বাংলা খবর ডেস্ক:
একই দিনে দুই মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইতালি ও আর্জেন্টিনা। গত ১১ জুলাই বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও স্বাগতিক ব্রাজিলকে হারিয়ে ২৮ বছর পর ঐতিহ্যবাহী কোপা আমেরিকার শিরাপা জয় করেছে সুপারস্টার লিওনেল মেসির দল আর্জেন্টিনা। আর লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ভাগ্যনির্ধারণী টাইব্রেকারে হারিয়ে ৫৩ বছর পর ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর ইউরোর সেরা হয়েছে ইতালি।
এখন দুই মহাদেশের চ্যাম্পিয়ন দলের মধ্যে একটি ‘সুপার কাপ’ ম্যাচ আয়োজনের চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানা গেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে। খেলাধুলা বিষয়ক আর্জেন্টাইন দৈনিক পত্রিকা দিয়ারো ওলের মতে, খুব শীঘ্রই ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও দক্ষিণ আমেরিকার সেরা দল আর্জেন্টিনার মধ্যে একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ইএসপিএনও এমন খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল নিয়ামক সংস্থা কনমেবল ও ইউরোপের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার মধ্যে কথাবার্তা অনেকদূর এগিয়েছে বলে জানা গেছে। প্রস্তাব এসেছে ম্যাচটার নাম ‘ম্যারাডোনা সুপার কাপ’ রাখারও।
প্রয়াত আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর দিয়াগো ম্যারাডোনার সঙ্গে ইতালিয়ান ফুটবলের গভীর সম্পর্ক ছিল। দেশটির ক্লাব নেপোলিতে খেলেই তার কিংবদন্তির পথে যাত্রা শুরু। যে কারণে ম্যারাডোনার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নেপলস ঐতিহাসিক এই লড়াইয়ের সাক্ষী হতে পারে। অর্থাৎ ম্যাচটি হতে যাচ্ছে ইতালির মাটিতে। অবশ্য ফুটবলের ব্যস্ত সূচী ও করোনার কথা মাথায় রেখে এই মুহূর্তেই ম্যাচটি আয়োজন নাও হতে পারে। তবে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের আগেই সুবিধাজনক কোনো সময়ে ম্যাচটি আয়োজনের পরিকল্পনা আছে বলে খবর রটেছে। আর্জেন্টিনা ও ইতালির মুখোমুখি হওয়ার খবরে ইতোমধ্যে চাঞ্চল্য শুরু হয়ে গেছে বিশ্বব্যাপী ক্রীড়াপ্রেমীদের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে দু’দলের ভক্তদের বেশ উচ্ছ¡াস প্রকাশ করতেও দেখা গেছে। অনেকে বলছেন, ম্যাচটি হলে দুই মহাদেশের ফুটবলের পার্থক্যটাও স্পষ্ট হবে। এবার একই সঙ্গে কোপা ও ইউরো হওয়ায় দুই মহাদেশের ফুটবলের মানের বিস্তর ফারাক দেখা গেছে। বিষয়টি যেমন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন তেমনি বুঝতে কষ্ট হয়নি সাধারণ ক্রীড়াপ্রেমীদের। অর্থাৎ গুণে ও মানে ইউরোপের ফুটবলের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল। যে কারণে ইতালি ও আর্জেন্টিনার লড়াই দেখতে মুখিয়ে আছে ক্রীড়াবিশ্ব।
এতদিন বিশ্বকাপ ছাড়া ফিফা কনফেডারেশন্স কাপেই কেবল অন্য মহাদেশের দলের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে বিলুপ্ত করা হয়েছে কনফেডারেশন্স কাপ। যে কারণে বিশ্বকাপের মহড়ায় আসরে আর খেলা হচ্ছে না সব কনফেডারেশনের সেরা দলগুলোর। আর তাই প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে সব মহাদেশ অথবা ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন দলের মুখোমুখি দ্বৈরথ আর উপভোগ করতে পারবেন না ফুটবলপ্রেমীরা। এই অভাব ঘোচানোর লক্ষ্যেই মূলত সুপার কাপ নামে ইউরোপ ও লাতিন চ্যাম্পিয়নের মধ্যে ম্যাচ আয়োজনের ভাবনা এসেছে। ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে এমন ম্যাচ হরহামেশাই হয়ে থাকে।
যেমন উয়েফার ক্লাব শ্রেষ্ঠত্বের দুই আসর চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ও ইউরোপা লীগের চ্যাম্পিয়ন দলের মধ্যে হয়ে থাকে উয়েফা সুপার কাপ। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লীগের লীগ ও কাপ বিজয়ীদের মধ্যেও হয়ে থাকে সুপার কাপ। এবার এই পথ ধরে হতে চলেছে লাতিন ও ইউরোপের সুপার কাপ।