বাংলা খবর ডেস্ক:
আজ-কালের মধ্যেই আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ওয়ানডের জন্য ২৪ জনের ক্যাম্প ঘোষণা করবেন নির্বাচকরা। সেটিতে সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার থাকার সম্ভাবনা অতি ক্ষীণ। ওয়ানডে দলের ভবিষ্যৎ রূপরেখা, ফিটনেস—এসবকে মানদণ্ড ধরেই নাকি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের ‘মাশরাফি-যুগে’র যবনিকা ঘটতে যাচ্ছে।
২০ থেকে ২৫ জানুয়ারি ক্যারিবীয়দের তিন ওয়ানডের সিরিজে আতিথ্য দেবে বাংলাদেশ। তাই মাত্র তিন সপ্তাহ আগে বড় বহরের ক্যাম্প করে মূল স্কোয়াড বাছাইয়ের ভার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) বইতে হচ্ছে সফরকারীদের প্রস্তুতির জন্য। নজিরবিহীনভাবে ওয়ানডে সিরিজের আগে দুটি এক দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সে জন্যই ওয়ানডের ক্যাম্পে জনা চব্বিশেককে রাখা হবে বলে গতকাল জানিয়েছেন নির্বাচক কমিটির সদস্য হাবিবুল বাশার, ‘ওরা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। তাই ক্যাম্পটা বড় হচ্ছে।’ তার মানে জাতীয় দলের চৌহদ্দির বাইরেরও অনেকে ডাক পাচ্ছেন ক্যাম্পে।
কিন্তু এই বহরে মাশরাফির নাম না থাকলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ এরই মধ্যে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান কিংবা ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানের বক্তব্যে তেমনই ইঙ্গিত। গত পরশু রাতে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যেমন নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘তরুণ ক্রিকেটারদের সুযোগ দেওয়া, আগামী বিশ্বকাপ (২০২৩) ও ফিটনেস—এসব বিবেচনায় মাশরাফিকে দলে রাখা কঠিন।’
বিসিবি সভাপতির মুখ ফুটে এটুকু বলার অর্থ বুঝতে দেশীয় ক্রিকেটসংশ্লিষ্টদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। গতকাল যেমন মাশরাফিকে ওয়ানডের ক্যাম্পে ডাক পাওয়া প্রসঙ্গ কৌশলে এড়িয়ে গেছেন হাবিবুল, ‘কাল (আজ) আমরা বসব। তার আগে এ বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করার অবস্থায় আমরা কেউ নেই।’
মাশরাফি নিজে কী ভাবছেন আসন্ন তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে? তিনি নিজে কি তৈরি ডাক পেলে আবার আন্তর্জাতিক ম্যাচে নামার? গতকাল রাতে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আমাকে এমন প্রশ্ন করছেন কেন? আমি এখনো খেলছি কেন?’ মানে, ডাক পেলে আবারও বাংলাদেশের জার্সি গায়ে নামতে রাজি। অবশ্য এটা তো আর সম্মতির ব্যাপার নয়, পুরোটাই ম্যাচ প্রস্তুতির বিষয়। পরোক্ষে সেই প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছেন মাশরাফি, ‘প্রস্তুতির মানদণ্ড আসলে কী? ফিটনেস? আমি কিন্তু ফিটনেস পরীক্ষা দিয়েই বঙ্গবন্ধু কাপ খেলেছি। বোলিংয়ে কোনো সমস্যা হয়নি।’
গত মাসের টুর্নামেন্টে এক ম্যাচে ৫ উইকেটও পেয়েছেন মাশরাফি। জেমকন খুলনায় মাঝপথে যোগ দিয়ে শিরোপার স্বাদও নিয়েছেন। গত বছরের ১৬ মার্চের পর মাঠের বাইরে থাকা মাশরাফি মাঝে করোনায় লম্বা সময় ভুগেছেন। সেই তিনি দুবেলা অনুশীলন করেই কিনা ঠিক জায়গায় বল করে গেছেন! অবশ্য এমন বিস্ময় তো তাঁর বেলায় নতুন কিছু নয়। আর এটা নিয়েই সম্ভবত দোলাচলে নীতিনির্ধারকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নীতিনির্ধারকদের একজন তেমনটাই বলছিলেন গতকাল, ‘প্রাথমিক দলে রাখলে মাশরাফিকে মূল স্কোয়াডে রাখতে হবে। ওকে খেলাতেও হবে। ওর মতো সিনিয়র কাউকে ক্যাম্পে ডেকে কিংবা স্কোয়াডে রেখে আর বসিয়ে রাখা যাবে না।’
যাবে না বলেই ভবিষ্যৎ চিন্তা বাধাগ্রস্ত হওয়ার দুশ্চিন্তা নীতিনির্ধারক মহলে। খেলালেই তো আরেকটি সিরিজের গ্যারান্টি আদায় করে নেওয়া পারফরম করবেন মাশরাফি, যিনি নিজেই ২০২৩ বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখেন না।