দেশে করোনায় মৃত্যু বেড়ে ৩১৫৪

0
112

বাংলা খবর ডেস্ক:
বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরো ২২ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১.৩১ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২২ জনের মধ্যে পুরুষ ১৭ এবং নারী পাঁচজন। মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৬৭৯ এবং নারী ৬৭৫ জন।

এনিয়ে মোট মারা গেলেন ৩১৫৪ জন।

এছাড়া একই সময়ে আরও ৮৮৬ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২,৪০,৭৪৬ জন।

আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

অনলাইন বুলেটিনে বলা হয়,করোনা শনাক্তের জন্য গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩ হাজার ২১৩টি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে আগের নমুনাসহ ৩ হাজার ৬৮৪টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ লাখ ৮৯ হাজার ২৯৫টি।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৪.০৫ শতাংশ। মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০.২৪ শতাংশ।

এদিকে, করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৫৮৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৩৯ জন। সুস্থতার হার ৫৬.৮৪ শতাংশ।

দেশে নভেল করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। আর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

বিশ্ব পরিস্থিতি:

সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৮০ লাখ ছাড়িয়েছে। আজ রবিবার (২ আগস্ট) সকালে ওয়ার্ল্ডোমিটারের দেওয়া হিসাবে এ তথ্য জানা গেছে।

ওয়ার্ল্ডোমিটারস’র তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় তিন লাখের মতো মানুষের দেহে নতুন করে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে। শীর্ষস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪৮ লাখ। দেশটিতে কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত প্রায় ১ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ ইতোমধ্যে মারা গেছে। ব্রাজিলে আক্রান্ত ২৭ লাখের বেশি মানুষের মধ্যে ৯৩ হাজার ৬১৬ জন আর বেঁচে নেই। প্রতিবেশী ভারতেও আক্রান্ত সাড়ে ১৭ লাখ; প্রাণহানি ৩৭ হাজার ৪০৩।

যুক্তরাষ্ট্রে কেবল জুলাই মাসেই প্রায় ২৫ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। এই সময়ে ১৮ অঙ্গরাজ্যে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। নতুন করে প্রায় ১৮ লাখ মানুষ শনাক্ত হয়েছেন; যা গত মাসের তুলনায় বেড়েছে ৬৬ শতাংশ। এছাড়া জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মৃতের সংখ্যা ১৯ শতাংশ বেড়েছে।

কেবল আক্রান্ত নয়; জুন কিংবা জুলাইয়ের শুরুতেও বিশ্বে করোনায় দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজারের কম। কিন্তু জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে ধীরে ধীরে এই সংখ্যাটাও বাড়তে শুরু করেছে। ডব্লিউএইচও এর হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী এখন প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার করে কোভিড-১৯ রোগী মারা যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে।

দেশে দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জারি কঠোর বিধি-নিষেধগুলো প্রত্যাহার কিংবা শিথিল হওয়ার পর থেকে ভাইরাসটির বিস্তার ছড়াচ্ছে দ্রুত। একের পর এক ভাঙ্গছে দৈনিক আক্রান্তের রেকর্ড। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) জানিয়েছে, গত শুক্রবার নতুন করে ২ লাখ ৯২ হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছে বিশ্বজুড়ে।

করোনা মহামারি দীর্ঘদিন ধরেই চলবে বলে সতর্ক করে দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, লকডাউন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কারণে বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ বাড়ছে। ভাইরাসটি প্রতিরোধে প্রত্যেক দেশকে তার নিজের সীমানার মধ্যে আরও কঠোর হয়ে সংক্রমণ রোধে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।

ডব্লিউএইচও এর প্রাত্যহিক প্রতিবেদনে, বিশ্বে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা রোগী শনাক্তের খবর দিয়ে বলা হচ্ছে, এখন বেশিরভাগ রোগীর সংক্রমণ ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকায়। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুতে দীর্ঘদিন ধরেই শীর্ষে রয়েছে এসব দেশ।

ভারতে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্তের নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। টানা কয়েকদিন ধরে দেশটিতে অর্ধ লক্ষাধিক রোগী শনাক্ত হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় আটশো করে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে দেশটিতে। তবে ঊর্ধ্বমুখী এই সংক্রমণের মধ্যে ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে জারি জারি বিধিনিষেধগুলো প্রত্যাহার কিংবা শিথিল হচ্ছেই।

গতকাল শনিবার নতুন করে আরো ১০ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িছেছে ৫ লাখ ৩ হাজার ২৯০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে আট হাজার ১৫৩ জনের।

আফ্রিকা মহাদেশে করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা। মহাদেশটিতে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের অর্ধেকই দক্ষিণ আফ্রিকায়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, রাশিয়া আর ভারতের পর বিশ্বে পঞ্চম সর্বোচ্চ করোনা রোগী রয়েছে দেশটিতে।

করোনার প্রকোপ দীর্ঘমেয়াদি হবে :

করোনাভাইরাসের প্রকোপ সম্ভবত দীর্ঘদিন ধরেই চলবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) শনিবার হুঁশিয়ার করে এ কথা বলেছে।
আন্তর্জাতিক সতর্কতা জারির ছয়মাস পরে সংকট পূনর্মূল্যায়নে সংস্থার জরুরি কমিটির বৈঠকের পর ডব্লিওএইচও এ কথা বলেছে।
সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কমিটি কোভিড-১৯ মহামারির সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।

করোনা সংকট শুরুর পর কমিটি এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো বৈঠকে বসে। গত ৩০ জানুয়ারি ডব্লিওএইচও তার সর্বোচ্চ সতর্কতা মাত্রা পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি অব ইন্টারন্যাশনাল কনসার্ন(পিএইচইআইসি) ঘোষণা করে। এ ঘোষণার ছয়মাস পর জরুরি কমিটি শুক্রবার পরিস্থিতি পুনর্মূল্যয়ানে বৈঠকে বসে।
বৈঠকের পর কমিটি বলছে, কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক ঝুঁকির স্তর অনেক বেশি হবে।

সংস্থা প্রধান টেডরস আধানম গেব্রিয়াসিস বলেছেন, মহামারি করোনার প্রভাব হবে দীর্ঘমেয়াদি।
তিনি বলেন, ছয় মাস আগে যখন পিএইচইআইসি ঘোষণা করি তখন বিশ্বজুড়ে করোনায় সংক্রমিত লোকের সংখ্যা ১ শ’রও কম ছিল এবং চীনের বাইরে কোনো লোক মারা যায়নি। এখন এটি শতাব্দীর সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য সঙ্কট। এর প্রভাব দশকের পর দশক ধরে চলবে।

এ প্রেক্ষিতে সংস্থাটি বৈশ্বিক সংহতির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
বিশ্বে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে অন্তত এক কোটি ৭৬ লাখ লোক। মারা গেছে অন্তত ছয় লাখ ৮০ হাজার লোক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here