বাংলা খবর ডেস্ক:
রাজধানীর বারিধারার ফ্রন্ট ডেস্ক বাংলাদেশ (এফডিবি) নামের একটি মানবসম্পদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ২১ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের খ্যাতনামা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে অর্থের বিনিময়ে মানবসম্পদ সরবরাহ করত। কিন্তু সেবার বিপরীতে নিয়মমাফিক ভ্যাট পরিশোধ করত না।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল ১০ আগস্ট বারিধারায় প্রতিষ্ঠানটির অফিসে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটার ও সংরক্ষিত বাণিজ্যিক কাগজপত্র জব্দ করে। পরে প্রাপ্ত তথ্যাদি যাচাই করে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া যায়।
ভ্যাট গোয়েন্দার তদন্তে দেখা যায়, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার সেবা বিক্রয় দেখানো হয়েছে। এর বিপরীতে তারা ভ্যাট দিয়েছে ২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
কিন্তু জব্দ করা কাগজপত্র অনুযায়ী, ফ্রন্ট ডেস্ক প্রকৃত সেবা বিক্রি করেছে ১২৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এই বিক্রির ওপর ভ্যাট দেয়ার কথা ১৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। মানবসম্পদ প্রতিষ্ঠানটি এই পাঁচ বছরে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ১৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
ভ্যাট আইন অনুসারে যথাসময়ে ভ্যাট না দেয়ায় এই ফাঁকির ওপর মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য হয়েছে, যার পরিমাণ ৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোট ২১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা আদায়যোগ্য।
ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, এনবিআরের আদেশ অনুযায়ী ‘মানবসম্পদ সরবরাহ বা ব্যবস্থাপনা’ প্রতিষ্ঠানের সেবার বিপরীতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধের বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছিল। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাভুক্ত হওয়ায় ভ্যাট ফাঁকির টাকা আদায় এবং ভ্যাট ফাঁকির অপরাধের ন্যায় নির্ণয়নের জন্য কমিশনারেটে চিঠি দেয়া হবে।
ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটি দেশের নামিদামি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই মানবসম্পদ সেবার গ্রাহক। এদের মধ্যে রয়েছে- লাফার্জ হোলসিম, বাংলালিংক, রবি, মাইক্রো বাংলাদেশ লি., ফিনটেক সলিউশন লি., বার্জার পেইন্টস লি., নোভার্টিস বাংলাদেশ লি., পিএন্ডজি বাংলাদেশ লি., অপসোনিন ফার্মা লি., জুটন বাংলাদেশ লি., এপিএম গ্লোবাল লজিস্টিক লি., এমএনএস বাংলাদেশ, ডাবর বাংলাদেশ, ডেল বাংলাদেশ, ব্যাক, অপো ফোন, বাংলা ক্যাট, ভিভো ফোন, কোকা-কোলা, আনোয়ার গ্রুপ, মেডলাইফ, নেসলে, ম্যারিকো, স্যামসাং, বিকাশ, কুমোদিনী, পাঠাও, পেপসিকো, কাজী এন্টারপ্রাইজ, শিওরক্যাশ, সিমেন্স প্রভৃতি।