চীন ট্রাম্পের জয় চায় !

0
102
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি সংগৃহীত

বাংলা খবর ডেস্ক:
বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ইস্যুর যেন অভাব নেই! দক্ষিণ চীন সাগর, বাণিজ্যযুদ্ধ, উইঘুর মুসলিম, হংকং ইস্যু তো আগেই ছিল। নতুন করে করোনা ভাইরাস এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনও যুক্ত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ক্রমেই সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। দ্য ডিপ্লোম্যাট বলছে, ইতিমধ্যে দুই ক্ষমতাবান দেশের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। আর ইউরেশিয়া গ্রুপ বলছে, ওয়াশিংটন-বেইজিং সম্পর্ক অন্ধকার অধ্যায়ের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এত কিছুর পরও চীন চায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ফের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই আসুক!

সম্পর্ক অন্ধকার অধ্যায়ে!

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের দ্বিতীয় বার্ষিকী গেল গত ৬ জুলাই। ২০১৮ সালের এদিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন চীনা পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছিল যার আর্থিক মূল্য ছিল ৩৪ বিলিয়ন ডলার। এরপর পালটাপালটি শুল্ক আরোপ। রাজনৈতিক ঝুঁকিবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই দেশ এমন ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে বিরোধের অনেক ইস্যুই তাদের হাতে আছে। পলিটিক্যাল রিস্ক কনসালট্যান্সি ইউরেশিয়া গ্রুপের যুক্তরাষ্ট্রবিষয়ক পরিচালক টড মেরিয়ানোর মতে, ‘দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব বৃদ্ধির অনেক উপায় আছে। এখন সেটা দেখাও যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের অন্ধকার অধ্যায়ের দিকে যাচ্ছি আমরা। প্রযুক্তি কোম্পানি বা বিভিন্ন অ্যাপের দিকেও দ্বন্দ্ব শুরু হচ্ছে।’ করোনা ভাইরাস ইস্যু এবং ভারত-চীন সীমান্ত নিয়েও দুই দেশের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়েছে। চীনের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন বলে জাতিসংঘ মহাসচিবকে চিঠিতে জানিয়েছেন।

তার পরও ট্রাম্পকে চায় চীন!

‘রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন’ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চীনের বিরোধী মনোভাব তার নির্বাচনী প্রচারণাতেই দেখা গিয়েছিল। ক্ষমতায় এসে তাই তিনি একের পর এক বেইজিংবিরোধী নীতি গ্রহণ করছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে যেতে চান। তিনি চীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে ভোটারদের আকৃষ্ট করছেন। চলতি বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা। সেন্টার ফর স্ট্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র উপদেষ্টা উইলিয়াম রেইনচ বলেন, ট্রাম্প যদি আবার ক্ষমতায় আসেন তাহলে ওয়াশিংটনের বেইজিংবিরোধী মনোভাব আরো বাড়বে।

উইলিয়াম রেইনচের মতে, তার পরও চীন চায় ডেমোক্র্যাটের জো বাইডেনকে হারিয়ে ট্রাম্পই আবার যুক্তরাষ্ট্রের সিংহাসনে বসুক। রেইনচ বলেন, ‘আমি চীনে ব্যবসা-বাণিজ্য করেন এমন অনেক আমেরিকানকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি। তারাও একই মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ট্রাম্পের জয় চান। কারণ চীনের থিংক ট্যাংকরা মনে করেন, ট্রাম্প যতটা না বেইজিংয়ের ক্ষতি করছেন তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করছেন পশ্চিমা মিত্রদের। এটা শেষ পর্যন্ত তাদের জন্য মঙ্গলজনকই হবে। ২০১৭ সালে অফিসে বসার পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি প্রয়োগ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছেন। ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে গিয়ে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো মিত্রদের ক্ষুব্ধ করেছেন। ন্যাটো নিয়েও ট্রাম্পের পদক্ষেপ ভালো নয়। রেইনচ বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মিত্রদের মধ্যে বিরক্তি সৃষ্টি করছেন, বন্ধু হারাচ্ছেন। এতে ইউরোপসহ বাকি বিশ্বে চীনের বাজার উন্মুক্ত হচ্ছে যা আগে কখনো হয়নি।

—সিএনবিসি ও দ্য ডিপ্লোম্যাট

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here