তালিকা থেকে বাদ পড়ার খবরে মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু, পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

0
113

বাংলা খবর ডেস্ক:
মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ পড়ায় নওগাঁর ধামইরহাটে স্ট্রোক করে মারা গেছেন সাহার আলী নামের একজন মুক্তিযোদ্ধা। চলতি মাসের ৬ ফেব্রুয়ারি ধামইরহাট উপজেলার ৮৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়। প্রতিবেদন ফরমে কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর চলতি মাসের ২২ তারিখে দেখানো হলেও তা প্রকাশ করা হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। এতে ৫৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম বাতিল করা হয়। বাতিল তালিকায় নাম থাকায় কথা শুনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলী (৮০) স্ট্রোক করে মারা যান বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, পাঁচ মেয়ে এবং এক ছেলে রেখে গেছেন। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার গেজেট নম্বর-৩০৩৪।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) কর্তৃক গঠিত কমিটি বৃহস্পতিবার সকালে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নোটিশ বোর্ডে সাঁটানো হয়। এ তালিকায় সাক্ষী ও মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্য সঠিক নয়, তাই মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি ও সদস্যগণ কৃর্তক সর্বসম্মতিক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলীর নাম বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যাচাই বাছাই প্রতিবেদনে বাতিল তালিকায় নাম থাকার কথা শুনে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ট্রোক করে মারা যান সাহার আলী।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে ৪টায় দিকে সাহার আলীকে তার নিজ বাড়ি উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের নেউটা গোপাইডাঙ্গা গ্রামে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গণপতি রায়, ধামইরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবু তাহের, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফরমুদ হোসেন প্রমুখ।

সাহার আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার বাবা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু জামুকা কর্তৃক যাচাই বাছাই প্রতিবেদনে বাতিল তালিকায় নাম থাকার কথা শুনে আমার বোনের বাড়ী উপজেলা সাহাপুর গ্রামে সকাল ১১টার দিকে তিনি স্ট্রোক করে মারা যান।

উপজেলার যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফরমুদ হোসেন বলেন, ‘সাহার উদ্দীন ছিলেন একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তার নাম এভাবে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি তিনি সহ্য করতে পারেননি। একজন মুক্তিযোদ্ধার উপর এটি অবিচার বলে মনে করি।’

এ ব্যাপারে ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব গনপতি রায় বলেন, ‘যাচাই বাছাই প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে এ মৃত্যুর কোনো যোগসূত্র নেই। তিনি একজন বয়স্ক ব্যক্তি। অসুস্থতার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তা ছাড়া এটা প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে আপিল করার সুযোগ রয়েছে যারা প্রাথমিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলীর মৃত্যূর পর তাকে সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here