বাংলা খবর ডেস্ক:
চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টিকে থাকা দলগুলোর ভেতরে সর্বোচ্চ শিরোপা জয় হোক কিংবা সবচেয়ে বেশি কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার কীর্তি, দুদিক থেকেই বার্সেলোনা আর বায়ার্ন মিউনিখ আছে সমতায়। এমন দুই দল যখন আজ কোয়ার্টার ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হবে, তখন দুই দলের সাম্যাবস্থায় থাকার কথা থাকলেও সাম্প্রতিক ফর্ম বিচারে পরিষ্কার ফেবারিট বায়ার্ন। আগুনে ফর্মে থাকা জার্মান দলটির বিপক্ষে তাই সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাই অপেক্ষা করছে লিওনেল মেসিদের জন্য।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নকআউট পর্বে দুই দলের সবগুলো সাক্ষাতই হয়েছে শেষ এক যুগে। ২০০৮-০৯ মৌসুমে পেপ গার্দিওলার বার্সেলোনা দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানের অনায়াস জয়ই পেয়েছিল। ২০১২-১৩ মৌসুমে জয়ী দলটা ছিল বায়ার্ন মিউনিখ। তাও স্বর্ণসময়ের বার্সাকে দুই লেগ মিলিয়ে ৭-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে! তার ‘শোধ’ টা ২০১৪-১৫ মৌসুমে তুলেছিল কাতালানরা, ৫-৩ ব্যবধানের সামগ্রিক ফলাফলে।
তবে সেসব দ্বৈরথের সঙ্গে আজকের ম্যাচের পার্থক্য, আগের লড়াইগুলোর আগে কখনোই ‘পরিষ্কার আন্ডারডগ’ তকমা জোটেনি বার্সার কপালে; যেটা জুটছে এবার। প্রতিপক্ষের সাবেকরা কোনোরকম রাখঢাক ছাড়াই বার্সাকে যে তকমা দিচ্ছেন শেষ কিছুদিনে।
মৌসুম জুড়ে তথৈবচ পারফরম্যান্সের কারণে লিগ আর কোপা দেলরে জেতার সুযোগ হারিয়েছে কাতালানরা। আজ হেরে গেলে ২০০৭-০৮ মৌসুমের পর প্রথম শিরোপাহীন থাকাও নিশ্চিত হয়ে যাবে সেতিয়েনের শিষ্যদের।
নিজেদের অধারাবাহিকতার সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রতিপক্ষেরও ফর্ম। লকডাউনের পর বায়ার্ন মিউনিখের হার নেই একটি ম্যাচেও, জিতেছে সবকটিতেই। ‘ফাইনাল এইট’-এ আসার আগেই তো শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে চেলসিকে উড়িয়ে দিয়েছে ৪-১ ব্যবধানে! দলের প্রধান অস্ত্র রবার্ট লেভান্ডোভস্কিও আছেন আগুনে ফর্মে, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চলতি মৌসুমে করেছেন ৫৪ গোল! এমন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হওয়ার আগে ফরোয়ার্ড আন্তনিও গ্রিজমান জানালেন, ব্যাভারিয়ানদের বিপক্ষে আশাবাদী বার্সা। বললেন, ‘বায়ার্ন দারুণ খেলছে, বেশ আত্মবিশ্বাসীও। তবে তাদের হারানোর জন্য অস্ত্র আমাদের আছে।’
ফরোয়ার্ড উসমান দেম্বেলে চোট কাটিয়ে ফিরেছেন স্কোয়াডে, ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিপক্ষের ক্লান্ত পায়ের সুযোগ নিয়ে হয়তো কোচ সেতিয়েনের তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড, লিওনেল মেসি তো থাকবেনই!
ওদিকে বায়ার্ন আছে শেষ কয়েক বছরে নিজেদের সেরা ছন্দে। থিয়াগো আলকান্তারা আর জশুয়া কিমিখের মাধ্যমে মাঝমাঠে বলের দখল ধরে ফুলব্যাকদের সাহায্য নিয়ে প্রতিপক্ষ রক্ষণে ত্রাস ছড়ানোর কৌশলে খেলিয়ে কোচ হ্যান্সি ফ্লিক পেছনে ফেলেছেন মৌসুম শুরুর দুঃসময়কে। তাতেই এসেছে ঘরোয়া দুই শিরোপা।
ইতিহাসে দ্বিতীয় দল হিসেবে দ্বিতীয় ট্রেবলের দুয়ারে থাকা বায়ার্নকে রুখতে তাই বার্সাকে দিতে হবে কঠিন এক পরীক্ষাই।