দেশে করোনা ভাইরাসে আরো ২৯ জনের মৃত্যু

0
105

দেশে করোনা ভাইরাসে আরো ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৯৭ জনে। মৃতদের মধ্যে ২১ জন পুরুষ এবং আটজন নারী। এঁদের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে চারজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে একজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে দুইজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৯৯৭ জনের।
এছাড়া নতুন যে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের ৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের চারজন, রাজশাহী বিভাগের সাতজন, খুলনা বিভাগের তিনজন, বরিশাল বিভাগের দুইজন, সিলেট বিভাগের তিনজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের একজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ২৫ জন বাসায় একজন এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে তিনজনকে।

আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিং এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪টি ল্যাবে করোনাভাইরাস শনাক্তে আরো ১৪ হাজার ৭৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৬৭৩ জন। এ নিয়ে দেশের করোনা সংক্রমণ থেকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭০ হাজার ৭২১ জন।

ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৩ হাজার ৮৭১টি। একই সময় পূর্বের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৭২৭টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে তিন হাজার ২৮৮ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৯ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আট লাখ ৩২ হাজার ৭৪টি।

সারা দেশের করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতাল সম্পর্কে তথ্যে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যার সংখ্যা ছয় হাজার ৭৫টি এবং আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১৪৯টি, সারা দেশে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১৪ হাজার ৭৭৫টি, সারা দেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৪০১টি এবং সারা দেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১ হাজার ১৪১টি।

আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৭৪৪ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৪২ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ৩০ হাজার ১২৩ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৩ হাজার ৬৭৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৪৪৯ জন।

কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন দুই হাজার ২৪২ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৬৪৮ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট তিন লাখ ৭৫ হাজার ১৪৫ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ৯ হাজার ৯৯৫ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৪ হাজার ১৫০ জন।

সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।

বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে এক লাখ ৫৯ হাজার ৪৩১টি। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে এক কোটি ৪৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৮৮ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্লাটফর্ম মুক্তপাঠ-এ অনলাইনে সেবা দেওয়ার জন্য মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ১৬ হাজার ৪১৪ জনে। এ ছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।

বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ ছাড়াল

ওদিকে বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের ১ কোটি ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। গত সাত মাসে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসরাটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ। শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে এমনটি জানানো হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ইনফ্লুয়েঞ্জায় প্রতি বছর যে পরিমাণ মানুষ আক্রান্ত হয় এর থেকে করোনায় দ্বিগুণ রোগী আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা প্রকোপ দেখা দেয়ার পরই লকডাউন জারি করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। তবে অর্থনীতির কথা চিন্তা করে বেশিরভাগ দেশই লকডাউন শিথিল করেছে। এরই মধ্যে কিছু দেশে আবার নতুন করে দেখা যাচ্ছে করোনার প্রকোপ। আর এই প্রকোপ ঠেকাতে বাধ্য হয়ে আবারো লকডাউনের দিকে এগোচ্ছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২১ সালেও হয়তো এভাবেই সরকারদের চলা লাগতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করেছে। বিশ্বে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যার দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৫৮৮ জন। মারা গেছেন ১ লাখ ৩১ হাজার ১০১ জন। বিশ্বের সর্বমোট করোনার মৃত্যুর চার ভাগের এক ভাগই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়েছে। এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে ভারতে। দেশটিতে ৬ লাখ ২৫ হাজারের বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।

কিছু দেশে করোনা টেস্ট না করাতে পারায় আক্রান্তের সঠিক সংখা জানা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি তথ্য করোনা মহামারি পরিস্থিতির পুরো চিত্র তুলে ধরতে পারছে না।

বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ২০ হাজারের মতো মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। প্রতিবছর ইনফ্লুয়েঞ্জাতেও বিশ্বে এ পরিমাণ মানুষ মারা যান বলে জানায় রয়টার্স। এ বছরের ১০ জানুয়ারি করোনা ভাইরাস নিয়ে চীনের উহান থেকে প্রথম খবর পাওয়া যায়। পরে ভাইরাসটি ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here