৫৩টি অঞ্চলে ছড়িয়েছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

0
360

বাংলা খবর ডেস্ক:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট এখন কমপক্ষে ৫৩টি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আনুষ্ঠানিক সূত্র নন, এমন একটি সূত্র বলেছেন- ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বি.১.৬১৭ শনাক্ত করা হয়েছে আরো ৭টি অঞ্চলে। তাদের সাপ্তাহিক মহামারি বিষয়ক আপডেটে দেখা গেছে, এতে মোট ৬০টি অঞ্চলে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়েন্টটি ক্রমশ সংক্রমণ ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। তবে এতে আক্রান্ত ব্যক্তির রোগের ভয়াবহতা বা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে তদন্ত চলছে। উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে গত সপ্তাহে করোনায় নতুন করে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। গত সপ্তাহে মোট নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ লাখ মানুষ।
মারা গেছেন ৮৪ হাজার।

বৃটেনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট:

ওদিকে বৃটেনের করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন ও অধিক সংক্রামক একটি ভ্যারিয়েন্ট। পরিস্থিতি বিবেচনায় টিকার দ্বিতীয় ডোজ আরো দ্রুত দেওয়ার জন্য চাপ বাড়ছে বৃটিশ সরকারের উপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃটেনের পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে করোনা টিকা প্রদানের ঝুঁকি তুলে ধরছে। এ খবর দিয়েছে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।
খবরে বলা হয়, বৃটেনে দ্রুত ছড়াতে থাকা করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট বা প্রকরণ গত ডিসেম্বরে ভারতে প্রথম শনাক্ত হয়। নেপালসহ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন ঢেউয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে এই ভ্যারিয়েন্টটির। বর্তমানে বিশ্বের অন্তত ৪৯টি দেশে এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। বৃটেনে এর সংক্রমণ শুরুর পর বৃটিশ বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসের মোট সংক্রমণের অর্ধেক নতুন করে বিশ্লেষণ করছেন।
বি.১.৬১৭.২ নামে পরিচিত ভ্যারিয়েন্টটি আসন্ন শীতকালে বৃটেনে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী হতে পারে বলে প্রাথমিক বিশ্লেষণ শেষে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে এটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছড়ায়।
তবে এই ভ্যারিয়েন্টটির উৎপত্তি এমন সময় ঘটেছে যখন বৃটেন ও অন্য ধনী রাষ্ট্রগুলো টিকাদান কর্মসূচি অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গেছে।
ইংল্যান্ডে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে চার জনকেই টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। এতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তি হওয়া ও মৃত্যুর হার কমেছে।
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের নতুন এক গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে যে, যাদের টিকা নেওয়া শেষ হয়েছে, তারা নতুন এই ভ্যারিয়েন্টটি থেকে সুরক্ষিত।
উল্লেখ্য, ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকাটি ভারতে নতুন এই ভ্যারিয়েন্টটির বিরুদ্ধে ৮৮ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছিল। তবে বৃটেনের ক্ষেত্রে তা গড়ে ৯৩ শতাংশ কার্যকর বলে জানিয়েছে পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড। অন্যদিকে, অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকার টিকাটি ভারতে এই ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ৬০ শতাংশ ও বৃটেনে পাওয়া ভ্যারিয়েন্টটির বিরুদ্ধে ৬৬ শতাংশ কার্যকর।
তবে কিছু গবেষণায় ফাইজার ও এস্ট্রাজেনেকার টিকার কার্যকারিতার মধ্যে কোনো পার্থক্য পায়নি ইংল্যান্ডের গবেষকরা।
এখন অবধি ভারত থেকে উদ্ভূত করোনার ভ্যারিয়েন্টটি বৃটেনে বড় ধরনের ঢেউ সৃষ্টি করেনি। অনেক বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আদতে ভ্যারিয়েন্টটি যতটা সংক্রামক বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এটি অতটা সংক্রামক নয়।
ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা’র মলিকিউলার ইভ্যালিউশন বিষয়ক অধ্যাপক অ্যান্ড্রিও র্যা মবট বলেন, আসল পরীক্ষাটা হচ্ছে, এই ভ্যারিয়েন্টটি অন্যান্য দেশেও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়বে কিনা। যেসব দেশে ইতিমধ্যে অন্যান্য নানা ভ্যারিয়ৈন্ট নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।
বৃটেনে ভ্যারিয়েন্টটির দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পেছনে এটি সেখানে প্রথম যে জায়গা থেকে ছড়িয়েছে তা গুরুত্বপূর্ণ। ইংল্যান্ডের বল্টনে ভ্যারিয়েন্টটির দৌরাত্ম্য সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। ওই এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ। যার কারণে এর সংক্রমণের হার বেশি হতে পারে বলে জানান র্যা মবট।
গত ১১ই মে বৃটিশ সরকারের বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টামণ্ডলীদের একটি দল এক গবেষণা শেষে জানায়, নতুন ভ্যারিয়েন্টটির সংক্রমণ ক্ষমতা বেশকিছু মিশ্র প্যাটার্ন, নাকি সুপার-স্প্রেডিংয়ের জন্য হয়েছে তা জানা যায়নি।
তবে কয়েকদিন পর ওই গবেষকরা জানায়, তারা অনেকটাই নিশ্চিত যে, ভারতে শনাক্ত হওয়া ভ্যারিয়েন্টটি অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি সংক্রামক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here