এবার ইসরাইলকে স্বীকৃতি বাহরাইনের

0
89

বাংলা খবর ডেস্ক:
চতুর্থ আরব ও দ্বিতীয় উপসাগরীয় দেশ হিসেবে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছে বাহরাইন। ইসরাইলের সঙ্গে সকল প্রকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে যাচ্ছে উপসাগরীয় দেশটি। স্থানীয় সময় শুক্রবার এমনটা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরাইলের চুক্তির এক মাসের মাথায় এ ঘোষণা এলো। চুক্তিটির তীব্র সমালোচনা করে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানান, এতে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
শুক্রবার এক টুইটে ট্রাম্প লিখেছেন, ৩০ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় আরব দেশ হিসেবে ইসরাইলের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছে বাহরাইন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইসরাইলকে বর্জন করে আসছে বেশিরভাগ আরব দেশ। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিবাদ না মিটে যাওয়ার আগে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবে না বলেই জানিয়ে আসছিল আরব নেতারা।

তবে গত মাসে এক আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপে ইসরাইলের সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তির ঘোষণা দেয় আমিরাত। চুক্তির বদলে ইসরাইল পরিকল্পিত পশ্চিম তীর অধিগ্রহণ স্থগিত করবে বলে জানায়। দুই দেশের মধ্যে চুক্তিটির মধ্যস্থতা করে ট্রাম্প প্রশাসন। ওই চুক্তির এক মাসের মাথায় একই ধারায় ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিতে রাজি হলো বাহরাইন। এই চুক্তির মধ্যস্থতাও করেছেন ট্রাম্প। এ নিয়ে মিসর, জর্ডান ও আমিরাতসহ মোট চারটি আরব দেশ ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিলো।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বাহরাইনের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে বলেন, আরেকটি আরব দেশের সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে যেতে পেরে তিনি উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, এটা শান্তির নতুন যুগ। শান্তির জন্য শান্তি। অর্থনীতির জন্য অর্থনীতি। আমরা বহু বছর ধরে শান্তিতে বিনিয়োগ করে আসছি। এখন শান্তি আমাদের ওপর বিনিয়োগ করবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইটে লিখেন, আরো একটি ঐতিহাসিক সাফল্য আজ! আমাদের দুই মহান বন্ধু ইসরাইল ও কিংডম অব বাহরাইন শান্তি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। টুইটারে নেতানিয়াহু ও বাহরাইনের বাদশাহ হামাদ বিন ইসা বিন সালমান আল-খলিফার সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতির কপি পোস্ট করেছেন ট্রাম্প। বিবৃতিতে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা আরো এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে এটা একটি ঐতিহাসিক সাফল্য। এতে করে অঞ্চলটিতে স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও অগ্রগতি বাড়বে।
অন্যান্য দেশের প্রতিক্রিয়া
বাহরাইন ও ইসরাইলের মধ্যকার চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে আরব আমিরাত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে চুক্তিটিকে ‘একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও ঐতিহাসিক অর্জন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। বলেছে, এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
তবে ফিলিস্তিনিরা চুক্তিটির তীব্র সমালোচনা করেছে। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাহরাইনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব বলেছে, চুক্তিটি ফিলিস্তিনি জনগণের জাতীয় অধিকারের বিশাল ক্ষতি করবে।
দীর্ঘ সময় ধরে আরব দেশগুলোর ইসরাইলের প্রতি একক মনোভাবের ওপর নির্ভরশীল ছিল ফিলিস্তিনিরা। ইসরাইলকে তাদের দখলীকৃত ভূখ- থেকে সরে যাওয়া ও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি নিয়ে আরব দেশগুলোর অবস্থান এক ছিল। তবে এক মাসের ব্যবধানে দু’টি আরব দেশ ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়ে সে অবস্থানে ফাটল ধরিয়েছে। এর আগে আমিরাত-ইসরাইল চুক্তিটিকে ‘পেছন থেকে ছুরি মারা’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা।
গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র দল হামাস নতুন চুক্তিটি নিয়ে বলেছে, এটা ফিলিস্তিনি দাবির ব্যাপক ক্ষতি করবে।
এদিকে, ইরানের পার্লামেন্ট ¯িপকারের আন্তর্জাতিক ইস্যু বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা হোসেইন আমির-আব্দুলল্লাহিয়ান বলেন, এটা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে প্রতারণা।
এই প্রতিবেদন লেখা অবধি সৌদি আরব কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here