বাংলা খবর ডেস্ক:
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিল শুধু দীর্ঘই হচ্ছে। এরই মধ্যে দ্বিতীয় ঢেউ চলছে সারাবিশ্বে। আর তাতে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ লাখ। আর ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯ কোটি ৩৫ লাখ।
শুক্রবার সকাল ১০টায় যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটার এ তথ্য হালনাগাদ করেছে।
ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯ কোটি ৩৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২০ লাখ ২ হাজার ৪০৭ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬ কোটি ৬৮ লাখ ১২ হাজার ৬২৩ জন।
করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন দুই কোটি ৩৮ লাখ ৪৮ হাজার ৪১০ জন।
মৃত্যু হয়েছে তিন লাখ ৯৭ হাজার ৯৯৪ জনের।
আক্রান্তে দ্বিতীয় ও মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন এক কোটি ৫২ লাখ ৮ হাজার ৫০৮ জন এবং মারা গেছেন এক লাখ ৫১ হাজার ৯৫৪ জন
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।
করোনায় দেশে আরও ১৩ মৃত্যু:
ওদিকে করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭৬২ জন।
শুক্রবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদফতর এক বুলেটিনে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির সর্বশেষ এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ৭৬২ জনকে নিয়ে দেশে আক্রান্তে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৫ জন। আরও ১৩ জনের মৃত্যুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজার ৮৬২ জন হয়েছে।
গত একদিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৭১৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৭১ হাজার ১২৩ জন হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। সে হিসাবে কোভিড-১৯ শনাক্তের ৩১১তম দিন পার করছে বাংলাদেশ।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে করোনাভাইরাসের উপদ্রব শুরু হয়। এটি বর্তমানে বিশ্বের ২১৩ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। ১১ মার্চ কোভিড ১৯-কে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
একবার করোনা হলে সুরক্ষিত থাকা যাবে ৫ মাস: গবেষণা
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে একবার আক্রান্ত হওয়ার পর মানুষ কমপক্ষে পাঁচ মাসের জন্য সুরক্ষিত থাকতে পারে। এ সময়ের মধ্যে আবার করোনায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার পরও সেই ব্যক্তি ভাইরাস বহন করতে পারেন এবং তা ছড়িয়ে দিতে পারেন।
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা করোনায় একবার সংক্রমিত হয়েছেন, তারা ৮৩ শতাংশ কম ঝুঁকিতে থাকেন। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, কিছু মানুষ আবার করোনায় সংক্রমিত হতে পারেন ও অন্যদের সংক্রমিত করতে পারেন। এ কারণে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলেও মানুষকে ঘরে থাকা ও স্বাস্থ্যবিধির নিয়ম মানতে হবে।
গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া মার্কিন অধ্যাপক সুশান হপকিন্স বলেছেন, সাধারণভাবে মানুষ যত দিন ভাবে, তার চেয়ে বেশি সময় পর্যন্ত করোনাভাইরাসের প্রতিরোধক্ষমতা থাকে। গবেষণার এই ফলাফল খুবই আশাব্যঞ্জক। তবে সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গবেষণার একটি দিক উদ্বেগের। সেটি হলো, যারা দ্বিতীয়বার করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকের শরীরে ভাইরাস উচ্চমাত্রায় ছিল। কিন্তু তাদের কোনো উপসর্গ ছিল না। তারা সহজেই অন্যদের সংক্রমিত করতে পারেন।
গবেষক সুশান হপকিন্স জানান, একবার কারও করোনা হলে খুব কম ক্ষেত্রে আবার সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কারণ, একবার করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরে প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। তবে তার অন্যদের সংক্রমিত করার ঝুঁকি থাকে।