নাইমুল আজম খান:
ছোট বেলায় পড়েছিলাম”জোটে যদি মোটে একটি পয়সা খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি,জোটে যদি মোটে দুইটি তবে ফুল কিনিও হে অনুরাগী” । কবিতায় যাই লেখা হোক না কেন ফুল যে আমাদের মনোজাগতিক সত্তায় বিপুল বিস্তারে আছে, থাকবে এটা নিয়ে কোন সংশয় নেই। ফুল তার রূপ গন্ধ সৌরভ নিয়ে প্রতিনিয়ত আমোদিত করছে আমাদের, আমাদের চারপাশকে। তাই ” ফুল আপনার জন্য ফোঁটে না”।এমন তত্ত্ব প্রবাদ প্রতিম হয়ে গেলেও ফুলের এই নিজের জন্য না ফোঁটার তত্ত্ব আমার কাছে অনেকটা স্বার্থপরতার তত্ত্ব বলে মনে হয়। কারন এ তত্ত্বের সুত্রেই কেবল ফুল নয় সৃষ্টির অনেক কিছুই আমরা উপড়ে নিচ্ছি নিজের স্বার্থে নিজের প্রাপ্তির প্রগলভতায়। তারপরও ফুল ভালবাসে না এমন লোক দুনিয়ায় প্রায় বিরল।
স্বাধীনতা পূর্ব বাংলাদেশে ফুলের ব্যাবহার তেমন একটা ছিল না।দু চারটে বিশেষ অনুষ্ঠানে ফুল ব্যাবহৃত হতো। কিন্তু নব্বই দশকের শেষের দিকে আমাদেরঅর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে পাল্লা দিয়ে ফুল ও প্রসাধনীর ব্যাবহার ব্যাপকতা লাভ করেছে।সভা, সেমিনার,বিয়েসাদী, জন্মদিন ,মৃত্যু দিন বিভিন্ন দিবস পালন সহ প্রায় সব আনুষ্ঠানিকতা পালনের অপরিহার্য অনুসঙ্গ হচ্ছে ফুল। চাহিদার উল্লম্ফনের সঙ্গে এর বিপনন ব্যাবস্থায় এসেছে আধুনিকতা এবং অভিনবত্ব।নব্যধনীক শ্রেনীর চাহিদা পূরনে আজকাল ভারত ও চীন থেকে আমদানি হচ্ছে ফুল।আভ্যন্তরীন চাহিদা পূরনে সাভার এবং যশোরের গদখালিতেও বানিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদিত হচ্ছে ফুল। ফলে ফুল উৎপাদন ও বিপণন কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে কিছু মানুষের জীবন জীবিকার পথ ও। সম্প্রতি মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ এলাকায় আয়োজন করা হয় একশজাতের গোলাপ ফুলের প্রদর্শনী। ছবিগুলো রাশিয়ার লেলিনগ্রাদ এবং সেন্ট পিটার্সবার্গে তোলা।