আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন ট্রাম্প-বাইডেন

0
89

বাংলা খবর ডেস্ক:
আজকের দিন নিয়ে বাকি আর ৫ দিন। এরপরেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রচারণাও শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এ সময়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় শিবিরের প্রার্থী ও প্রচারণা টিম আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। এবারের করোনা ভাইরাস নিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের মধ্যে চলছে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ। করোনা ভাইরাস সংক্রমণকে কেন্দ্র করে দেয়া লকডাউনের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি বিভিন্ন রাজ্যকে লকডাউন পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছেন। জবাবে জো বাইডেন বলেছেন, একটি সুইচ টিপেই করোনা ভাইরাস মহামারিকে থামিয়ে দেয়া যাবে না।

তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন ট্রাম্প- এমন অভিযোগও তুলেছেন বাইডেন। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি লিখেছে, ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যগুলোতে ঝটিকা নির্বাচনী জনসভা করছেন দুই প্রার্থীই। তবে মুখে মাস্ক পরা বাধ্যতামুলক করা নিয়ে উপহাস করেছেন ট্রাম্প। জবাবে ট্রাম্পকে ধুয়ে দিয়েছেন জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, যুুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। এই মহামারিতে যারা মারা গেছেন তাদের প্রতি অবমাননা করেছেন ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এখন একেবারে মার্কিনিদের দ্বোরগোড়ায় হাজির হয়ে নক করছে। আর মাত্র ৫ দিন পরেই ৩রা নভেম্বর সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ সময়ে জাতীয় পর্যায়ের জরিপে অনেকটা এগিয়ে আছেন জো বাইডেন। কিন্তু ব্যাটলগ্রাউন্ড বা সুইংস্টেটগুলোতে দু’জনের জনপ্রিয়তার পার্থক্য অল্প। এ জন্য দুই শিবিরেই চিন্তার ভাজ পড়েছে। তারা জোর দিয়েছেন এসব রাজ্যের প্রচারণায়। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন আগাম ভোট দিয়ে ফেলেছেন। কমপক্ষে সাড়ে সাত কোটি মার্কিনি আগাম ভোট দিয়েছেন। সামনের দিনগুলোতে তা আরো বৃদ্ধি পেয়ে নতুন এক রেকর্ড স্থাপন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। একশত বছরের মধ্যে এত বিপুল পরিমাণ মানুষ আগাম ভোট দিতে যাননি। এবার আগাম ভোট দিতে গিয়েছেন যারা তার মধ্যে প্রায় ৫ কোটি মানুষ ভোট দিয়েছেন পোস্টাল মাধ্যমে।
ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯টি রাজ্যে করোনায় মৃত্যু ক্রমেই বাড়ছে। দিনে প্রায় ৮০০ মানুষ মারা যাচ্ছেন। এ ছাড়া বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দ্রুত গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। বুধবার বৈশ্বিক শেয়ার মার্কেটে বড় পতন দেখা গিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে করোনা আতঙ্কের কারণে এমনটা হয়েছে বলে মনে করা হয়। করোনার প্রথম ধাক্কার পর যে অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠছিল, তাতে আবার বড় ধাক্কা লাগবে, এমন আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে থাকেন। এদিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই বড় প্রার্থীর মধ্যেও তীক্ষè কটাক্ষ লক্ষ্য করা গেছে। এদিন দেলাওয়ার রাজ্যের উইলমিংটনে প্রচারণা সভায় বক্তব্য রাখেন জো বাইডেন। তিনি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যথার্থ ব্যবস্থা নেয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেন। ডেমোক্রেটরা বলছেন, জো বাইডেন মিথ্যে প্রতিশ্রতি দেন না। তিনি বলেননি সুইচ টিপে করোনা মহামারি বন্ধ করে দেবেন। দ্বিতীয় লকডাউনের বিষয় উড়িয়ে দেননি বাইডেন। তিনি এর পরিবর্তে সবাইকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে চলার আহ্বান জানান। বাইডেন বলেন, যদি আমি বিজয়ী হই, তাহলে এই করোনা মহামারির ইতি ঘটাতে আমাদেরকে বহু কঠোর কাজ করতে হবে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, প্রথম দিন থেকেই আমরা সঠিক কাজটিই করবো। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে করা ওবামাকেয়ার নামের স্বাস্থ্যব্যবস্থা বাতিলে যে ব্যবস্থা নিয়েছেন ট্রাম্প, তিনি তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আমরা একজন প্রেসিডেন্টকে আরো চারটি বছর সময় দিতে সক্ষম নই। তিনি এই সময়কে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা কেড়ে নিতে ব্যবহার করবেন। এমনকি তার নিজের তো কোনো স্বাস্থ্যসেবামুলক পরিকল্পনাও নেই।

ওদিকে অ্যারিজোনায় নির্বাচনী সভা করেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ভোটারদের সতর্ক করেছেন এই বলে যে, বাইডেন যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে আরো লকডাউন আসবে। এতে মার্কিনিদের অর্থনীতি আরো দুর্দশায় পড়বে। তার ভাষায়, আপনারা যদি জো বাইডেনকে ভোট দেন তাহলে তার অর্থ হবে- কোনো শিশু স্কুলে যাবে না, কোনো অভিভাবকত্ব থাকবে না, কোনো বিয়েশাদি হবে না, কোনো থ্যাংকগিভিং থাকবে না, কোনো বড়দিন থাকবে না এমনকি ৪ঠা জুলাই একত্রিত হওয়ার বিষয় থাকবে না। তবে আপনারা যদি তাকে ভোট না দেন, তাহলে আপনাদের সামনে থাকবে একটি বিস্ময়কর জীবন। এই র‌্যালিতে তেমন সামাজিক দূরত্ব ছিল না। এদিনই সামাজিক দূরত্ব মানার জন্য ডেমোক্রেটদের মাস্ক পরা নিয়ে উপহাস করেন ট্রাম্প। বুলহেড সিটিতে সমর্থকদের এক সভায় ট্রাম্প উল্লেখ করেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গাভিন নিউসমের একটি টুইট। তাতে তিনি বলেছিলেন, রেস্তোরাঁয় যখন খাবার খেতে যাবেন, তখন আপনাকে খাবারের ওপর প্রতিটি কামড়ের আগে মাস্ক থাকতে হবে। সে কথাই উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, খাবারের সময় প্রতি কামড়ের মধ্যবর্তী সময়ে মাস্ক পরুন। তিনি আরো বলেন, ক্যালিফোর্নিয়াতে আপনাদের জন্য আছে বিশেষ এক মাস্ক। আপনারা কোনো নিয়মনীতির মধ্যে থাকতে পারেন না, মাস্ক খুলে ফেলুন। মাস্কের ভিতর দিয়েই খাবার খান। এটা একটা অত্যন্ত জটিল মেকানিজম। বিবিসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here