নিউ ইয়র্কে ফাহিম সালেহ হত্যার ঘটনায় আটক এক

0
218

বাংলা খবর ডেস্ক:
রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাও-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহকে হত্যার ঘটনায় একজনকে আটক করেছে মার্কিন পুলিশ। বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে পিক্স ইলেভেন। তবে আটক ব্যক্তিকে এখনো গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। তদন্তকারী দলগুলো এর আগে জানিয়েছিল, পেশাদার খুনির হাতেই খুন হয়েছেন ফাহিম সালেহ। নিউ ইয়র্কে ফাহিম সালেহর মরদেহের পরীক্ষক জানিয়েছেন, ঘাড়ে ও কাধে একাধিক ছুরিকাঘাতের মাধ্যমে ফাহিমকে হত্যা করা হয়।
এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে, খুনি কালো পোশাক ও কালো মাস্ক পরে ছিলেন। তিনি ফাহিম সালেহর সঙ্গেই লিফটে ওঠেন এবং তার অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করেন। তাকে আগে থেকেই ফলো করা হচ্ছিল বলে মনে করছে নিউ ইয়র্ক পুলিশ। নিউইয়র্ক পুলিশের তদন্তকারীরা ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি চালিয়ে আলামত সংগ্রহ করে নানান তথ্য দিচ্ছেন।

আশপাশের রাস্তা ও ভবনে যতো সিসি ক্যামেরা আছে, সেগুলোর ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও এনওয়াইপিডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আর তদন্ত কর্মকর্তাদের বক্তব্য, ফাহিমকে হত্যার পর টুকরো টুকরো করে মরদেহ সুটকেসে ভরে গুম করে ফেলার পরিকল্পনা ছিল খুনির। তবে খুনির কাজ শেষ হওয়ার আগেই ওই অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশের জন্য কেউ কলিং বেল বাজান। এতেই খুনি সবকিছু ফেলে ভবনের পেছনের দরজা ও সিঁড়ি ব্যবহার করে পালিয়ে যান। আপাতত ব্যবসায়িক কারণেই হত্যা বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে নাইজেরিয়ার শত্রুদের সন্দেহ করা হচ্ছে। মৃত্যুর আগে ফাহিমের বিরুদ্ধে নিউ জার্সির এক কারাকর্মীর করা মামলা চলমান ছিল।
সালেহর কাজিন প্রথম তার মরদেহ দেখতে পান এবং পুলিশকে জানান। এ নিয়ে বুধবার একটি বিবৃতি দিয়েছে সালেহর পরিবার। এতে তারা হত্যাকারীকে পিশাচ আখ্যা দেন। তারা তাদের শোকের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য সবার থেকে একাকিত্ব কামনা করেছেন।

ফাহিম সালেহকে হত্যার আগে বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয়:

ওদিকে প্রযুক্তি বিষয়ক মিলিয়নিয়ার ফাহিম সালেহকে প্রথমে বৈদ্যুতিক শক (টেসার) দেয়া হয়। এতে তিনি মেঝেতে পড়ে যান। এরপরই অসংখ্যবার কোপ দেয়া হয় তাকে। ময়না তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। ফাহিম সালেহ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তিনি বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পাঠাও-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। গত সোমবার নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটানে তার বিলাসবহুল এপার্টমেন্টে নৃশংসভাবে খুন করা হয় তাকে।

খুনি শুধু তাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। ঘাড় থেকে তার মাথা বিচ্ছিন্ন করে। কাঁধ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দুই হাত। হাঁটুর নিচের দু’পায়ের অংশ কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এসব করতে খুনি ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক করাত। এসবই ঘটে তার এপার্টমেন্টের ভিতরে। ৩৩ বছর বয়সী ফাহিম সালেহ ২২ লাখ ৫০ হাজার ডলারে কিনেছিলেন ম্যানহাটানোর লোয়ার ইস্ট সাইডের একটি এপার্টমেন্ট। গত সোমবার দুপুরের পর পর তিনি সেই বাসায় ফেরেন। এ সময় নিনজা স্টাইলের পোশাক পরা খুনি তার পিছু নেয়। তার সঙ্গেই লিফটে আরোহণ করে। এ সময় খুনির পরনে ছিল একটি স্যুট, টাই, মাস্ক। সঙ্গে ছিল বড় একটি ব্যাগ। লিফটের দরজা আর ফাহিম সালেহর দরজা মুখোমুখি। ফলে লিফট খুলে সালেহ বেরিয়ে আসেন। তখন তার সঙ্গে খুনিকে কথা বলতে দেখা গেছে। এপার্টমেন্টের দরজা খুলতেই তার ওপর টেসার নিক্ষেপ করে খুনি। এতে সালেহ মেঝেতে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাকে খুনি টেনে নিয়ে যায় তার এপার্টমেন্টে। সেখানেই নৃশংসতা চরিতার্থ করে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সালেহ ছিলেন শর্টস ও একটি টি-শার্ট পরা। তিনি মাস্ক পরা ওই ব্যক্তির দিকে সন্দেহের চোখে তাকিয়েছিলেন। তারপরও তিনি কেন ওই লিফট থেকে নামলেন না বা এলার্ম বাজালেন না, তা তদন্ত করে দেখছে কর্তৃপক্ষ। রিপোর্টে বলা হয়েছে, লিফট সপ্তম তলায় গিয়ে খোলার পর সালেহ ও ওই ব্যক্তির মধ্যে কিছু কথা বিনিময় হয়েছে। এর পরপরই সালেহ তার এপার্টমেন্টে পা রাখেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মেঝেতে পড়ে যান। এ সময় সালেহ ও তার খুনির মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। কিন্তু লিফটের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারপরে কি ঘটেছে তা আর দেখা যায় নি। ফলে ময়না তদন্তে বলা হয়েছে, খুনি স্টান গান ব্যবহার করে সালেহকে অচেতন করেছে। এরপর বুকের ওপর বহুবার কোপ মেরেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here