সহজ হচ্ছে সিএমএসএমই খাতের ঋণ নীতিমালা

0
87

বাংলা খবর ডেস্ক:
সরকারঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজে কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (সিএমএসএমই) জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। অথচ সরকারি ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। এই হতাশাজনক পরিস্থিতি পরিবর্তনে এ খাতের ঋণ বিতরণ নীতিমালা সহজ করা হচ্ছে। এ জন্য সোনালী ব্যাংককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে সোনালী ব্যাংক ঋণ সহজীকরণের সুপারিশ পাঠাবে বাংলাদেশ ব্যাংকে। প্রয়োজনে ঋণ বিতরণের সময়সীমা বৃদ্ধি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিএমএসএমই খাতের প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সরকারি সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক, বিডিবিএল, কৃষি ব্যাংক এবং রাকাবের এমডি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘সিএমএসএমই খাত যাতে প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা দ্রুত পায় সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আমরা ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি। আশা করছি, সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বাড়বে।’

করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প চাঙ্গা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণে সরকারি ব্যাংকগুলোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। কিন্তু এর মধ্যে ব্যাংকগুলো (ছয়টি ব্যাংক) ঋণ বিতরণ করেছে ৯৬ কোটি দুই লাখ টাকা। সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। ব্যাংকটি তাদের লক্ষ্যমাত্রার ৮৪ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। এরপর রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। ব্যাংকটি ৬৮ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। আর অন্য ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। অথচ ক্ষতিগ্রস্ত বড় শিল্পে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার বেশির ভাগই পূরণ করেছে ব্যাংকগুলো। বড় শিল্পের তুলনায় সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণ ব্যবস্থায় হতাশা ব্যক্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

বৈঠকে ঋণ বিতরণ কম হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে নীতিমালার বিভিন্ন শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়। নীতিমালা সহজ করতে অর্থ মন্ত্রণালয় সোনালী ব্যাংককে দায়িত্ব দিয়েছে। বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংক আগামী সাত দিনের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সব ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে ঋণ বিতরণের নীতিমালা সহজ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রস্তাব পাঠাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠাবে। পরে সহজ নীতিমালার আওতায় ব্যাংকগুলো দ্রুত ঋণ বিতরণ করবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, সিএমএসএমই খাত যাতে প্রণোদনা প্যাকেজের শতভাগ সুবিধা পায় সে জন্য ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থাগুলোকেও ঋণ বিতরণে ব্যবহার করা হবে। বৈঠকে ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, ব্যাংকগুলো এসএমই বা ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের ঋণ বিতরণ করবে। আর কুটির ও অতি ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ বিতরণ করবে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনসহ (পিকেএসফ) অন্য সংস্থাগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সিএমএসএমই খাত যাতে যথাযথভাবে ঋণ পায় সে জন্য বিষয়টিতে মনিটরিং আরো জোরদার করা হবে। প্রয়োজনে ঋণ বিতরণের সময়সীমা বাড়াবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here