দেশে করোনায় বাড়ছে মৃত্যু

0
111

বাংলা খবর ডেস্ক:
দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আরও ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত ৫৮ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ হাজার ২১২ জনের শরীরে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা গত ৭৬ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

রোববার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদফতর এক বুলেটিনে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির সর্বশেষ এই তথ্য জানিয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ২ হাজার ২১২ জনকে নিয়ে দেশে আক্রান্তে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮৪ জন। আরও ৩৯ জনের মৃত্যুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬ হাজার ২৫৪ জন হয়েছে।

গত একদিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৭৪৯ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৫ জন হয়েছে।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে করোনাভাইরাসের উপদ্রব শুরু হয়। এটি বর্তমানে বিশ্বের ২১৩ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। ১১ মার্চ কোভিড ১৯-কে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

নেগেটিভ সনদ থাকলেও প্রবাসীদের করোনা পরীক্ষা:

ওদিকে প্রবাসীরা বিদেশ থেকে নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসলেও তাদের আবারো করোনা টেস্ট করা হবে। করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ জন্য বিমানবন্দরগুলোতে পরীক্ষা বাড়ানো হচ্ছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ কথা জানান ড. পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, প্রথম আসার পর প্রত্যেককে আমরা টেস্ট করবো। আমরা পিসিআর টেস্ট করে রেজাল্ট দেখবো কি অবস্থা। যদি নেগেটিভ আছে মেনে হয়, তখন তাদের সেলফ কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যারা নেগেটিভ নিয়ে আসবেন তাদেরও দেখবো অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি না।

এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে, তখন বাংলাদেশেও বেড়েছে সংক্রমণ। কিন্তু এ নিয়ে মানুষের মাঝে কমে এসেছে সচেতনতা। ফলে মাস্ক পরার বিষয়ে কঠোর হতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য অভিযানে নামতে যাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

মডার্নার টিকাকে চমকপ্রদ বললেন ফাউসি

মডার্নার তৈরি কোভিড-১৯ টিকার প্রাথমিক ফল মুগ্ধ ও আশাবাদী করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি। তিনি এটিকে ‘দুর্দান্ত চমকপ্রদ ও চিত্তাকর্ষক’ বলে মন্তব্য করেছেন।

মডার্নার টিকাটি তৈরি করা হয়েছে নতুন এমআরএনএ প্রযুক্তিতে। এই টিকার প্রাথমিক ফলে সন্তোষ প্রকাশ করে ফাউসি বলেন, করোনার টিকার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ কার্যকারিতা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম। তবে মডার্নার টিকার প্রাথমিক ফলে ৯৪ দশমিক ৫ শতাংশ কার্যকারিতা নিয়ে আমি আমি আশ্চর্য হয়েছি। এটি খুবই আশাব্যঞ্জক ও চিত্তাকর্ষক ফল। ফাউসি এ ফলকে পরীক্ষামূলক এমআরএনএ প্রযুক্তির বৈধতা হিসেবে অভিহিত করেছেন। খবর এনডিটিভির।

প্রসঙ্গত সোমবার মডার্না ও এনআইএইচ ঘোষণা দিয়েছে, ৩০ হাজার মানুষের ওপর তাদের চালানো টিকা পরীক্ষার প্রাথমিক ফলে ৯৪ দশমিক ৫ শতাংশ কার্যকারিতা দেখা গেছে। মডার্নার ক্ষেত্রে টিকার ট্রায়ালে ৯৫ জন অংশ নিয়েছিলেন।

এর আগে গত সপ্তাহে টিকা নিয়ে সুখবর দিয়েছিল ফাইজার ও বায়োএনটেক। তাদের টিকাটির প্রাথমিক ফলে ৯০ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছিল।

টিকাটি তৈরি হয়েছে নতুন প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে। কৃত্রিমভাবে ‘মেসেঞ্জার আরএনএ’ মানুষের কোষে প্রবেশ করানো হয়েছে। আর এর মাধ্যমে টিকাকে কার্যকর করা হয়েছে। এই পদ্ধতি ব্যবহারে আগে কোনো টিকা উদ্ভাবন করা হয়নি।

ফাউসি বলেন, নতুন এ পদ্ধতি ব্যবহারের বিষয়ে তাদের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল।

টিকা তৈরিতে মডার্না আলোচনায় থাকলেও ফাউসি এ ক্ষেত্রে এনআইএইচের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

এবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তরে করোনার হানা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সদর দপ্তরে মহামারি করোনাভাইরাস হানা দিয়েছে। সোমবার পর্যন্ত সেখানে আক্রান্ত হয়েছে ৬৫ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হু’র মুখপাত্র ফারাহ দাখলাল্লাহ। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও ওয়ান নিউজের।

মূলত ইউরোপের দেশগুলোতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সদর দপ্তরেও সেটার প্রভাব পড়েছে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষায়িত এই সংস্থাটির সদর দপ্তরে একটি করোনার ক্লাস্টারও চিহ্নিত করা গেছে।

অবশ্য যে ৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন তাদের অর্ধেক বাসা থেকে কাজ করা কর্মকর্তা ও কর্মচারী। বাকি ৩২ জন সদর দপ্তরের মধ্যে কাজ করছিলেন এতোদিন। যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা বর্তমানে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তরে এবং তার কর্মীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও করোনার সংক্রমণ রোধের অন্যান্যা নিয়মগুলো কঠোরভাবে মানা হয়েছিল কি? স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানার পরও যদি তারা আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে কি এটা প্রমাণিত হচ্ছে যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত করোনা সংক্রমণের বিধিগুলো কার্যকর নয়?

করোনার এই ধাক্কা সামলে উঠে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বিষয়ে কি ব্যাখ্যা ও বর্ণনা দেয় সেটাই দেখার বিষয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here