আরও ৭ দিন সময় চায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি

0
106
ফাইল ছবি

বাংলা খবর ডেস্ক:
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় আরও সাত দিন বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে এই আবেদন করা হয়েছে।

এর আগে রোববার বিকালে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্প ইনচার্জ কার্যালয়ে গণশুনানি শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তদন্ত কার্যক্রম প্রায় শেষ দিকে এসেছে। সরকার নির্ধারিত সময় ২৩ আগস্টের মধ্যেই তারা প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন বলে আশা করছেন।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হন।

ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চার সদস্যের কমিটি গঠন করে। সেখানে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) একজন প্রতিনিধি এবং সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির একজন প্রতিনিধি।

গত ৩ আগস্ট তদন্ত কমিটি আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করে। সে সময় কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সরকার সাত কর্মদিবস নির্ধারণ করে দেয়। পরে আরও সাত কর্মদিবস মেয়াদ বাড়ানো হয়।

ওদিকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড শেষে পুলিশের চার সদস্যসহ সাতজনকে কক্সবাজারের আদালতে হাজির করেছে র‌্যাব। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারে র‌্যাব-১৫-এর কার্যালয় থেকে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। আসামিদের আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে। নতুন করে আর রিমান্ডের আবেদন করা হবে না বলে র‌্যাবের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে গত ১২ আগস্ট হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ সাত আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড মঞ্জুর করা আসামিরা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ।
দুই দিন পর ১৪ আগস্ট আসামিদের কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় র‌্যাব। কারাগার থেকে প্রথমে তাদের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে তাদের প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে তাদের র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি ও রামু থানায় একটি মামলা করে। এই মামলায় এ পর্যন্ত সাত পুলিশ সদস্য, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য ও টেকনাফ পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বিভিন্ন সময় প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন কক্সবাজারের আদালত।
আজ সাত আসামির রিমান্ড শেষ হয়েছে। বাকি ছয় আসামি বর্তমানে র‌্যাবের রিমান্ডে রয়েছেন। এঁরা হলেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত এবং কক্সবাজারে কর্মরত এপিবিএন-১৪-এর সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাহজাহান, কনস্টেবল রাজীব ও আবদুল্লাহ।
গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে নয়জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, এএসআই লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মোস্তফা ও এসআই টুটুল। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here