ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডে মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদন: মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর

0
87

বাংলা খবর ডেস্ক:
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে। এ সংক্রান্ত সংশোধিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

আজ সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। কিন্তু দেশে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনার পর ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবিতে শাহবাগ, মতিঝিলসহ রাজধানীর কয়েকটি স্থানে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্দোলন করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানেও একই দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ধর্ষণের শাস্তি বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়।

কাল থেকেই ধর্ষণের নতুন আইন কার্যকর :

ওদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এ আইন কার্যকর করা হবে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আগামীকাল এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে। অর্থাৎ কাল থেকে এটি আইনে পরিণত হবে। এর আগে এটির আইনি যাচাই (ভেটিং) হবে।

‘যেহেতু সংসদ অধিবেশন আপাতত চলমান নেই, তাই সরকার সংশোধিত আইনটি একটি অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

এই মুহূর্তে জাতীয় সংসদের অধিবেশন না থাকায় রাষ্ট্রপতি এটিকে অধ্যাদেশ আকারে জারি করবেন বলে আইন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।

মন্ত্রী জানান, বিদ্যমান আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন আছে। সেটিকে এখন মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনী প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হয়। এর ফলে বিদ্যমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় সংশোধনী আনা হবে।

সম্প্রতি নোয়াখালীতে এক নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে রাজধানীসহ দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের ঝড় উঠে। মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চলছে গত ৭ দিন ধরে।

এসব কর্মসূচি থেকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ডের’ দাবি উঠে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার আইন পরিবর্তনের এই পদক্ষেপ নিল।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি এসেছে, তাই সরকার তা বিবেচনায় নিয়েছে।

ধর্ষণ-সহিংসতা বন্ধ করতে হলে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে – কাদের

নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ বন্ধ করতে হলে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (১২ অক্টোবর) সচিবালয়ে সেতু মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে ভারতের নতুন হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধানের বিষয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সিস্টেম করেছেন, যার অ্যাজেন্ডা নেই তাদের মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডাকা হয় না। আমারও আজ কোনো অ্যাজেন্ডা ছিল না। তবে ধর্ষণের এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজে উদ্যোগ নিয়েছেন। আমার মনে হয়, মানুষের মনের ভাষা প্রধানমন্ত্রী বোঝেন। এটি এখন জনদাবিতে পরিণত হয়েছে। কাজেই তাদের এই দাবিকে অবশ্যই আমরা স্বীকৃতি দেব। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত হলে এদের মধ্যে একটি ভীতিও থাকবে। যেভাবে এটি বাড়ছে, নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ বন্ধ করতে হলে এ ধরনের কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here