ঐক্যের ডাক বাইডেনের

0
106

বাংলা খবর ডেস্ক:

ফের ঐক্যের ডাক দিলেন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র দিবস উপলক্ষে বাইডেন এই আহ্বান জানান।

বাইডেন নিজ শহর ডেলাওয়ার থেকে ফিলাডেলফিয়ায় দাতব্য কাজে যাওয়ার মধ্য দিয়ে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র দিবস পালন করেন। বলা হচ্ছে, চার বছরের বিভক্তি শেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াসের এটি একটি প্রতীকি উদ্যোগ।

এ উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় বাইডেন বলেন, আমাদের ভালোবাসার দেশটিকে নিরাপদ, ঐক্যবদ্ধ ও পুনগর্ঠন করার কাজ শুরুর এখনই উপযুক্ত সময়।

তবে ৭৮ বছরের জো বাইডেন যতই ক্ষত নিরাময় ও আশার কথা শোনান না কেন বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতার প্রথম দিন থেকেই তাকে কঠোর বাস্তবতর মুখোমুখি হয়ে কঠিন সংকটসমূহ মোকাবেলা করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে, টিকা দান কর্মসূচি প্রতিনিয়ত হোঁচট খাচ্ছে। এছাড়া রয়েছে ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চ্যলেঞ্জ।

এদিকে ৬ই জানুয়ারি পার্লামেন্ট ভবনে সশস্ত্র হামলার ঘটনার পর থেকে অনেকটাই নীরব রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এখনও পর্যন্ত নির্বাচনে তার পরাজয় স্বীকার কিংবা জয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাননি।

যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্য অনুযায়ী বিদায়ী প্রেসিডেন্ট নতুন প্রেসিডেন্টকে ওভাল অফিসে চা চক্রে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান। ট্রাম্প এক্ষেত্রেও দীর্ঘদিনের রীতি ভাঙলেন। এছাড়া বাইডেনের শপথ অন্ষ্ঠুানে না থাকার ঘোষণাও তিনি আগেই দিয়েছেন।

এদিকে সোমবার প্রকাশিত এক জনমত জরিপে দেখা গেছে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তার জনপ্রিয়তার রেকর্ড সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছেন। আর কোন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট এতো কম জনপ্রিয়তা নিয়ে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেননি।

মার্কিন সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ট্রাম্পের সর্বশেষ কিছু সিদ্ধান্তের ঘোষণা মঙ্গলবার হতে পারে। তিনি বেশকিছু দোষী সাব্যস্ত অপরাধীকে ক্ষমা করে দিচ্ছেন। এমনকি তিনি নিজে ও তার সন্তান যারা হোয়াইট হাউসে উপদেষ্টা ও নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করেছেন তাদেরও ক্ষমা করবেন বলে জল্পনা রয়েছে।

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ক্ষমা করা হবে এরকম ১শ লোকের তালিকা ট্রাম্পের কাছে রয়েছে।

এদিকে বুধবার সকালেই ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছেড়ে ফ্লোরিডায় মার এ লাগো গলফ ক্লাবে তার নিজ বাড়িতে চলে যাবেন। বলা হচ্ছে ট্রাম্প সকালেই যাচ্ছেন কারণ প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষ মুহূর্তের সুযোগটুকু তিনি নিতে চাচ্ছেন।

বুধবার দুপুরে বাইডেনের শপথ নেওয়ার মধ্যদিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান ট্রাম্প আর ব্যবহার করতে পারবেন না।

কড়া নিরাপত্তার চাদরে যুক্তরাষ্ট্র:

আগামীকাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে কড়া নিরাপত্তার চাদরে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প সমর্থকেরা ৫০ টি রাজ্যের রাজধানীতে সশস্ত্র বিক্ষোভ চালাতে পারে এনিয়ে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করেছে দেশটি।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই কোনো ঝামেলা এড়াতে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ন্যাশনাল গার্ডের ২৫ হাজার সদস্যের নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য যাচাই বাছাই করে দেখছে।

আর্মি সেক্রেটারি রায়ান ম্যাকার্থি বার্তা সংস্থা এপিকে বলেছেন, ‘তিনি এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ গার্ড সদস্যদের মধ্য থেকে কোনো হুমকির প্রমাণ দেখেননি।’

কোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে ওয়াশিংটনের বেশিরভাগ রাস্তা এবং মেট্রো স্টেশনগুলোর পাশাপাশি ন্যাশনাল মলকেও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভার্জিনিয়া রাজ্য থেকে শহরে প্রবেশের সেতুগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে হাজার হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা পুরো অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করছেন।

এছাড়া ৫০টি রাজ্যে ট্রাম্প সমর্থকেরা সশস্ত্র বিক্ষোভ চালাতে পারে এনিয়ে সেসব রাজ্যেও বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। অনেক রাজ্যেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

এদিকে, তীব্র নিরাপত্তা উদ্বেগ সত্ত্বেও, বাইডেন অনুষ্ঠানটি ঐতিহ্যবাহী স্থানেই করার পরিকল্পনা করছেন।

বাইডেনের আসন্ন যোগাযোগ পরিচালক কেইট বেডিংফিল্ড এবিসির দিস উইক শোতে বলেছেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা এবং আমাদের প্রত্যাশা যে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২০ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিল -এর পশ্চিম পাশের বাইরের দিকে পরিবারের সঙ্গে বাইবেলে হাত রেখে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।’

তিনি বলেন, ‘বাইডেন এবং তার দলের যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থগুলোর প্রতি সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে যারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অভিষেক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করার পরিকল্পনায় কাজ করে যাচ্ছেন।’

মেলানিয়ার বিদায় বার্তা:

বিদায়বেলায় মার্কিনীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। সোমবার এনিয়ে টুইটারে ভিডিও পোস্ট করেছেন মেলানিয়া।

ভিডিও বার্তায় মেলানিয়া বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করাটা ছিল আমার জীবনে সবচেয়ে বড় সম্মান।’

মেলানিয়ার ভাষ্যমতে, ‘দেশজুড়ে আমেরিকানদের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ডে আমি বেশ অনুপ্রেরণা পেয়েছি।’

এছাড়া মেলানিয়া বলেন, ‘আপনারা যাই করুন না কেন সেই কাজটা মন দিয়ে করুন। মনে রাখবেন, সহিংসতার মাধ্যমে কোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব নয়। এটা কখনই ন্যায়সঙ্গত হবে না।’

এদিকে, আগামীকাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিচ্ছেন জো বাইডেন। শপথ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। মোতায়েন করা হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে নিরাপত্তা রক্ষী।

অভিবাসীদের বৈধতা দিতে বাইডেনের ৮ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা:

দায়িত্বগ্রহণের প্রথম দিনেই একটি বিস্তৃত অভিবাসন বিল প্রস্তাবের পরিকল্পনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এতে দেশটিতে বসবাসরত এক কোটি ১০ লাখ অনিবন্ধিত অভিবাসীর আট বছরের মধ্যে বৈধ হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।

কট্টর অভিবাসনবিরোধী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পূর্ণ বিপরীতে গিয়ে এই আইনটির প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন তিনি।-খবর টাইমের


ছবি: সংগৃহীত

বুধবার বাইডেনের অভিষেকের মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের চার বছরের মেয়াদের ইতি ঘটতে যাচ্ছে।

ট্রাম্পের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব নীতি বদলে ফেলা হয়েছিল, সেগুলো আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর আগে থেকেই দিয়ে আসছিলেন বাইডেন।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অভিবাসনের নিয়ম বদলাতে তৎপর হন রিপাবলিকান ট্রাম্প।

সে সময় সাতটি মুসলিম প্রধান দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার পথ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে মেট ১৩টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র সফরে কড়াকড়ি চলছে।

ট্রাম্পের ডিক্রি মানবেন না বাইডেন:

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে বৃটেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বেশিরভাগ এবং ব্রাজিলের বিরুদ্ধে দেয়া ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আগামী ২৬শে জানুয়ারি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন। তার এক মুখপাত্র বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, সোমবার হোয়াইট হাউজ এক ডিক্রি জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ওইসব দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে ২৬ শে জানুয়ারি। বাইডেনের মুখপাত্র জেন পসাকি টুইটারে বলেছেন, এখন ভ্রমণ বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার সময় নয়।

মার্চে ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রে।

মে মাসে একই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় ব্রাজিলের ওপর। জেন পসাকি টুইটারে বলেছেন, আমাদের মেডিকেল টিমের পরামর্শে এখনই ১/২৬ বিষয়ক বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা যাবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে ডিক্রি জারির পর পরই এ টুইট করেন মিস পসাকি। তিনি আরো বলেছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আরো ছড়িয়ে পড়া রোধে আমরা আন্তর্জাতিক সফরের ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা নিয়েছি। এখন বিশ্বে অধিক সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক সফরের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার এখনই সময় নয়।

যাদের নিয়ে যাত্রা শুরু বাইডেনের:

সময়ের হিসাবে আর বাকি কয়েক ঘন্টা। এরপরই হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প অধ্যায়ের যবনিকাপাত হবে। পর্দা উঠবে নতুন প্রশাসনের। সেই প্রশাসনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন ডেমোক্রেট জো বাইডেন। তার সঙ্গে সাহস যোগাবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত কমালা হ্যারিস। বুধবার এই প্রশাসন তারা শুরু করতে যাচ্ছেন হাতেগোণা মাত্র কয়েকজন ডেপুটিকে সঙ্গে নিয়ে। তার আগে বাইডেন মনোনীত ডেমোক্রেট দলের মন্ত্রীপরিষদের অনুমোদন নিতে হবে সিনেট থেকে। তাদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার সিনেটে শুনানি হবে।

প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হবেন ইয়েলেন
প্রেসিডেন্ট মনোনীত ট্রেজারি সেক্রেটারি বা অর্থমন্ত্রী মনোনীত জ্যানেট ইয়েলেন। তার নিয়োগ চূড়ান্ত করা নিয়ে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে শুনানি হবে সিনেট ফাইন্যান্স কমিটিতে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের কাছে তিনি কোনো আগন্তুক নন। তিনি দীর্ঘ সময় অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকের ভূমিকা পালন করে আসছে। ফলে তার নিয়োগ সিনেটে নিশ্চিত হলে তিনি হবেন এই মন্ত্রণালয়, ফেডারেল রিজার্ভ এবং হোয়াইট হাউজের কাউন্সিল অব ইকোনমিক এডভাইজার-এর প্রথম নেতৃত্বাদানকারী। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রণালয়কে সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হবেন তিনি। করোনা মহামারির ফলে যে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে তখন তিনি এ দেশটির আর্থিক নীতি সামনে চালিয়ে নিতে ব্যবহার করবেন তার বিস্তৃত ক্ষমতা। কিন্তু করোনার ক্ষতি পুনরুদ্ধারে বিপুল পরিমাণ অর্থের জন্য এবং আয়কর বাড়ানোর যে প্রস্তাব করেছেন বাইডেন তা নিয়ে বিতর্কে জড়াবে রিপাবলিকানরা।

গোয়েন্দা সংস্থার ডিরেক্টর অরভিল হেইন্স
যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর ডেপুটি ডিরেক্টরের দায়িত্বেও ছিলেন অরবিল হেইন্স। এ পদে এ যাবতকাল তিনিই প্রথম নারী ছিলেন। তিনি হলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাপক ওবামার সময়ের জাতীয় নিরাপপত্তা বিষয়ক হোয়াইট হাউজের ডেপুটি এডভাইজার। গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর ডেপুটি দায়িত্বে প্রথম নারী ছিলেন। তাকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ডিরেক্টর হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন জো বাইডেন। ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পর এ পদটি সৃষ্টি করা হয়। এর মধ্য দিয়ে তিনি হবেন এ পদে প্রথম নারী। এ পদের দায়িত্ব হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৭টি গোয়েন্দা বিষয়ক এজেন্সির মধ্যে সমন্বয় করা। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট সিনেটরদের সূত্রগুলো বলেছে, হেইন্স তার নিয়োগ নিশ্চিত করার পক্ষে ভোট পাবেন। তবে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে যেসব চ্যালেঞ্জ সে সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন। রাশিয়া থেকে যে সাইবার যুদ্ধ চালানো হয়, তার প্রেক্ষিতে তাকে প্রশ্ন করা হতে পারে। তার নিয়োগ চূড়ান্ত করা নিয়েও সিনেটে আজ স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় শুরু হবে। এই শুনানি করবে সিনেট সিলেক্ট কমিটি অন ইন্টেলিজেন্স।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি হবেন আলেসান্দ্রো
অন্যদিকে সিনেটের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এন্ড গভর্নমেন্টাল অ্যাফেয়ার্স প্যানেল সাক্ষাতকার নেবে আলেজান্দ্রে মায়োরকাসের। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফেডারেল প্রসিকিউটর এবং কিউবার অভিবাসী। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক সেক্রেটারি হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তিনি বাইডেনের আমলে সীমান্ত নিরাপত্তা ও এজেন্সিগুলোর ভিতর জরুরি বিষয়ে দেখাশোনা করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। ওদিকে বুধবার ক্ষমতা নেয়ার পর কংগ্রেসে অভিবাসন বিষয়ক আইনের বিস্তৃত সংস্কার বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আলেজান্দ্রো মায়োরকাস নেতৃত্ব দেবেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। এর অধীনে আছে দুই লাখ ৪০ হাজার সদস্য। তারা সীমান্ত টহল এবং সাইবার নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ বিষয়ে দায়িত্ব পালন করে। এর মধ্যে রয়েছে ইউএস কোস্ট গার্ড এন্ড সিক্রেট সার্ভিস। তার শুনানিও আজ সকাল ১০টায় হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হচ্ছেন ব্লিঙ্কেন
সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটিতে শুনানি হবে জো বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের। এক সময় এই কমিটিতে তিনি ছিলেন একজন স্টাফ, আর বাইডেন ছিলেন চেয়ারম্যান। তার শুনানি হবে আজ যুক্তরাষ্ট্রের সময় বিকাল ২টায়। তাকে দেখা হয় বাইডেনের অতি ঘনিষ্ঠ এবং দীর্ঘদিনের নীতি বিষয়ক একজন হিসেবে। শুনানিতে তিনি রিপাবলিকানদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হবে। এই শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক চ্যালেঞ্জ নিয়ে চীনা ইস্যুতে বাইডেনকে নমনীয় বলে অভিযুক্ত করেছেন রিপাবলিকানরা। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি ভঙ্গ করার পরিষ্কার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন জো বাইডেন। এর মধ্যে রয়েছে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি। যদি ইরান চুক্তির শর্ত মেনে চলে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তিতে ফেরার পরিকল্পনা করছে। এ ছাড়া আইডেন প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায়ও ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন।

প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন লয়েড অস্টিন
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওমাবার আমলে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল লয়েড অস্টিন। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন বাইডেন। ফলে তিনি হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষামন্ত্রী। আজ স্থানীয় সময় বিকাল ৩টায় তিনি সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটিতে শুনানির মুখোমুখি হবেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্থানীয় কোনো সেনা কর্মকর্তা কমপক্ষে সাত বছর না গেলে সাধারণ দায়িত্বে আসতে পারেন না, এ বিষয়ে আইনে শিথিলতা প্রয়োজন হবে প্রতিনিধি পরিষদ থেকে। এ জন্য বৃহস্পতিবার বিকাল ২টায় প্রতিনিধি পরিষদ শুনানিতে বসবে।

প্রতিদ্বন্দ্বী বুটিজেজ হবেন পরিবহনমন্ত্রী!
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট দল থেকে মনোনয়ন লড়াইয়ে বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইন্ডিয়ানা রাজ্যের সাউথ বেন্ডের মেয়র পিট বুটিজেজ। তাকে বাইডেন পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। এই মন্ত্রণালয় বেসামরিক বিমান চলাচল, মহাসড়ক, যানবান, পাইপলাইন এবং ট্রানজিট ইস্যু দেখাশোনা করে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রানজিট ব্যবস্থাকে সাহায্য করার জন্য বাইডেন এরই মধ্যে ২০০০ কোটি ডলারের একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে একে অনেক বড় অংকের অর্থ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া তিনি আন্তঃরাজ্য সফরকালে ফেসমাস্ক বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা করছেন। অবকাঠামো, জলবায়ু এবং কর্মসংস্থান বিষয়ক কর্মসূচিতে বাইডেন প্রায় ২ টিলিয়ন ব্যয়ের প্রস্তাব করেছেন। এসব প্রস্তাব কংগ্রেস থেকে অনুমোদিত হতে হবে। সিনেটের কমার্স, সায়েন্স এন্ড ট্রান্সপোর্টেশন প্যানেলে পিট বুটিজেজের মনোনয়ন নিয়ে শুনানি হবে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায়।

ভ্যাটের‌্যান বিষয়ক মন্ত্রী হচ্ছেন ম্যাকডনা
ভ্যাটের‌্যান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আসছেন হোয়াইট হাউজের সাবেক কর্মী ডেনিস ম্যাকডনা। তিনি ওবামা প্রশাসনের অধীনে বাইডেনের পাশাপাশি কাজ করেছেন। তাকে এ পদে মনোনয়ন দেয়ায় আপত্তি তুলেছেন অনেকে। কারণ, তিনি কখনোই সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেননি। এই মন্ত্রণালয়ে কমপক্ষে ১০০০ স্বাস্থ্যবিষয়ক ফ্যাসিলিটি সহ বিশাল এক স্বাস্থ্য বিষয়ক এজেন্সিও আছে। ডেনিস ম্যাকডনা’র শুনানি সিনেট ভ্যাটের‌্যানস অ্যাফেয়ার্স কমিটিতে হবে ২৭ শে জানুয়ারি স্থানীয় সময় বিকাল ৩টায়।

বিদায়ের আগে পম্পেওর গুরুত্বপূর্ণ যেসব সিদ্ধান্ত ভোগাবে বাইডেনকে:

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামীকাল বুধবার শপথ নেবেন। আর এদিন সকালেই হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেবেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে বিদায়ের আগে মুখ বুজে মঞ্চ ছেড়ে চলে যেতে রাজী হননি ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুগত পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বিদেশ নীতির প্রধান সেনাপতি মাইক পম্পেও। শেষ দিনগুলোতে পররাষ্ট্র নীতিতে তিনি এমন কিছু মৌলিক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যা জো বাইডেনকে নিশ্চিতভাবে ভোগাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতার একবারে শেষ সময়ে চীন, ইরান এবং মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে এমন কিছু সিদ্ধান্ত মাইক পম্পেও দিয়েছেন যার পরিণতি জো বাইডেনকে ভোগ করতে হবে।

বিগত মাসগুলোতে ডেমোক্র্যাট এই প্রার্থী বারবার করে বলেছেন, বিশ্বে আমেরিকার ‘মর্যাদাপূর্ণ নেতৃত্ব’ প্রতিষ্ঠাই হবে তার বিদেশ নীতির প্রধান লক্ষ্য। এমন লোকজনকে তিনি তার পররাষ্ট্র নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়েছেন যারা ‘একলা-চলো’ নীতির বদলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় বিশ্বাসী।


জো বাইডেন ও মাইক পম্পেও

বাইডেন মনে করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদেশ নীতি গত চার বছরে বিশ্বে আমেরিকার নেতৃত্ব, প্রভাব ক্ষুণ্ণ করেছে এবং আমেরিকাকে তার মিত্রদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।

গত ১০ দিনে পম্পেওর গুরুত্বপূর্ণ যেসব সিদ্ধান্ত-

১/ চীনের স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে তাইওয়ানের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগ বন্ধ রাখার যে নীতি যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে অনুসরণ করছিল তা প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে চীন।

২/ ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন যা নিয়ে জাতিসংঘ এবং ত্রাণ সংস্থাগুলো গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘ ত্রাণ সংস্থার পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পরিষদে বলা হয়েছে এই সিদ্ধান্তে ইয়েমেনে মানবিক দুর্যোগ ভয়াবহ রূপ নেবে।

৩/ যে দেশটির মঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে জো বাইডেন বিশেষভাবে ইচ্ছুক, সেই কিউবাকে হঠাৎ করে সন্ত্রাসে মদতদাতা রাষ্ট্রের তালিকায় ঢোকানো হয়েছে।

৪/ ইরানে এখন আল কায়দা তাদের প্রধান ঘাঁটি তৈরি করেছে এই অভিযোগ তুলে পম্পেও বেশ কিছু সিনিয়র ইরানি নেতা এবং প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছেন। জানা গেছে, এমনকি আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির নিয়ন্ত্রিত কিছু প্রতিষ্ঠানকেও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

চীনের মঙ্গে বাণিজ্যিক এবং প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসার কোনো ইচ্ছা বাইডেনের না থাকলেও, তিনি চীনের সঙ্গে সম্পর্কে সুর বদলাতে আগ্রহী। ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তিতে ফেরা তার অন্যতম লক্ষ্য। ইয়েমেনের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ বন্ধে প্রয়োজনে সৌদি আরবের ওপর চাপ তৈরির জন্য ডেমোক্র্যাটদের বামপন্থী অংশের ভেতর থেকে বড় ধরনের চাপ রয়েছে তার ওপর।

আবার কিউবার সঙ্গে বৈরিতা দূর করার ব্যক্তিগত ইচ্ছা রয়েছে বাইডেনের। কিন্তু বেছে বেছে মাইক পম্পেও শেষ বেলায় ঠিক ওই জায়গাগুলোতে হাত দিয়েছেন।

শুধু সিদ্ধান্ত নিয়েই ক্ষান্ত হননি পম্পেও, গত কদিন ধরে তিনি এমন সব বিবৃতি দিচ্ছেন যার প্রধান বক্তব্য- ডেমোক্র্যটরা আগেও তাদের বিদেশ নীতিতে আমেরিকার স্বার্থ দেখেনি, এবারও দেখবে না। যেমন-ওবামা সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির পুরোনো একটি ভিডিও তিনি টুইটারে পোস্ট করেছেন যেখানে কেরি বলছেন যে ফিলিস্তিন নিয়ে ছাড় না দিলে আরব দেশগুলো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে না। ওই ভিডিও পোস্টের সঙ্গে পম্পেও লিখেছেন, ‘এই মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞকে চিনে রাখুন! তিনি যেটা হবে না বলেছিলেন, আমরা তা করে দেখিয়ে দিয়েছি।’

গত সপ্তাহে পম্পেও তার আরেক টুইটে বলেন, ‘জাতিসংঘে সবচেয়ে বেশি তহবিলের যোগানদাতা হিসাবে আমি মার্কিন করদাতা এবং আমেরিকার স্বার্থ দেখেছি।’ টুইটের সঙ্গে একটি ছবি তিনি পোস্ট করেন যে ছবিতে বারাক ওবামা, তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুজান রাইস এবং জাতিসংঘে তৎকালীন মার্কিন সামান্থা পাওয়ার রয়েছেন। জো বাইডেনের সরকারেও সুজান রাইস এবং সামান্থা পাওয়ার জায়গা পেয়েছেন।

বাইডেনের বিকল্প কী

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিদেশ নীতি নিয়ে ট্রাম্প সরকারের শেষ মুহূর্তের এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে কী করতে পারেন জো বাইডেন? তার সামনে বিকল্প কী? বাইডেনের উপদেষ্টা শিবির থেকে বলা হচ্ছে, পম্পেওর এসব সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সহজেই এগুলো উল্টে দেওয়া সম্ভব।

বারাক ওবামা সরকারের সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা বিভাগে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতেন শীর্ষ আইনজীবী অ্যাডাম স্মিথ। তাকে উদ্ধৃত করে লন্ডনের ফাইনানসিয়াল টাইমস পত্রিকা লিখেছে, আইনগতভাবে পম্পেওর এসব নির্দেশনা সবই উল্টে দেওয়া সম্ভব। তার মতে, এগুলো নির্বাহী আদেশ যা প্রেসিডেন্ট পাল্টে দিতে পারেন।

তবে তিনি বলেন, বাতিল করার আগে এসব সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করতে হবে যে কাজে অনেক সময় লাগতে পারে। শুধু যে কালক্ষেপণ হবে তাই নয়, এগুলো বদলাতে গেলে দেশের ভেতরে রাজনৈতিক চাপের মুখোমুখি হতে পারেন জো বাইডেন।

নভেম্বরের নির্বাচনে বাইডেন ফ্লোরিডায় কিউবান-অমেরিকানদের সমর্থন তেমন পাননি। ফলে কিউবার ওপর বসানো ‘সন্ত্রাসে মদতদাতার’ তকমা ওঠাতে তাকে ১০ বার ভাবতে হবে। আবার তাইওয়ানের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগ স্থাপনের সিদ্ধান্ত পুনঃস্থাপনের সিদ্ধান্ত বদলানোর ক্ষেত্রেও একই রকম দ্বিধায় পড়তে পারেন তিনি। কারণ চীনকে শায়েস্তা করার ইস্যুতে কংগ্রেসে দুই দলের মধ্যে এক ধরণের ঐক্যমত্য রয়েছে।

সাহস করে মাইক পম্পেওর শেষ মুহূর্তের এসব সিদ্ধান্তের কিছুটা হলেও হয়তো বাইডেন উল্টে দিতে পারবেন বা দেবেন, কিন্তু অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন, আস্থার সঙ্কটই হবে বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে তার সবচেয়ে বড় সমস্যা। ইরান এবং অন্য দেশগুলো বাইডেনের সঙ্গে নতুন কোনো চুক্তি করতে এখন দুবার ভাববে। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প দেখিয়েছেন কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চুক্তিও রাতারাতি উল্টে ফেলা যায়।

এতো বাজে বিদায় ট্রাম্পের!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ক্ষমতার মেয়াদকালের সর্বনিম্ন জনসমর্থন নিয়ে এ সপ্তাহে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করতে যাচ্ছেন। মাত্র ৩৪ শতাংশ আমেরিকান নাগরিকের সমর্থন নিয়ে তিনি তার দায়িত্ব শেষ করছেন। সোমবার গ্যালাপের একটি জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।

গ্যালাপের ওই জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকালে তার গড় জনসমর্থন ছিল ৪১ শতাংশ। এ জরিপ গ্রুপের সংগ্রহে থাকা উপাত্ত অনুযায়ী, এ সমর্থন তার পূর্বসুরি যেকোন প্রেসিডেন্টের চেয়ে চার পয়েন্ট কম।


বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

আগের জরিপে ট্রাম্পের শাসনের প্রতি ৩৫ শতাংশ মার্কিন নাগরিককে সমর্থন জানাতে দেখা যায়।

২০১৭ সালে ভার্জিনিয়ার শার্লোটাসভিলে শ্বেতাঙ্গ উগ্রবাদীদের একটি সহিংস সমাবেশের ঘটনার ব্যাপারে তিনি নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হওয়ার পর তার জন এ সমর্থনে ধস নামে।

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট মেয়াদকালের সর্বশেষ জরিপ চালানো হয় গত ৪ থেকে ১১ জানুয়ারি। আর এ জরিপে মার্কিন নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয়ের ফলাফল উল্টে দিতে ট্রাম্পের সমর্থকদের চেষ্ঠার অংশ হিসেবে মার্কিন ক্যাপিটল ভবনে হামলার নেতিবাচক প্রতিফলন দেখা যায়।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনের বিজয় ট্রাম্প প্রথম থেকেই প্রত্যাখান করে আসছেন। এএফপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here