই রোগ। চিকিৎসকরা বলছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা যায়। তার জন্য হাতের কাছেই রয়েছে হলুদ, জিরে, গোলমরিচ, তুলসী। এই ভেষজ উপাদানগুলির সাহায্যে শরীরকে নীরোগ রাখা যায়।
আয়ুর্বেদাচার্য ডাঃ অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বললেন, ‘‌সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ঈষদুষ্ণ দুধে এক গ্রাম হলুদ মিশিয়ে খেলে অ্যালার্জি ও জীবাণু সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষমতা বাড়ে। ‌কাঁচা হলুদ বয়স অনুযায়ী আধ গ্রাম থেকে পাঁচ গ্রাম চিবিয়ে খেলে আরও বেশি উপকার হয়। যাঁরা শুধু হলুদ খেতে পারেন না, তাঁরা আখের গুড় দিয়ে খেতে পারেন। তবে ডায়াবেটিস থাকলে গুড় চলবে না। করোনার আবহে প্রতিটি রান্নায় হলুদ দেওয়া উচিত।’
হলুদের এই গুণের খবর রাখেন শচীন তেন্ডুলকার। তিনি রোজ সকালে খালি পেটে দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খান।
হজমশক্তি বাড়লে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকখানি বেড়ে যায়। আয়ুর্বেদাচার্য ডাঃ রবীন আদকের কথায়, ‘খাওয়ার পর আধ চামচ থেকে এক চামচ হালকা ভাজা জিরে খেলে হজমশক্তি বাড়ে, খিদে বাড়ে। গ্যাস–অম্বল কমে। ঘুম ভাল হয়। তরকারিতে গোলমরিচ দিলে বা গোলমরিচ যে কোনও উপায়ে খেলে হজমশক্তি বাড়ে।’
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের মতে, ওজন অনুযায়ী আধ থেকে এক চামচ পর্যন্ত চ্যবনপ্রাশ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। যাঁদের ঠান্ডা লাগার ধাত, হালকা শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা নিয়মিত সকালে তুলসী, দারচিনি, শুকনো আদা, গোলমরিচ ফুটিয়ে চায়ের মতো করে খেলে খুবই উপকার পাবেন। যে পরিমাণ তুলসী দেওয়া হবে, তার অর্ধেক দারচিনি, অর্ধেক শুকনো আদা এবং শুকনো আদার অর্ধেক গোলমরিচ দিতে হবে। এই মিশ্রণ করোনা সংক্রমণ ঠেকাতেও কাজে দেবে। ভিটামিন সি–এর জন্য খাওয়ার সময় একটুকরো পাতিলেবু বেশ ভাল কাজ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চাই সুষম খাদ্যাভ্যাস। ডায়েটিশিয়ান প্রিয়াঙ্কা রানার মতে, ‘‌ইমিউনিটি বাড়াতে রোজকার খাদ্য–তালিকায় রাখতে হবে প্রোটিন। যেমন মাছ, মাংস, ডাল, দুধ, সয়াবিন। মুসুর ডালের জল খুব উপকারী। চাল, ডাল, আলু, সবজি একসঙ্গে খিচুড়ির মতো খেলে পেটও ভরে, প্রয়োজনীয় ক্যালরিও পাওয়া যায়। রান্নায় হলুদ, জিরে, রসুন, লবঙ্গ এবং গোলমরিচ ব্যবহার করা জরুরি। ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খুব কার্যকরী।’
করোনা সংক্রমণ হলে যতটা না শারীরিক ক্ষতি হয়, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় মানুষ ভয় পেয়ে যান বলে। মানসিক দৃঢ়তা আনতে শরীরচর্চার একটা বিশেষ ভূমিকা আছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যোগ ন্যাচারোপ্যাথি পর্ষদের সভাপতি ড.‌ তুষার শীল বলেন, ‘‌রোজ সকালে যে কোনও আসন, প্রাণায়াম, ধ্যান মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। আমাদের শরীরের ফুসফুসে বায়ু ধারণ করার ক্ষমতাও বাড়ে। ন্যাচারাল কিলার সেলের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়।’
যোগাসন প্রশিক্ষক রিনা কর্মকার বলেন, ‘‌ভোরবেলা খালি পেটে বিশুদ্ধ অক্সিজেন শরীরে নেওয়া গেলে সবচেয়ে ভাল হয়। সে জন্য অন্তত ১৫ মিনিট প্রাণায়াম করতে হবে। বাকি ১৫ মিনিট ঘাড়, কোমর, পায়ের জোর বাড়াতে ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে হবে। জানুশিরাসন, পবনমুক্তাসন, গোমুখাসন, বীক্ষাসন নিয়মিত করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বাড়ে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here