দেশে করোনায় আরো ৩০ জনের মৃত্যু

0
136
বিশ্বে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান শীর্ষে। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা খবর ডেস্ক:
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে আরো ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ৩৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে আরো এক হাজার ৩৬৭ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ লাখ চার হাজার ৮৬৮ জন হয়েছে।

আজ বুধবার বিকেলে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে কভিড-১৯ পরিস্থিতির এই সর্বশেষ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো দুই হাজার ৪১৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে চার লাখ ৪৪ হাজার ৩৪৫ জন হয়েছে।

ইউকে ফেরত যাত্রীদের ৭ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

“সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে কোভিড-১৯ এর নতুন ধরণ দেখা দেয়ায় ইউকে ফেরত যাত্রীদের দেশে প্রবেশে ৭ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। ৭ দিন শেষ হলে কোয়ারেন্টিনে থেকেই সরকারিভাবে যাত্রীদের কোভিড টেস্ট করে ছেড়ে দেয়া হবে। দেশের কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর আশকোনা হজ্ব ক্যাম্পে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের জন্য জিন এক্সপার্ট মেশিন, মোবাইল পিসিআর ল্যাব ও অ্যান্টিজেন টেস্ট-এর শুভ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আশকোনা হজ্ব ক্যাম্পে থাকা জিন এক্সপার্ট মেশিন, মোবাইল পিসিআর ল্যাব ও অ্যান্টিজেন টেস্ট সেন্টারগুলির উদ্বোধন করেন। জিন এক্সপার্ট মেশিন ও মোবাইল পিসিআর ল্যাব উদ্বোধনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, জিন এক্সপার্ট মেশিনে কোভিড-১৯ টেস্টের মাধ্যমে দেশে নতুন আরেকটি প্রযুক্তি যুক্ত হলো। এর আগে এবছর মার্চ মাস থেকেই দেশে কোভিড-১৯ টেস্ট শুরু করা হয়। শুরুতে মাত্র ১টি পিসিআর ল্যাব ছিল।

বর্তমানে ১১৮টি পিসিআর ল্যাব চালু করা হয়েছে। এর সাথে অ্যান্টিজেন টেস্ট যুক্ত করা হয়েছে। আজ নতুনভাবে জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা শুরু হলো। সুতরাং কোভিড মোকাবেলায় আমরা সব দিক দিয়েই এখন সেবার মান বৃদ্ধি করেছি। কোভিড মোকাবেলায় স্বাস্থ্যখাতের যথোপযুক্ত উদ্যোগ থাকায় দেশের মানুষ স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছে, ব্যবসা বাণিজ্য চলমান রয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও ঊর্দ্ধমূখী রয়েছে। মোবাইল পিসিআর ল্যাব প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মোবাইল পিসিআর ল্যাবটি এশিয়ার সর্বপ্রথম ও আন্তর্জাতিক মানের মোবাইল (করোনা টেস্টিং) ল্যাব। যেখানে রোগীরা নিজের অবস্থানে থেকেই নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে করোনা পরীক্ষা ও অন লাইনে রিপোর্ট পাবেন। এছাড়াও উন্নত বিশে^র ন্যায় জরুরি প্রয়োজনে নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হয়ে বা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও শিল্পাঞ্চলে গিয়ে স্যাম্পল নেয়া এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে যথাসময়ে অনলাইনে রিপোর্ট প্রদানের সুবিধা থাকছে এই মলিক্যুলার ল্যাবে।
উল্লেখ্য, জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে ও গ্লোবাল ফান্ড-এর আর্থিক সহযোগীতায় জিন এক্সপার্ট এর মাধ্যমে কোভিড-১৯ টেস্ট শুরু হয়েছে। এই টেস্ট পরিচালনা করার জন্য আরটি পিসিআর এর মতো তিনটি পৃথক কক্ষের প্রয়োজন হয় না। এই পদ্ধতিতে পিসিআর রি-এজেন্ট কার্টিজে আগে থেকেই দেওয়া থাকে, তাই নিউক্লিক এসিড এক্সট্রাকশন, অ্যামপ্লিফিকেশন, ডিটেকশন প্রক্রিয়া কার্টিজের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম-এর সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএমএফআর-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফাইজুর রহমান, লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম, লে. কর্নেল সাইফসহ ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

বিশ্বে গত এক সপ্তাহে রেকর্ড ৪৬ লাখেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত

ওদিকে বিশ্বব্যাপী গত এক সপ্তাহে নতুন করে ৪৬ লাখেরও বেশি মানুষ মহামারি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার শুরু থেকে এক সপ্তাহের হিসাবে এ সংখ্যা সর্বোচ্চ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মঙ্গলবার রাতে এ খবর জানিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপাত্ত অনুযায়ী, গত ১৪ থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ রোগে মোট ৪৬ লাখ ১২ হাজার ৭৯০ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং ৭৯ হাজার ১ জন মারা গেছে। আগের যেকোন ৭ দিনের তুলনায় এ আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ।

এর আগের সপ্তাহ ৭ থেকে ১৩ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে মোট ৪৩ লাখ ২৯ হাজার ৯২৭ জন আক্রান্ত হয় এবং ৭৫ হাজার ৩৮ জন প্রাণ হারায়।

আক্রান্তদের অধিকাংশ উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর বাসিন্দা। গত সপ্তাহে এ দুই অঞ্চলের দেশগুলোতে ২৩ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

এদিকে একই সময়ে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে যত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে তাদের অধিকাংশই ইউরোপের বাসিন্দা। সাপ্তাহিক হিসাবে গত এক সপ্তাহে ইউরোপে ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে মারা যায়।

১৪ থেকে ২০ ডিসেম্বর এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ব্রাজিলে আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ২৬ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে তুরস্কে ১ লাখ ৯৪ হাজার, রাশিয়ায় ১ লাখ ৯৪ হাজার, ভারতে ১ লাখ ৭৪ হাজার এবং জার্মানিতে ১ লাখ ৭৩ হাজারের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here