অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ আর নেই

0
91

বাংলা খবর ডেস্ক:
দেশবরেণ্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

ভোররাতে স্ট্রোক করার পর ল্যাবএইড হাসপাতালে নেওয়া হলে পৌনে ছয়টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অধ্যাপক এমাজউদ্দীন। তার লাশ এখনও ল্যাবএইড হাসপাতালে রয়েছে।

প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ ১৯৩২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন মালদাহ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ভারতের কিছু অংশ) জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের ‘গোহাল বাড়ি’ এলাকায় পরিবারসহ দীর্ঘদিন বসবাস করেন প্রফেসর এমাজউদ্দীন। তিনি শিবগঞ্জের আদিনা সরকারি ফজলুল হক কলেজ ও রাজশাহী কলেজের প্রাক্তণ ছাত্র।

মহান ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, ১৯৫২ এর পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছাত্রনেতা হিসেবে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ কারাবরণও করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং উপাচার্য (১ নভেম্বর ১৯৯২-৩১ আগস্ট ১৯৯৬) হিসেবে দীর্ঘদিন সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা) ভিসি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তুলনামূলক রাজনীতি, প্রশাসন-ব্যবস্থা, বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক বাহিনী সম্পর্কে গবেষণা করেছেন। এসব ক্ষেত্রে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় তিনি বিশেষজ্ঞ হিসেবেও প্রখ্যাত। তার লিখিত গ্রন্থের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। দেশ বিদেশের খ্যাতনামা জার্নালে তার প্রকাশিত গবেষণামূলক প্রবন্ধের সংখ্যা শতাধিক।

শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান এবং সৃজনশীল লেখার জন্যে তিনি দেশ ও বিদেশে বিশেষভাবে সম্মানিত হয়েছেন। সৃষ্টিশীল গবেষণা ও আলেখ্য রচনার জন্য ‘মহাকাল কৃষ্টি চিন্তা সংঘ স্বর্ণপদক’, জাতীয় সাহিত্য সংসদ স্বর্ণপদক, জিয়া সাংস্কৃতিক স্বর্ণপদক অর্জন করেন। শিক্ষাক্ষেত্রে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৯২ সালে একুশে পদক, মাইকেল মধুসুদন দত্ত গোল্ড মডেল, শেরে বাংলা স্মৃতি স্বর্ণপদক, ঢাকা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ যুব ফ্রন্ট গোল্ড মেডেল, রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়ন ফোরাম স্বর্ণপদকসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বহু পুরস্কার-সম্মাননা অর্জন করেন।

তিনি বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিএনপিকে বিভিন্ন সময় গঠনমূলক পরামর্শ দিয়েছেন। বিএনপিও বিভিন্ন ইস্যুতে তার মতামতকে গুরুত্ব দেয়া হতো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here