দর্পণ কবীর:
৮ আগষ্ট (শনিবার) সন্ধ্যা ৬টা থেকে মধ্যরাত ১টা অব্দি ছিলাম আটলান্টিক মহাসাগরে। ২১ জনের চিত্ত-বিলাস ভ্রমণ ছিল। চাঁদ উঠেছিল রাতের পেখম ছড়িয়ে। ততক্ষণে আমরা উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে আটলান্টিক সাগরে এক প্রান্তে মাছ শিকার করছি। প্রথমে মাছের দেখা নেই। ফের প্রান্ত বদল। একটু দেখা পাওয়া গেল। আবারো স্থান বদল হলে মাছ ধরায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। টপাটপ মাছ ধরছিলাম আমরা। সবগুলো পর্গি মাছ (তেলাপিয়া জাতীয় মাছ)। এ নিয়ে উৎসাহ আর আনন্দে মাতোয়ারা ছিলাম।
বেশ কয়েকজন প্রথম মাছ শিকারে গিয়েছিলেন, তাও আবার রাতে। প্রথম অভিজ্ঞতায় তাদের উচ্ছ্বাস ছিল অনেক। চুইয়ে পড়া জোছনা, মাঝেমাঝে মেঘের আড়ালে ঢেকে পড়া চাঁদের লুকোচুরি খেলা আর আঁধারের স্বরূপ ধরে রাখা অতল জলের নীরব গান যেন আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল। এই স্পর্শ এতোটা মোহনীয় যে, আবিষ্টতায় কয়েকজন গলা ছেড়ে পুরানো দিনের গান গাইতে লাগলো। কণ্ঠশিল্পী না হয়েও সুরের সঙ্গে কসরত করে জল-জোছনার রাতকে অন্যরূপে এঁকে দিচ্ছিল তারা। গানে গানে গোপাল, শুভ, লিটন, নিপা, মিঠু..যেন হয়ে যান বাঁধনহারা অভিযাত্রী।
জাহাজের পাশে দাঁড়িয়ে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকারীরা পর্গি মাছ ধরে খুশি। সবশেষে মধ্যরাত আরো বর্ণিল হয়ে উঠে পূর্ণিমার মদিরতাময় আলোতে। সেই আলোয় আমরা বাড়িমুখি হই-গানের সুরে-বেসুরা কণ্ঠধারীদের সমবেত প্রচেষ্টায়। বলে রাখছি-মাছ ধরা হয়েছে প্রচুর। আমরা অনেকে মাছ নিয়ে ফিরেছি। অনেকে তা ফেলে দিয়েছেন। মাছ শিকারের চারটি পর্বে পুরস্কার জিতে নিয়েছেন সাংবাদিক মিথুন কামাল, শওকত ওসমান রচি, কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন ও সীমা সুস্মিতা। যারা পুরস্কার পাননি, তারা আনন্দ-স্মৃতি নিয়ে ফিরেছেন।
লেখক: সাংবাদিক, সাহিত্যিক